মেহেদী ইকবালের কবিতা
গাজর
হালুয়া পছন্দ নয়
তবে কাঁচা খেতে ভালো লাগে
কচ্ কচ্
বেটা ক্যারোটিন
ততটা সে নয়
যতটা কোমল ভেবেছি তাকে!
দেওয়ালের ওপাশে
নীল একটা মাঠ শুয়ে আছে
আর একটা নীল ঘোড়া
খুরের বদলে তার পা হাঁসের মতো!
রসুন
দেখছি লিকারের রঙ আর ধোঁয়া
বিকারগ্রস্ত হলে বিপদজনক ভাষা আর ব্যাকরণ
কিছু প্রশস্তি আর বিষোদগার
রসুনের কোয়াগুলো একইরকম
আর তাদের গোড়া।
হিসাব কিন্তু সোজা
দুনিয়ায় মার খাবে আর বিপন্ন হবে শুধু গরীবেরা!
আনারস
আগামীকাল বলে কিছু নেই
আজ মানে আগামীকাল
গতকাল কেউ বলেছে আগামীকালের কথা
আগামীকাল বলে কিছু নেই
আজ মানে আগামীকাল
আগামীকালের জন্য তোলা থাকে কিছু স্বপ্ন
কেউ আনারস খেতে চেয়েছিলো
অনেকগুলো চোখ নিয়ে আনারস
আনারস, তুমি এতো মিষ্টি কেন?
আগামীকাল বলে কিছু নেই
কে কবে দেখেছে আগামীকাল?
আগামীকাল মানে আনারস
আকাশ ভর্তি এতো মেঘ এতো মেঘ আর বৃষ্টি
বৃষ্টি, তুমি এতো আহলাদী কেন?
এখন একটা রাত মানে আজকের রাত
গতকাল কেউ বলেছে এই রাতের কথা
আমি দরোজায় কড়া নাড়ছি কড়া নাড়ছি
ভেতরে শব্দ হচ্ছে
ভেতরে কেউ আনারস খাচ্ছে
আমি কড়া নাড়ছি কড়া নাড়ছি আমি কড়া নেড়েই যাচ্ছি
দরোজা কেউ খুলছে না কেন?
মাকাল
খাদ্য নও জেনে অপাংক্তেয় সৌন্দর্য তোমার
মুগ্ধ দৃষ্টির আড়ালে
সবাই কি দেখতে পায় বিরতিহীন লালাঝরা?
তোমার আশ্চর্য আভা আর লুকোনো বেদনার হাসি
আর যখন তুমি শুনতে পাও পাখিদের আনন্দ কোরাস
নদীর জল ছুঁয়ে ছুটে আসা হাওয়ার শিশুরা
কী মধুর ছন্দে যায় শোনা কোলাহল পাতাদের!
তখন তুমি ভুলে যাও অবহেলা অনাদর যত
জানি তুমি গর্বিত
যাপিত জীবন নিয়ে তোমার! কেননা
স্বার্থপর আর লোভী
কামুক আর কদর্য
মানুষের হাতে
কখনও ব্যবহৃত হওনি তুমি!
ডালিম
একজোড়া মাছের চোখ
লাল কানকোর ফাঁদে মর্গের টেবিল
জলে ফিরে যায় পুচ্ছ আহ্লাদী!
নিকটে নীল ঘোড়া
দেয়াল টপকে এলো বুঝি অসহ্য বেড়াল!
ঈশ্বর কেন আমাদের দুধ খেতে শিখিয়েছে?
ফেটে যাওয়া একটা ডালিম
কোয়াগুলো কত না সুন্দর!