পল্লব রায়ের কবিতা

পল্লব রায়ের কবিতা

তু‌মি ভা‌লোবা‌সি বল‌লেই

তু‌মি ভা‌লোবা‌সি বল‌লেই-
তোমার কাঁচ‌লের ভা‌জে লুকা‌নো মরুপ্রান্ত‌রে
লি‌খে দি‌তে পা‌রি,
এক বহতা নদীর আত্মজীবনী।
তু‌মি ভা‌লোবা‌সি বল‌লেই-
প্রা‌গৈ‌তিহা‌সিক অন্ধকার ‌ছে‌নে তু‌লে আন‌তে পা‌রি
নবজ‌ন্মের প্রত‌্যয়,
তু‌লে আন‌তে পা‌রি মৃতসঞ্জীবনী!
‌তোমার জঙ্ঘায় ফোটা‌তে পা‌রি
প‌লিমা‌টির ঘ্রাণ,
দে‌হের বতরকা‌লে ফস‌লের ক্ষে‌তের ম‌তো
আবাদ কর‌তে পা‌রি তোমাকে,
দীর্ঘ থে‌কে আরও দীর্ঘতর ক‌রে দি‌তে পা‌রি;
মিল‌নের পঙ‌ক্তিমালায় গ্রন্থিত রাতের আখ‌্যান!
তোমার চোখ ভ‌রে দি‌তে পা‌রি আ‌লোয়-
তোমার বুক ভ‌রে দি‌তে পা‌রি দুরন্ত আগু‌নের স্নান!

মরুফুল

নবজন্মের বীজ মুঠোয় নিয়ে ঘুরছি-
এক খণ্ড উর্বর জমিন
আর এক আজলা জলের অন্বেষণে!
বহুকোটি বছরের পুঞ্জিত পিপাসা বুকে নিয়ে
যতবার ঠোঁট পেতেছি আকাশে
দুচোখে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে একটি কবর।
কক্ষপথ চ্যুত নক্ষত্রের আলোয় সাঁতার কাটছি
সম্পর্কের নাটাই গুটিয়ে নিয়ে একে একে চলে গেছে সকলে
যারা মুঠো শক্ত করে কথা দিয়েছিল
আমৃত্যু থেকে যাবে বলে!
লাঙলের তীক্ষ্ণ ফলায়-
এ শূন্যতার পাথর ভেঙে,
যতবার আমি রোপন করেছি জীবনের ভ্রূণ
ততবার, কেবলি অন্ধকার গভীরে ছুঁয়েছে আরও!
কতক্ষণ আর এভাবে ভেসে থাকা যায়-
শুধু নিজেকেই সম্বল করে;
হতাশার রোদে পুড়ে যাচ্ছে এক একটা ঝকঝকে দিন
আমিও মাছের মতো খাবি খেতে খেতে হাতড়ে ফিরছি
প্রথম সূর্য ওঠার মুহূর্তগুলো,
পকেটে নিয়ে ঘুরছি দুঃসময়
এই অন্ধকারমগ্ন নগ্নতায়, বেদনার শিশির জলে;
একজন ঈশ্বর জন্ম দেবো বলে!

অশ্লীল উপখ্যান

তোমার বুকের মাটিতে চাষবাস
তোমার মাঠেই লাঙল-জোয়াল কাঁধে,
তোমার গোঠেই চরাই শখের ধেনু
জল পিপাসায় চুমুক মারি চাঁদে!

চাঁদ সে তো নয় তোমার খোলা বুক
ঢালছে দুধেল জ্যোৎন্সা অঝর ধারায়,
একটা পাখি আঁকছে অসীমতা
আঁকছে আকাশ তোমার চোখের তারায়।

চোখ সে তো নয় অলীক ইন্দ্রপুরী
আন্ধারে ঘোর সূর্য উঠার গান,
ঠোঁটের কোণায় এক চিলতে হাসি
ছড়ায় প্রাণে নবান্নের আখ্যান!

ঠোঁট সে তো নয় কামুক নর্তকী
তুলছে দেহে নাচের তুফান-ঝড়,
খুলছে দোকান রসের ষোলকলা
দানছে তুখোড় অশ্লীলতার বর!