গোলাম কিবরিয়া পিনু’র কবিতা

নতুন বাবুর্চি
নতুন বাবুর্চি ও বামন মিলে
যে রান্নাবান্না করছে,
তা আর মুখে তোলা যাচ্ছে না!
ছুঁচোও তা খাচ্ছে না!
আমাদের এক এক করে
সে–সব গেলাতে চাচ্ছে!
তারা খাদ্যরুচি কোথায় নিয়ে যাচ্ছে?
বামনের সঙ্গে নতুন বাবুর্চিরা এককাট্টা হয়ে
হাত দিয়ে চাঁদও ধরতে চাইছে,
তা তারা ধরতে থাকুক!
কিন্তু যা তা রান্না মানুষ এখন মুখে তুলছে না!
বারোভূঁইয়াদের বারোয়ারি খেলা মানুষ দেখেছে!
বাইরে কোঁচার পত্তন ভেতরে ছুঁচোর কেত্তন,
কেউ আর এখন শুনতে চায় না!
পিঠাপিঠি ভাই
পিঠ বাঁচিয়ে চলা যাচ্ছে না!
পিঠে চাবুক পড়ছে,
তাও কিছু বলছি না!
কালো বিড়াল পায়ের কাছে এসে
কামড় বসাচ্ছে,
তবু কিছইু করছি না!
পিঁপড়ে কামড় বসিয়ে দিয়ে
আরও পিঁপড়ে ডেকে আনছে,
তাতেও নড়াচড়া নেই!
পোশাক টেনে ছিঁড়ে ফেলছে,
কত সময়ে নিরাবরণ থাকবে?
সহ্যশক্তির মাত্রা থাকা দরকার,
না হলে সহনশীলতা হিমালয়ের
অনড় পাথর বানিয়ে ফেলবে!
কুইনাইন খাওয়ার খেয়েও––
কুঁচকে যাবে–কুঁকড়ে যাবে!
তখন অন্তর্গত অন্তরও মরে যাবে!
শুধু বশীভূত হবে? বশীকরণের সময়ে?
অঙ্গার হওয়ার সময়েও অঙ্গুলি নড়াবে না!
পিঠ বাঁচিয়ে যে–জন চলছে!
তুমি কি তার পিঠাপিঠি ভাই?
চরিত্র
যার চরিত্র তুমি হনন করলে–
তার সেই চরিত্রে তুমি ফুটে উঠছো!
একই চিত্তবিভ্রম ও চিত্তদোষ নিয়ে
তুমিও তো তার মতো
চিৎ হয়ে চিতই পিঠা খাচ্ছো,
চিত্ত দমন করতে পারছো না!
চতুর, পট্টিবাজ, ধূর্ত ও ফেরেরবাজের মতন
তুমিও মোহ, লোভ, ক্রোধ ও মাৎসর্য নিয়ে,
সেই একই চরিত্রে ফুটে উঠছো।
কার চরিত্র পাল্টাতে বলছো?
কার চরিত্র বাতিল করছো?
তোমার স্বভাবধর্ম কী?
তোমার কি কোনো আত্মসমীক্ষা আছে?
জোচ্চোর, প্রবঞ্চক ও তক্ষকের মতন
তুমিও দুরন্ত হয়ে উঠছো!
একই ঘরের জামাই হয়ে
একই জামরুল মুখে তুলে নিচ্ছো!
কার চরিত্র খারিজ করবে?
কার চরিত্রে কার চরিত্র ফুটে উঠছে?
আত্মদর্শন না থাকলে
স্বভাবগুণে ঘুণ ধরতে থাকে!
তখন আর চরিত্র বদলিয়ে কোনো লাভ নেই!
ও স্কুলের ছাত্ররা
ও স্কুলের কেউ পরীক্ষায় পাশ করতে পারল না!
স্কুলটা এত জাকজমকভাবে উদ্বোধন হলো,
এত সাজগোছ!
শ্রেণীকক্ষ এত ফিটফাট!
শিক্ষাবর্ষ শেষ করার পর––
পরীক্ষার হলে গিয়ে বসে
একেকজন পরীক্ষা দিল,
পরীক্ষায় সসম্মানে কেউ উত্তীর্ণ হতে পারল না!
সবাই প্রায় সব বিষয়ে ফেল করে বসল
গ্রেস দিয়েও পাশ করানো গেল না!
দশের উপরে কোনো বিষয়ে কেউ নম্বর পেল না!
কত কোচিং কত বিশেষ ক্লাস ও সুযোগ,
কোনো কাজেই লাগল না!
মাথা ও মুণ্ডু কীযে লিখল ওরা খাতা ভরে?
ও স্কুলের ছাত্ররা কি মধুনিশিতে মল্লিকাবনে
শুধু মধু পান করে সময় কাটালো?
রাগ করে শুধু রাঙা হলে––
নিজের রাগিণী নিজের জীবন–তন্ত্রীতে,
বাজানো যায় না!
রোদন করলেই শুধু চলে না–
রোদ গায়ে লাগিয়ে নিজের জমিতে
বীজ রোপণ করতে হয়!
শুধু হইচই করে পরীক্ষার হলে গিয়ে বসে
পরীক্ষায় পাস করা যায় না!
ঠান্ডা মাথায় মাথা গুঁজে পরীক্ষা দিতে হয়,
মাথায় কিছু থাকতে হয়!
এমাথা ওমাথা লাফালে শুধু চলে না!
ও স্কুলের ছাত্রদের নিয়ে
স্তুতিবাদ আর এখন চলে না!
ওরা ফেল করে আর রেল ধরতে পারছে না!