আবদুস সালামের কবিতা

আবদুস সালামের কবিতা

অন্য উৎসব

সংবিধানের শ্বাসযন্ত্র ছিঁড়ে ঢুকে পড়ছে উন্মাদ ধোঁয়া
বিভেদের পাকদণ্ডী ঝড়ে বেসামাল মানুষ লুটেরার দল পেতেছে ধর্মের দোকান স্বার্থের নিকোটিনে মাতাল ভবিষ্যৎ অস্তিত্ব

ছিনিমিনি খেলছে রাজ ধর্মের পুরোহিত তাত্ত্বিক মানুষ চালছে পাশার ঘুটি
প্রতিবাদীর দল ভাঙচুর করছে হাসপাতাল
নির্যাতন গাঢ় হবে বলে বন্ধ ডাকছে দেশজুড়ে
পালিত হচ্ছে সংবিধানের দাহ উৎসব সস্তার ছেলেরা মজা করে আগুন দেয় বস্তিতে
মঞ্চে মঞ্চে ওড়ে বিজয় কেতন
রাতের বিপন্ন হাহাকার আর সভ্যতার অগ্নিস্রোতে ভেসে যাবে উৎসবের উঠোন
দৈনিক সমাচারের প্রচ্ছদ হবে দগ্ধ মানুষের হৃৎপিন্ড

নতুন বছরের গান

উঠোন জুড়ে পড়ে আছে সব নিরীহ অভ্যাস
সব ক্লান্তি ভুলে ওরা ও ঝিকমিক করছে দেখো
নতুন দিনের স্বপ্ন মেখে সূর্যটাও সেজেছে অপরূপ সাজে

চারিদিকে আর কোন আঁধার নেই

চলো সব সূর্যের কাছে বরণডালা সাজায়

ভেসে আসছে ভোরের আজান, ঘরেঘরে বেজে উঠছে শঙ্খ
চলো মসজিদে নামাজ পড়ে আর মন্দিরে পুজো দিয়ে বছরের প্রথম দিনের সিঁড়িতে পা রাখি

গান করি সবুজ পৃথিবীর

ওই দূরে ভেসে আসছে কবি গুরুর গান
“এসো হে বৈশাখ এসো এসো”…

জতুগৃহ

ঐ দেখ জল্লাদদের উৎসব
মাংস পোড়া গন্ধে মেশে রাত্রির নিস্তব্ধতা
নিমজ্জিত অন্ধকার
সজাগ দৃষ্টি নিয়ে শকুনেরা মহাভোজ সারে

রঙের হোলি খেলার দিন শেষ
রক্তের হোলি এখন বেশি পছন্দ
দগ্ধ শরীরের প্রর্দশনী চলে রাজনীতির মঞ্চে

নেতাদের চোখে ঝরে পড়ে কুম্ভীরাশ্রু
আগুন শিল্পের বাজার এখন রমরমা
গণতন্ত্রের রাঙা চোখ পাহারা দেয় তোলাবাজদের আখড়া
তাড়া করে উন্মত্ত শাসন

লকলক করছে শ্বাপদের অগ্নিজিহ্বা
নিদ্রাহীন রাতের নামকরণ করি দহনরাত

লেলিহান স্ফুলিঙ্গে দাউ দাউ করে জ্বলছে সংবিধান
মৃত বিবেক হাঁড়িয়া খেয়ে উৎসবে মাতে
প্রতিবাদের নামকরণ হয় জতুগৃহ

বিকল্প আমি

আমার প্রজন্ম আমার অস্তিত্ব ছিঁড়ে ফেলবে দেখে নিও�প্রতিদিন টুকরো টুকরো বেঁচে থাকা গুলো রক্তাক্ত হয়�নিহত জানলা দিয়ে ঢুকে পড়ে চাঁদের রোদ
সুখের রজনীতে ঘষাঘষি দুঃখগুলো বিস্ময় চিহ্ন আঁকে�কালের প্রবাহে সেঁকে নিই ভরসা�অন্তত না মরার তীব্র শোক এখন আর গ্রাস করেনা
বারান্দায় নেমে আসে নীরব ভাষার সংকেত�এভাবেই নীরব আকুতি গুলো বৃদ্ধাশ্রম এর বারান্দায় রঙিন হলে পরবর্তী প্রজন্মের আমিকে খুঁজে পাই

�অলক্ষুণে�
সম্পর্কের উঠোন আজ স্যাঁতস্যেঁতে�বিবর্ণ ঢেউ উঁকি মারে জলের ছায়ায় অসমতল স্নেহগুলো ভেজালের বারান্দায় সেঁকে নেয় ভরসা
সময়ের শ্যাওলা জমেছে নিস্তব্ধতার ঘাটে�পিচ্ছিল উপত্যকায় শুনি মৃত্যুর পদধ্বনি ব্যর্থ দহন চিত্র খুঁজে পায় খাজুরাহের গায়ে নৈরাশ্যের চরে বাসা বেঁধেছে ডাহুক
নৈঃশব্দের চিল উড়ে চলেছে স্যাঁতস্যাঁতে আকাশে�প্রচ্ছদহীন অলক্ষুণে বারান্দায় জমা হয় নৃশংস অন্ধকার