সামসুন্নাহার ফারুকের কবিতা

বৃষ্টির জলসায়
পরেছি রেশমী চুড়ি
কাঁকন কেউর আর
মেঘের নূপুর
বর্ষা এলেই বেজে ওঠে ওরা
প্রথম ভালোবাসার মতন
প্রমত্ত নদির মতন
কলোকলো
খলোখলো
হেসে ওঠে থমকে দাঁড়ায়
পরাবাস্তব অনুভূতিতে ভাবে
কে যেন কাছে টানে
দুহাত বাড়ায়
আকাশ তা জানে
বর্ষা এলেই বাষ্পীভূত মেঘেরা তাই
উপুড় করে দেয় জলের ওলান
মোহন কীর্তনে
বৃষ্টি নামলেই উলসি দৃষ্টিতে
থাকে প্রতীক্ষায়
ময়ূরী মনটা
আবারো উঠবে বেজে
আবারো নামবে মচ্ছব
বর্ষার জলসায় ।
আবারো হেমন্তে ফুটেছে ছাতিম
আবারো হেমন্ত
মাতাল গন্ধ নিয়ে ফুটেছে ছাতিম
সেজেছে মনোরঞ্জিকা
থোকায় থোকায় সুদর্শন মনিহারে
সম্মোহনী গুঞ্জরণে
আবারো এসেছে সে নিসর্গ বাসরে
মনে পড়ে গেল
ছাতিমের ছায়ায় মুখোমুখি বসে থাকা
সেই দিনগুলো
ছুটে গেলাম ঠিক সেইখানে
দারুণ শুভক্ষণের এক
অমৃতের সন্ধানে
যেখানে আমাদের দেখা হয়েছিল
যেখানে চোখে চোখ রেখে দুজনে
বলতে পারিনি ভালোবাসার কথা
ছাতিম গাছটা এখনো তেমনই
প্রাণবন্ত ফুলবতী
অজান্তে বেড়ে উঠা সদ্য যুবতী যেন
ছড়িয়ে চলেছে অপরূপ বিন্যাসে
দারুণ ঝাঁঝালো মহুয়া নির্য্যাস
আকাশে ঝুলে আছে
পূর্ণ চন্দ্রীমার চাঁদ
বিশ্বাস করো
আমি তোমার শরীরের গন্ধ পাচ্ছি
হাত বাড়িয়ে ছুঁতে যেতেই
শুনতে পেলাম দমকা বাতাস
হাসছে দাপটে
আমাকে রিডিকিউল করলো কি না
বুঝতে পারলাম না
বড্ড কষ্ট হলো
এই হেমন্তেও তোমার সাথে দেখা হলো না ।
যদি বলো ভালোবাসি
ভালোবাসার জমিনে শুধুমাত্র যদি
একটি বিশেষ নাম থাকে
নিদ্রাহীন রাতটাকে সুগন্ধী আয়োজনে
কেবলই মাতিয়ে রাখে
শরীরের মাধ্যাকর্ষনে সাঁতার কাটতে চায়
চোখের ভাষাতে উপুড় করে দেয়
সমূদয় ইচ্ছেগুলো
আমি তাকে ভালোবাসার কথা বলি
বারোয়াড়ি ভালোবাসায় বিশ্বাস নেই
যত্র তত্র মর্জি মাফিক তাই
হৃদয়টা পেতে দিতে পারি না
হাতটা শক্ত করে ধরে
যদি বলো ভালোবাসি
নোনাজল মুছে ফেলে মূহুর্তে
হতে পারি উর্বশী প্রেয়সী
হতে পারি পারসিয়ান পারফিউমের
মন মাতানো নির্যাস
কবোষ্ণ আদরে ভরে দিতে পারি
পৃথিবীর যাবতীয় সুখের নিবাস
বারোয়াড়ি ভালোবাসায়
আসলেই বিশ্বাস নেই ।