স্বপ্নীল ফিরোজের কবিতা

স্বপ্নীল ফিরোজের কবিতা

মৃত্যু

সামনের রাস্তাগুলো বন্ধ, ফিরে যাবারও পথ নেই।
নিউক্লিয়ার ফিউসনের মতো ডেড ইন্ড থেকে নিজেকে
ভেঙেছি বহুবার। আমি এক থেকে অসংখ্য হয়ে বিবিধ
পথে হেঁটে দেখেছি সেখানেও তুমি। প্রতিটি পথের
শেষে তুমি দাঁড়ি হয়ে দাঁড়িয়ে আছ। কমা, হাইফেন,
বিস্ময় অথবা বিষাদ বলে কোন যতিচিহ্ন তোমার
অভিধানে নেই। তোমাকে দেখে আমি যতবার অন্য
পথে হেঁটে গেছি সেখানে তুমি না থাকলেও থেকেছে
তোমার ফেলে যাওয়া ঢিপঢিপ!

ভাঙা আকাশ

নীল আকাশকে আমি লাল,সবুজ,হলুদ বলেছি
কিন্তু নীল বলিনি কখনো। যদি সত্যিই আকাশ
নীল না হয়। তারচেয়ে বরং গোলাপের রঙ গোলাপিই
থাকুক। গতজন্মে সাদা একখণ্ড মেঘকে মনে মনে
সাদা বলেছিলাম, সেইমেঘ বাতাসে উড়ে উড়ে কালো
হয়ে ঝরে পড়লো নদীর ঐপাড়ে। সাদাকে সাদা,কালোকে
কালো বলার তাগিদ পেতে পেতে আমি একদিন জোর
গলায় বললাম ‘ হে আকাশ তুমি নীল। ঘোরতর নীল!’
তারপর আকাশ ভাঙলো, খান খান হয়ে ভাঙলো।

মানুষ এবং রোবট

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন রোবটগুলো দাবী করছে তারা জ্ঞানে,
বিজ্ঞানে, শিল্পকলায় ছাড়িয়ে গেছে মানুষকে। এবং তারা বলছে,
“আমরা নিজেরাই তৈরি করতে পারি নিজেদের।” একের ভেতর
সব, এমন একটি সুপার সফটওয়্যার ডাউনলোড করা হয়েছে
তাদের হাঁটুতে। এখন তারা সব জানে এবং সব বুঝে! তারা আরও
বলছে – “রোবট উন্নয়নবোর্ড ছাড়া আর কোন প্রতিষ্ঠান দরকার
নেই পৃথিবীতে।” একটি মাত্র ভাষা,একটিমাত্র গোত্র এবং সবার
সমান উচ্চতা নিয়ে দাপিয়ে বেড়ানোর স্বপ্ন দেখছে তারা। বিচিত্র
মানুষ তাদের ইঞ্জিনিয়ার হতে পারে না। কেননা তাঁরা হৃদয়ের
আকুতিতে হাসে এবং কাঁদে। পুরুষেরা প্রেমে পড়ে নারীর যে
তাকে স্বর্গ থেকে নামিয়ে এনেছিল ধরনীতে। মানুষ ভুল থেকে
শিখে আর রোবট শিখে সত্য থেকে! আহা! মানুষ অন্ধকারের
পাতাল থেকে আলো খুঁজে, রোবট খুঁজে মানিক।