অণুগল্প :”বাঁশবাগানে মানুষের লজ্জা”

অণুগল্প :”বাঁশবাগানে মানুষের লজ্জা”

”বাঁশবাগানে মানুষের লজ্জা”
প্রদীপ দে

কার মুখ দেখে যে আজ উঠেছি?
গেছি বাঁশবাগানে ইয়ে করতে আর খেয়াল না করে কারোর করে যাওয়া ইয়ের উপড় পা দিয়ে ফেলেছি আর দেখে কে? একেবারে সরাৎ করে হড়কেছি পুকুরপানায়।
খেইমেই করে আমাকে এক্কেবারে জাপটে ধরবে না গুয়ে পেত্নী ?
ব্যাস আর যাবো কোথায় ? পালানোর পথ নাই সামনে ভুত আর পিছনে লোকলজ্জার ভয়, প্যান্টালুন যে খোলা মাঝ মাঠে – একেবারেই উদোম আমি ।

পেত্নীকে জিগালাম- এটা ক্যামনে হলো?

ও-ও দেখি আমারে নকল করছে— আমারে কেনে কস? নিজে আমারো গায়ে আইস্যা লুইটা পড়লি কেনে? আমার থিক্যা তোর গায়ে বেশী গুয়ের সুবাস!

পানা গাছগুলো সরিয়ে জল খুঁজে হাত পা ধুঁয়ে নিচ্ছি।

হঠাৎই পেত্নী শুধালো — ধুলে কি ইজ্জত যাবে চলে রে, আহাম্মক কোথাকার ?

— গালি দিবিনে বলে রাখলুম হারামজাদী!

— ওরে আমার ইজ্জতবালারে ? দুদিন আগে মোরে পিরিত কইরা জইরা ধইরে কত সোহাগই না করেসিলি মনে পড়ে?

-সেকি? কে তুই রে?

-আরে ভুলে মরলি বদ্দির ব্যাইটা? আমি মুন্নি রে মুন্নি ! গরীব ঘরের মাইয়া বইলা ফুর্তি কইরা ছাইরা দিলি – বাপ মার ডরে!

আমি কোথায় পালাই। ভয়ে আর লজ্জায় শহর ছেড়ে দেশের বাড়ি পাইলে এসেও নিস্তার নে যে! এখন উপায়?

-আর আমি দঁড়িতে ঝুইলা মরেছি স্রেফ তুর অকর্মের জন্য। মোর বাপটা যে কইলো – মরদ জুটালিই যখন তাইলে দঁড়িও জুটিয়ে লে —।
-কি ডর ! মুই যে তখন সিলাম দুইজনা!

আমি বদ্দির বেটা। মুন্নি আজ ভুত হয়ে আমায় কি নাকানিচুবানিই না খাইয়ে ছাড়লো? বুঝতে বাকি রইলো না আমি অন্য কারোর মুখ দেখে ঘুম ভেঙে উঠে বিপদে পড়িনি। বিপদ আমার নিজের দোষেই!
পাপের ফল! পাপীর নিস্তার নাই। সারাজীবনের জন্য এই সাজা আমার জন্য তোলা রইলো। মুন্নি আমায় সহজে ছাড়বে না !

আর এখন আমার ভুতের ভয় নেই -উড়ে গেছে।
মুন্নি আমায় এমন এই শিক্ষাই দিল যে এখন আমিই আমার ভয়ের কারণ!