অসিকার রহমানের কবিতা

অসিকার রহমানের কবিতা

ছায়ার শরীর

একটিই ঘর আমার একটিই জানালা
সিক নেই নেট নেই কবাটবিহীন —
অবারিত এ জানলা কি ইচ্ছে করেই রাখা,
মেয়ে বলে, অন্তত একটা পর্দা লাগাও বাবা….
ভরা নদীর জলে ভেসে যায় সময়ের পালক
বাতাসে ভর করে একজন ঘুরে বেড়ায় ছায়া ছায়া খোলা জানলায়…

ছোট্ট ঘর তবু এখানে আকাশ সেঁধিয়ে পড়ে
সেই সাথে সেই ছায়া ক্যানভাসের ছবি হয়ে ঢুকে পড়ে অন্দরে অলিন্দে
আমার সন্তান ঘুমিয়ে গেলে
মায়াময় সেই ছায়া চুম দেয়, মেয়ে পাশ ফিরে শোয়
ঘামের শীতল গন্ধে জেগে উঠি বারবার
ভাঙা জ্যোৎস্নার মায়াবী আলোয় ভরে থাকে ঘর
আকাশ চাঁদ আর ছায়ার শরীর
একই বিন্দুতে দাঁড়িয়ে থাকে
সন্তান জানতেও পারে না
কোন সে প্রিয়জন আসে যায় ফাঁকা জানলায় !

সময়ের হিসাব

কঠিন মুঠোর মধ্যে আছে সময়ের হিসাব
অথচ হিসাব মেলে না সারারাত।

পুকুর পাড়ে সারিবদ্ধ বক
তাক করে বসে আছে আমার দিকে
সময়ের ডাকে
ভেঙে ফেলবে আমার অহংকার
(অবশ্য যদি না হিসাব মেলে)।

খুব কাছেই ফুটে আছে কৃষ্ণচূড়া
একটি নারীর মাথায় ফুল দেখে
ফুলের কথা ভাবছি

কঠিন মুঠোর মধ্যে আছে সময়ের হিসাব
অথচ হিসাব মেলে না সারারাত।

পৃথিবীর অসুখের শেষে

অহরহ খুলে যাচ্ছে পৃথিবীর মুখ
ভেসে উঠছে কঙ্কাল
ঘুরে বেড়ায় প্রতিবাদহীন আত্মার মিছিল
পাশাপাশি ঠিক প্রেতাত্মার উল্লাস।

ঝুরঝুর ঝরে পড়ে অনারোগ্য অসুখ
কী উৎকট ক্রিয়াশীল এই ঘুমন্ত পাহাড়
আকাশের সূতোয় ঝুলন্ত অদৃশ্য টর্নেডো
লক্ষ লক্ষ কঙ্কাল ঘোরে অধোমুখে।

জড়িয়ে পড়েছে মানুষ তরাসের অসুখে
পর্বতের প্রতাপী বুকে পা রেখে কঙ্কাল-নাচ
পৃথিবীর অসুখের শেষে
নতুন সূর্য উঠবে, অপাপবিদ্ধ হাসি হেসে…