নাসির ওয়াদেনের কবিতা

ডাকছে আমার হরিণীমেঘ
শুধু আমাকেই ডাকে আলোবেলা
হরিণের দেশে, মাঠের বাউলে
অপেক্ষা বিছিয়ে দিই পোড়াভাতে
হলুদ আঁচলে ছায়াসুখ পেতে
রাখি দুরন্তকে ভেজা ভেজা চুলে
বসন্ত আকাশে একান্ত মেঘ এসে
ভিজিয়ে দেয় তৃপ্ত হ্লাদিনী মূর্তি
সহজেই রোদ পেরিয়ে যায় মাঠ বিজন
ওই মাঠ ভরে আছে পলাশ রঞ্জনে
আগুনকেও কাছে ডাকি, রঙফুলে
মেহেদী রঙা মৃত ঘাস হাসে
সম্পর্কের গন্ধ শোঁকে আহত অঞ্জনে
পোড়া
বিশ্বাসের লম্বা সেতু দিয়ে হাঁটি পথে
মাথার আকাশে পায়চারি মেঘ ঝরে
নির্ভেজাল দুপুরের ক্লান্তি ঘাম ,শরতে
ভুবনডাঙ্গার রঙিন মেঘ নৌকার দাঁড়ে
সত্যের কাছাকাছি পলিমাটি ছোঁয়া ফাগ
বসন্ত বসনে ঢাকৃ ফেরারি কলম নীলদাগ
ছোঁয়াচে বাতাস-কান ভর্তি আশীর্বাদীফুলে
উদ্ভ্রান্ত আলোর কাছে না-চলাপথে চলে মহড়া
রোদ ভেসে ওঠে লাগোয়া কলমিলতার কূলে
আগুনে সন্ত্রাসদাগে ছটপটে পা দু’খানি পোড়া
সম্পর্কের ছায়া-ডাল
ছায়াহীন সুখ-মাখা আলোর সোহাগী কিঙ্করী
বিশ্বাসের ছায়ায় ভিজিয়ে দিয়েছে যৌবন
বেঁধে দিই লালফুল খোঁপায়, হাতে রাঙা চুড়ি
সূর্যধোয়া বাড়ি থেকে ভেসে আসা সুখি মনপবন
অন্ধকারও ভয় পায়, রাত্রি খোঁজে নিজ আলো
তুমি আমার ছিলে,তোমাকেই বেশি বাসি ভালো
রসিক শিখারা পায়চারি করে সহজ সরল ঘর
বিছানায় শুয়ে আছি, ভীষ্মপিয়াস জুড়ে অন্তর
দুরবতী স্বপ্নগুলো ঝোলা নিয়ে করে মাধুকরী
টগবগে মেয়ে তুমি, ঠোঁটে আঁকা চান্দ-ময়ূরী
সম্বন্ধ সরলরেখায় চলে বিশ্বাস হীনভাঙা ডালে
একান্ত অসুখিমেঘ মুগ্ধ নদীর বুকে ঢেউ তোলে
গৃহবন্দী
গুহাবাসী ছিল আদিম পিতারা একান্ত নির্জন
সুখি কাকতালীয় পথ হামাগুড়ি দিত
বনের ডালে ডালে সূর্যের কিরণ
সাধগুলো সাধ্যের দিকে তাকিয়ে
খাদ্য আসে গুহাঘরে, জ্যান্ত অথবা মৃত
হাতগুটিয়ে বসে থেকে ভাগ্যকে দোষারোপ ?
মারী নিয়ে যারা প্রতিনিয়ত করে ঘর
তাদের লড়াই করেই বাঁচতে হয়েছে
বিজ্ঞানের আলো জ্বেলে ভরে দিই অন্তর
বিজ্ঞানই বাঁচাতে পারে কোনো সংস্কার নয় অনেক আগেই বুঝেছিল গুহামানবেরা
হাতের আর মস্তিষ্কের যৌথ উদ্যোগে
শ্রম শক্তি তাই নিয়ে বেঁচে থাকে এরা
ছায়াহীন সুখ
যা কিছু সম্পর্ক ছিল হলুদ বাতাস এসে
ভিজিয়ে দিয়েছে চোখ উদ্বাস্তু আলোতে
বসন্ত ভেজা আকাশ অপেক্ষায় বসে
নীরবে কেঁদেছে ভুবনডাঙ্গার মেঘ,শরতে
আগুনমাখা সন্ত্রাস আজব ফেরারি বুক
রসিক শিল্পের দাগে সারাটা শরীর
সবুজছায়া উড়ে সকালে অবিশ্বাসে অসুখ
বিশ্বাসের নোংরা জলে ভাসছে দুপুর
সূর্য-ধোয়া আলো যেখানে এক ছায়াহীন সুখ
পূণ্যতোয়া ঘাসজলে ভরিয়ে দিয়েছে পোড়ামুখ