চ্যাটার্জী অমলের কবিতা

চ্যাটার্জী অমলের কবিতা

একটুকরো কাঁচ

দাঁড়ি নয় কমা নয় এবার যতিচিহ্ন দাও।
অপ্রিয় হলেও দিশাহীন গন্তব্যে ক্ষান্তি না দিলে,
দীর্ঘশ্বাসের বিষদাঁত মনের সবুজ প্রান্তজুড়ে
নেচে উঠবে একটুকরো কাঁচ হয়ে ।

অগোছালো গন্তব্যে হৃদয় ভেদ করা যায় না
কেননা হৃদয় সাগরের থেকেও অতল।
ভিখারির মতো অলি-গলিতে না ঘুরে
ভালোবাসার আগে বিশ্বাস কে নিখুঁত করো,
দেখবে রাত্রির কালো অন্ধকার বদলে গিয়ে…
গোলাপ হাতে দাঁড়িয়ে আছে নতুন সকাল।।


চিরসত্য

বহু সুখ,অ-সুখের সাক্ষী প্রবীণ ইতিহাসের শরীরে
বর্ণহীন সময়ের আনাগোনায় রঙ হয়েছে ক্ষয়াটে।

তোমার যত ফেলে যাওয়া দিনের পাতা ওল্টাতে
ওল্টাতে আঙুলগুলো যেন কারো দর্পের হুঙ্কারে
থেমে গেল , যেখানে নামের খুশিরঙের অক্ষরগুলো
এখনো পোকায় কাটেনি, দিব্যি তিল তিসি তামা নিয়ে
তারা সঙ্কল্প করে যায় কেড়ে নেয়া ভালোবাসার ।

সময়ের সাথে সাথে স্মৃতিগুলোর সব পাতা সব ফুল
একে একে ঝরে গেলো , কিছুতেই স্মরণ আসেনা
কখন কিভাবে হৃদয়ের মতো হাত বাড়িয়ে
পরিচয়পত্রে সই করেছিলাম , কখন কীভাবে
অষ্টদলপদ্মে প্রেমের ঘট বসিয়েছিলাম।

জীবনের এই মহাদৌড়ে প্রিয়জন থেকে প্রয়োজন
বড় বালাই, মুখোশের আড়ালে কত যে মুখোশ
বিষ গাছের চারা পোঁতে,স্বার্থের কুট কৌশলে কতো
জ্যান্ত সম্পর্ক কবরের নিচে প্রেমের কবিতা পড়ে ,
শত্রুর শত্রু আমার মিত্র এটাই চিরসত্য মেনে
কতো ভালোবাসা ফুলমালা গলায় টাঙানো থাকে
স্বার্থের দেওয়ালে।

প্রতারণা

বেশ ভালই ছিলাম অন্ধকারের আঙিনায় ,
নির্জনে অন্ধ অন্ধকারের মহাপ্রাচীরের সাথে
রাজতরঙ্গিনী অনুভবে উঠেছিলাম মেতে
কৈশোরের চঞ্চল নদী থেকে যৌবনের
গভীর বন্দরের আত্মকথায়।

কোনো কারণ নেই, হঠাৎ নিস্তব্ধ রাত্রির মতো
নীরবে আলোর তোপ দেগে আলোর জোয়ারে ভাসালে
অন্ধকারের শিরস্ত্রাণ। করো আনন্দ আয়োজনের
যাবতীয় কলা-কৌশল , কিন্তু জানবে, রহস্যময়ী
রাত্রির অহমে মাথা রেখে সমুদ্রের অবাধ্য ঢেউয়ের
মতো সে আসবেই পরম সত্যে।

প্রতারণার বুকে লাঙ্গল চালালে বেরিয়ে আসবে
ছদ্মবেশী মাধুর্যের নিঃশব্দ উপস্থিতি কিম্বা বেরিয়ে
আসবে গোলাপ ঢাকা বারুদের বিষদাঁত,
যেখানে চুরমার হয় বিশ্বাসের বিগ্ৰহ। ওহ মানুষ,
জীবনের লম্বা সুড়ঙ্গ পথে খেয়াল করলেই দেখা পাবে ,
যা দেখে শিউরে উঠবে তোমার রোজনামচা।