মশিউর রহমানের কবিতা

ইতিহাস খেকো সরীসৃপ
মস্তিষ্কের দরজায় অনবরত খটখট যাপিত শব্দ
মনের ঘরে উঁকি দিচ্ছে সন্ধ্যা তারা
বিজলী বাতির আলো সদা মোহ ব্যস্ত রাখে
ভুলে দেয় কেউ অপেক্ষায় আছে।
আকাশের সীমানায় সাদা রাস্তা বরাবর
আমি হাটি, আমি ছুটি, আমি উড়ি।
আকাশের কপালে চাঁদের টিপ আলো ছড়ায়
বারবার পথভ্রষ্ট করে ইতিহাস খেকো সরীসৃপ
ছায়ার হয়ে একে বেঁকে চলছে অনন্তকাল।
পাঁজরের হাড়ে প্রেম লাগে ঘর্ষণ আর প্রেষণ
ভালোবাসায় কুটকুট করে নীরবে উইপোকারা।
মনের কোন সীমানা নাই, চোখের বিরাম নাই
ওঁত পেতে বসে থাকে শিকারী ভবিষ্যতের আশা
হঠাৎ স্নিগ্ধ সুবাস ভেসে আসে
চঞ্চল হলে উল্টো ধরা পড়ে লোভের ফাঁদে।
কোন এক মজলিসে আহত হয়েছিল অলস দুপুর
কেঁদে কেঁদে বুক ভাসায় আসমানের মেঘ
তাতে সুর মিলায় বেহিসেবী ঝড়ো বাতাস
তাতে উল্লাসিত সন্ধ্যার আধাঁরে ব্যাঙের মিছিল।
আমি হাসি আমি কাঁদি
আয়নায় দেখি অগণিত মানুষ
অপেক্ষায় একজনের তর্জনী কথা বলে
কংক্রিটের থামের গলায় জড়ানো সভ্যতার তারবার্তা
আকাঁ বাঁকা পথ দুই ধারে ডিম পাড়ে
ডিমের ভিতরে জগত
সে জগত থেকে বেড়িয়ে আসে এক একটা দিন
দিনগুলো ঝিমায় চৈতালি হাওয়ায়।
উপুড় হয়ে থাকে টেবিল জ্ঞানের ভারে
সবুজ বাগিচা আঁকে মনের মাঝে জলন্ত মোমবাতি
লোনা জলে ফুটে ওঠে চাঁদের রূপালী হাসি
চুরি হয়ে যায়, আমি হাসি আমি কাঁদি।
আমি ভেসে বেড়াই
সকল চতুষ্পদী জন্তুরা দুপেয়ে হয়ে গেলে
পৃথিবীর দখলদারীত্ব চায়
আমাকে পৃথিবীর জমিন ছাড়তে হয়
পাখির মতো আসমানে ভাসে ভেসে চলতে হয়।
আমি ভেসে ভেসে দেখি পৃথিবীর রূপ সৌন্দর্য।
আমিও আগে চতুষ্পদী ছিলাম, ঘুরতাম বনেবাদাড়ে
তারপর দুপেয়ে হয়ে সৃষ্টি করেছি লোকালয়,
সৃষ্টি করেছি সভ্যতা শাসন করেছি যথা সাধ্য প্রকৃতি
কিন্তু আমার স্বভাব চরিত্র চতুষ্পদী।
এখন আসমানে আবাস গড়ি ভেসে ভেসে চলাচল করি
একদিন পৃথিবীর জমিনে ভুলে ফিরে এসে দেখি,
একতারা বাজায় কুকুর আর শোনে শিয়াল
বাঘ করে রাজত্ব আর হরিণ পাশে বসে থাকে।
একসময় আমিও চতুস্পদী ছিলাম
এখন আমি পাখির মতো উড়ে বেড়াই
তবে আমার পা নাই হাত নাই আছে শুধু মস্তিস্ক
বাবলের মতো আসমানে আমি ভেসে ভেসে বেড়াই…