সামসুন্নাহার ফারুকের কবিতা

সামসুন্নাহার ফারুকের কবিতা

আমি রাধা হয়ে উঠি

রাত্রি গভীর হলে ইদানিং প্রায়শঃই
অজান্তে রাধা হয়ে ওঠি
শ্যামাঙ্গীতে ধারণ করি
রূপের পসরা
উৎকর্ণ বাজতে শুনি কার যেন
মধূর বাঁশরী

আকণ্ঠ তৃষ্ণা মিটাতে সুর খুঁজি
সুরের অলিগলি খুঁজি
সুচারু প্রেম বুকে মাধুকরী মনটা
হয়ে ওঠে নেশাড়ু উতলা
আঁধার কেটে কেটে পাড়ি দিই
অথই সমুদ্দুর

বাজে বাঁশী বাজে
বাজে সুখ বৃন্দাবনে

নিভৃতের বাঁশী শোনে
কার যেন মোহময় আহ্বানে
অক্লান্ত ছুটতে থাকি
নদিনালা কাশবন পার হয়ে
পৌঁছে যায় কাঙ্খিত ঠিকানায়
শরীরী উন্মাদনায় হৃদয়ের ভাষাগুলো
যেখানে ইতিহাস হয়ে যায় ।

উৎসব

ইনবক্সের কোন সিন্দুকে জমা রেখেছিলে
এত প্রেম, এত মুগ্ধতা, এত মোহাচ্ছন্নতা
কোন্ সেফটি ভল্টে তালা বন্ধ ছিল
এতসব দুষ্প্রাপ্য নথিপত্র গুপ্তধন

উদগ্র ক্ষুধা নিয়ে ঠোঁটটা ছুয়ে দিতেই
সকল মৌনতা ভেঙে আবেগগুলো
হয়ে গেল বরফগলা নদি
বন্দী জীবন থেকে বের হয়ে
মুক্ত আকাশে উড়ে গেল
ঝাঁক ঝা্ক সুখের পায়রা
সামনেই কাশবন পেয়ে
লুটোপুটি খেতে খেতে
তুলে নিল যুগল সেলফি

সমগ্র অনুভব জুড়ে তখন
নেশার কোলাহল
হৃদয়ের আন্তঃজালে
ঐন্দ্রজালিক দীপাবলী
মোহাচ্ছন্ন অবয়বে ধ্রূপদী ঘুঙুর

এমন উৎসব বুঝি আর নামেনি কখনো ।

খড়কুটোর সংসার

অষ্টাদশী শরীর নিয়ে ছুটতে ছুটতে
বাসন্তী বল উঠলো
দেখেছ চারিদিকে কেমন উচ্ছ্বাস
লেগেছে পরবের দোলা
রঙে রঙে চমকাচ্ছে প্রকৃতির মেলা

তার যে আসার কথা ছিল
দরজার খিল খুলে বেরিয়ে এলাম
কই, কোথাও কেউ নেইতো
আর আসবেই বা কেনো
এমন হত দরিদ্রের কাছে
কেউ কি সুখ পেতে আসে
ভাবনাটাও বোধ করি দুঃখ বিলাস

মস্তিষ্কের নিউরণগুলো বিদ্রোহী হলো
হৃদয়ের রক্ত কণিকাগুলো
তুমুল আবেগে বলে উঠলো
ওই যে দেখ, নীড় সাজাচ্ছে ওরা
খড়কুটো দিয়ে সংসার করবে বলে

ছোট্ট দু’টি পাখি
তারাও ভেসে যাচ্ছে প্রেমের জোয়ারে
ওরাও বুঝে নিয়েছে ভালোবাসার জন্য
বাহ্যিক প্রাচূর্যের প্রয়োজন নেই
হৃদয়ের টানটাই যথেষ্ট

বুঝতে পারি তৃষ্ণার্ত ঠোঁটের
মোহন কম্পনে গন্দম সুবাসে
কোথায় যেন তলিয়ে যাচ্ছি
মিহীন সূতার মোহময় টানে ।