মৌসুমী ভৌমিকের কবিতা

অসহায়ত্ব
প্রত্যহ এই পথচলা যে পথেই হয়
মারণ থাবা সব জায়গায়
তোমাকে নিঃশেষ করে দিতে
তারা নাচে বাতাসে
চলছে হাজতবাস ঘরে ঘরে
ভালো নেই কেউ।
এসব অনেক দিনের কথা হয়ে গেছে।
সন্ধ্যার কিছু আগে শোকগ্রস্ত এক বৃদ্ধকে
বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছিলাম
অন্ধকারে দুফোঁটা চোখের জল পড়লেও
পড়বে না কারো নজরে
প্রিয়জন হারানোর কষ্ট বুকের ভেতর
একলা ঘরে আগুন জ্বালায়।
বেঁচে আছে আঁধো মরা হয়ে
ক্রমশঃ বাড়ছে শরীরের তাপ
কন্ঠনালী আসে চেপে
অস্থিরতা মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে
তবু নিজের ভেতরের তোলপাড়গুলি
পারে না বলতে কাউকে।
কতবার যাই যাই করে মন
এখন হৃৎপিন্ডের কাঁপুনিতে শরীরের
ভেতর কনকনে অনুভূতি খুটখুট করে
খারাপ বাতাসে ফুসফুস ভরে গেছে
মগজে শেষ কালো রাতে
আচমকা ছিঁড়ে যায় ভাবনার সুতা।
দাউ দাউ চিতা
সাদা ছাই হয়ে উড়ে যায়…
সাজানো মৃত্যুপথ
মেয়েটি হাঁটে আর দেখে,দেখে আর হাঁটে
চাঁদ হাটে তাঁর সাথে
চাঁদনী রাত আলোকিত করে রেখেছে পথ
সারা প্রকৃতি জুড়েই মায়াবী আলোর বন্যা
রাতের তারারাও খেলা করে আকাশে
দেখে দেখেই কেটে যায় কত রাত,
এখনো সে উদাসী মনে আকাশের কথা ভাবে…
যদি বাঁধন ছিড়ে চলে যায় সাদা মেঘ পার করে
খুশির আকাশে পালতোলা ভ্রমণে,
তবে রূপকথার গল্পের মতনই শোনাবে
তা না হয় হলো,তবু হে অনন্ত অসীম!
তুমি তাঁর কাঙ্খিত তারাটিকে চিনিয়ে দিও
আঙ্গুল ইশারায়,
সেখানে যে তার জীবন আছে!
দিশারী
জীবন মোমবাতি হয়ে
দিব্যি জ্বলছিল
হঠাৎ দমকা হাওয়া
সাতপাঁচ মিলে কাটাকুটি খেলা।
সামনে মৃত্যুকবলিত দ্বার
কান্নার দমক উঠছে বাতাসে
কী যেন পোড়া গন্ধও ভাসছে
চারিদিকে থমথমে ভাব।
যে কটা মাস হলো তারা গেল
নিশ্চিত পৌঁছে গেছে তারার দেশে
বাদবাকী সময় যে জীবনযাপন
সে যাপনে নতজানু সময়।
সন্ধ্যার আকাশে চাঁদ ও শুকতারা
মুখোমুখি বসে আলো জ্বেলেছে
লক্ষ তারার আলোও জ্বলছে
যত রাত তত আলোর প্রতীক্ষা।