রীনা তালুকদারের কবিতা

রীনা তালুকদারের কবিতা

এসো যৌখ প্রলয়ে প্রণয় জাগিয়ে রাখি

এই তো সেদিন ছিলে উন্মাতাল বেদিশা
রাতদিন একাকার করে খুঁজেছো

প্রতি ফোনকলে যেনো টর্নেডো টর্নেডো চাওয়া
বেগতিক হয়ে কেবল তোমার কথামালায়
ডুবে গেছি আপাদশরীরে
ক্ষনেক হাসি ক্ষনেক খুনসুটি
বুঝে না বুঝে কেবল গেয়ে যাই
তুমিময় তোতার গান

দূর দূরত্বে এনড্রয়েড সুদূরের অদূরে
তোমাকে বুকের কাছে জড়িয়ে রাখে
সেদিনওতো গলাগলিতে জড়িয়ে ছিলে
যত গভীর রাত ততো আবেগে
আমাকে বেঁধে রেখেছো পাজরে
যত সহজিয়া গাঁথার মালা দিয়েছ
উতল হৃদয়ের অবুঝ কোণে

হঠাৎ হেসে ওঠে হঠাৎ নীরবতা
দ্যাখো ওই শিমুলের ডালে ডালে
লালে লাল খুন রাঙা ফাগুন
অস্থির আগুন হাওয়ার বিস্তর বাড়াবাড়ি
জাগো আগুনের শিখায়
জাগো বাসন্তিক আহবানে
জাগিয়ে রাখো সমস্ত নাড়ার আগুনে !

এখনো পাগলা বসন্তের
দোপাট্টা উড়ানোর বয়স পেরোয়নি
তুমিময় কৃষ্ণচূড়ায় মুগ্ধ দু’চোখ
বসন্ত আবীরে বুকের কন্দরে ঝড় তুলে
দুমড়ে মুচড়ে কৃষ্ণ কূলে আসো

এসো যৌখ প্রলয়ে প্রণয় জাগিয়ে রাখি।

চোর -পুলিশের কুমির- ডাঙ্গা

মণিপ্রভার মুগ্ধতা যায়নি এখনো
আজন্ম ঘোর লেগে আছে রেটিনার চৌহদ্দিতে
যতই দেখি দেখার ইচ্ছে ততোধিক
যে আদর মনকে স্পর্শ করে না
সে আদর ছোঁয় না সহজিয়া দেহ

ছোট বেলায় বৃষ্টির দিনে
ঘরবন্দী সময়টা কাটাতে
কয়েকজন মিলে কাগজের
ছোট্ট ছোট্ট টুকরো করে
চোর -পুলিশ খেলাটা হামেশাই পরিচিত
যে চোর লেখাটা পেতো
তার পিঠে ধুমাধুম শণির রাহু আরকি

যৌথ জীবনের পরিপূর্ণ বসন্তকাল
পলাশের বনে বনে আগুন খেলা
ভরা পূর্ণিমার টইটুম্বর রাগে
রাতের জলে ভালবাসার নীল মাখা
আদরে কদরে অন্দরে বন্দরে
মন্থনে ম্যাপল বৃক্ষের শৃঙ্ঘারে
রসের হাড়ি পাতা দিনরাত একাকার

বিপত্তিশূন্য সত্ত্বেও হঠাৎ
তৃতীয়পক্ষের প্রবেশ যৌখ খামারে
শুরু হলো কিশোরকালের
চোর -পুলিশের কুমির- ডাঙ্গা
রোজ রোজ কানামাছি প্র্যাকটিস হচ্ছে !

শূন্যগর্ভ অপূর্ণ হাহাকার নির্বাক্য
অব্যবহিত …কে জানে… কে-ই জানে !!

এমন ফাগুন দিনে চলে যাচ্ছি

এমন ফাগুন দিনে চলে যাচ্ছি
প্রিয় জন্মভূমি শ্যামল প্রকৃতির সবুজের ঘ্রাণ
ওই আলপথ, নাঙা পা শিশিরের জড়ানো আদর রেখে
বাবুই, শালিকের দেশ থেকে
বর্ষার আগেই কারিগর বাবুইর সেই বুনিয়াদি দিন
আহা আমাদের এমন ঘর বোনা স্বপ্নাতীত
বলেছিলে মুক্তি মিলবে; মিলেনি
স্বাধীন তবুও ঘরবন্ধী বাতাসে রুদ্ধশ্বাস
বাতাসে বাতাসে শরীর থেকে শরীর ছুঁয়ে যাওয়া
শুধুই খুনসুটি, শুধুই খুনসুটির কথপোকথন ;
খুনসুটিতেই অস্থির আগুন –
জ্বলে ওঠে বাগান বাড়ি জুড়ে
চারিদিকে শিমুলের নিলাজ উদ্যতপনা
পুড়ছে ষার্ট ছোঁয়া শাড়ীর ভাঁজ
বাহুর ভাঁজে লুকানো অবাধ্য শিহরণ
এন্ড্রয়েডের ম্যাসেঞ্জার কথা বলে ওঠে একাকী সময়ে
একটা দ্বিধান্বিত ঘূর্নির ঝাপটা-
পাজরের নারঙ্গী রোদ নেভানোর প্রচেষ্টায় …
তবুও অদম্য মন মানেনা কোনো বেরিকেট
ও মুখের কথা শুনতে উন্মুখ ইন্দ্রিয়
আহা চারিদিকে এত এত শিমুলের লাল গালিচা
আমরা কেবল অদেখা দুই মেরুর শূন্যতা
ভাল থেকো বন্ধু আমার ; খুব ভাল থেকো …
একদিন দেখা হবে বুকের সাথে বুক মিলিয়ে
যত না দেখার দুঃখ, যত অতৃপ্তির হাঁসফাঁস
চোখ জুড়ানো দেখা মিটিয়ে নেব একদিন
বেশ করে কার্তিকের তৃপ্তির চুমুতে –
আশরীর অবগাহন করে নেব দুজনে
সেই অপেক্ষায় আজীবন …
খোলা জানালার ধারের পথটা আগলে আছি …