রাজেশ কান্তি দাশের কবিতা

রাজেশ কান্তি দাশের কবিতা

অপরাজিত রাত

আজ এ রাত উষ্ণ ও বসন্তের রাত
সুখ ও স্মৃতির রাত;
আমাদের ভালোবাসার কান্তিকে ফুলের ঢালায় বরণ করার মতো রাত।
ভালোবাসার কার্নিশে স্মৃতিজাগরিত থাকুক এ রাত।
বকুল ফুলের সুরভিতে নব ভালোবাসায় অপরাজিত থাকুক এ রাত।

বাইরে বৃষ্টি পড়ছে মেদুল, নিঝুম বৃষ্টি
হিমেল হাওয়ায় প্রকৃতি নিস্তরঙ্গ, নীরব;
বৃষ্টির শব্দ রাত্রির স্নিগ্ধ শরীরে মিশে আমার প্রাণে ফাগুনের শিহরন জাগায়—
মনে বসন্তের শিহরন জাগায়।

এ রাতটি খুব গভীর অতল সমুদ্রের মতো
আর এ রাতেই প্রত্যাশিত গোলাপটি ফুটেছে তোমার বুকে;
ছড়িয়েছে ভালোবাসার সুবাস
প্রকৃত প্রেমিকই জানে ভালোবাসার অধর ছুঁতে, প্রেম তো নয় কোনো ছাইপাঁশ।

গোলাপের জল

ষড়যন্ত্র, ছলনা, মায়া
তোমার বিরাগেই আছে অনুরাগে নেই।
তোমার ভালোবাসায় নেই।

প্রকৃত ভালোবাসা ঠোঁটের বিলাপ করে না, গোলাপের সুবাস খোঁজে।
অনেকটা প্লেটোনিক প্রেমের মতো।

কত চোখ মুদে ভেবেছি তোমায়—
রৌদ্রস্নাত গনগনে চৈত্রে, শীতের গাঢ় নিশীথে শরাবের গেলাস হাতে;
গন্ডগ্রামের মেঠো পথ হেঁটে হেঁটে সবুজ পাহাড়ের পাদদেশে
আর বসন্ত বিকেলে নীল আকাশের নাীচে।

দেখেছি শুধু তোমার অনুরাগ ভরা প্রেম
আর নিষ্কলুষ চোখের ভাষা।
এ ভাষা যেন
আমার বোবা বুকে জমানো অযুত না বলা কথার ফোঁটা ফোঁটা অশ্রুয় ভরা
যা তোমার কাছে পৌঁছার ব্যাকুলতায় নিবেদিত ।

তোমার প্রেমে কোনো ভয়, উৎকণ্ঠা, বিষাদ নেই
আছে পুলক, সুখ, আনন্দ, প্রভা;
এই পুলক, সুখ, আনন্দ গোলাপ ধুয়া জলের মতো স্বচ্ছ
পলে অনুপলে শুভ্রতার ঘ্রাণ উড়ায়, স্নিগ্ধতার ঢেউ ছড়ায়।
তোমাতেই হতে পারে আমার মতো ভ্রষ্ট প্রেমিকের সুখ নিবাস
যেখানে জীবন প্রেমে মিশে যায়।

তোমার সৌন্দর্য কল্লোল

তোমার উষ্ণ ভালোবাসায় গলে যায় আমার পাষাণ হৃদয়।
জাগ্রত হয় মায়া কল্লোল,
মৃত্যুহীন, ভয়হীন, প্রাচীরভেদী বিজয়ী তেজ।

কী রঙ তোমার রূপে!
আমার হৃদয়ে উষার ঝরনা ঝরায়।
পাথর গলা হৃদয় প্লাবিত সেই রূপ
ভালোবাসার শ্বেত পাথরে নব-নতুন প্রাণের সৌধ গড়ে।

আমি ভাগ্যবান বলেই সরসিজ হয়ে ফুটেছিলে তুমি
সরোবরে পেয়েছি তোমার সংসর্গ
আমার মনে গড়ে উঠেছে ভালোবাসার এক খন্ড আলোর আনন্দশালা
সেই আনন্দশালায় কবিতা, আবৃত্তি, গান, নৃত্য নিশিদিন গমগম করে
শিল্পের এই সৌন্দর্য কল্লোল উদ্ভাসিত করে আমার জীবনের খেয়া।

দুটি হৃদয়-জীবনই এক হয়ে যায় বসন্তের নিশুতি রাতে
কিশলয় আকাশে ঝলমল করে স্ফটিকের মতো নক্ষত্র।
বাসন্তী হাওয়া অভিমান ছেড়ে পাশে বসে
গেয়ে যায় বাসন্তী গান সকাল-সাঁঝে অনন্ত আকাশে।
ফাগুনের এই বাসন্তী গান-সুর, তার রঙ;
আকাশ, বাতাসের পাশাপাশি জলের, রোদের মনে উপমনে ধ্বনিত হয়।