অসিকার রহমানের কবিতা

অসিকার রহমানের কবিতা

কবিতার ভাষা

কিছু কিছু কবিতার ভাষা গান গায়
কেউ বোঝে কেউ বোঝে না
কবিতা বর্ষায় ময়ূর নাচায়
একই কবিতার ভাষা বসন্তে
বিরহীর সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়

বিরহী ক্রোঞ্চীর মত কবিতার ভাষা
বিরহী পৃথিবীর মত কবিতার ভাষা
এসব ভাষা কি ঈশ্বর বোঝেন
কেউ বোঝে বা কিছু ভাষা

কিছু কিছু কবিতার ভাষা গান গায়
সে গান মিছিলের,
সে গান বিদ্রুপের—
আবার সে গান মুক্তিরও
কেউ বোঝে কেউ বোঝে না।

বিকল্পিত

আমাকে যখন কবর ডেকেছিলো
যাবার সময় ছিলো না তাই কবর নিজেই
শুয়েছিলো দরজার পাশে।
আমার কাজ যেন আর শেষই হয় না
এটা ওটা করলেও সেটা যেন করা হয়নি !

এক সময় সংসারের সঙ্গে আত্মগত দ্বন্দ্বে
আমি পরাজিত,
মনে হলো পৃথিবীটা আর সুন্দর নেই
চতুর্দিকে কাঁটাতারের বেড়া।

স্বেচ্ছামৃত্যু কামনা করতে না করতেই দেখি
দরজা শূন্য, মহাশূন্যের এক অনন্ত সংসার,
এখানেই ছিলো কবরের যাপন…

মৃত্যুর দিকে পা বাড়াতেই
হাতে পায়ে শিকল পরালো অহংকার,
মানুষেরা শুইয়ে দিলো বিছানা বালিশে,
তৃষ্ণার্ত নই তবু দিলো চামচ চামচ পানি,
কবর বললে, ডাক্তার ডাকো, ঘুমের ওষুধ দাও
নির্ধারিত কবরে শুয়ে আছে অন্যজন…

জীবিত হচ্ছে স্বর্গীয় পৃথিবী

যারা কারও কোনো প্রশ্নই শুনলো না
কেমন অবলীলায় ঝুলিয়ে দিচ্ছে প্রশ্নমালা !
দাঁড়িয়ে আছি গাছের নিচে,
প্রশ্ন শুনে শুনে পাতাদের জীবন যাপন
প্রতিকূলেই বেড়ে ওঠা….

রঙিন পাতাগুলো অনেক প্রশ্ন করলো,
স্পষ্ট বলে দিলো, উত্তর খুব সহজ—
চূড়ান্ত সত্যে পৌঁছানোর কোনো উদ্দেশ্য
উত্তরপত্রে না থাকলেই ভালো।

পাতারা চায় প্রশ্নের পিঠে প্রশ্ন
প্রশ্নবাণে দীর্ণ হতে চায় মানুষের কাছে
পাতা দেবে সবিনয় প্রশ্নের উত্তর,
মানুষ হা করে দেখবে পাতার শরীর থেকে
কেমন করে চুঁয়ে চুঁয়ে ঝরছে পরিস্রবণ—
স্নাত হচ্ছে শুদ্ধ হচ্ছে
নতুন করে জীবিত হচ্ছে স্বর্গীয় পৃথিবী !