মাসুদুল হকের কবিতা

একটি বেতার ভাষ্য
লোকেরা তাদের ভাষায় যা বলে তা আমার কাছে খুব প্রাসঙ্গিক নয়; বোঝাও যায় না।
তারা যা বলে তা আমার কান এড়িয়ে না গেলেও
সে ভাষা শেখা হয়নি
আমি শিখেছি, যা আমাকে শেখানো হয়েছে
জীবনের জন্য তরঙ্গের ভাষা।
আমি একই সঙ্গে এক ও বহু;এক উৎসে বহুতে প্রকাশ
আমি ভাষা শুধুমাত্র অফিসিয়াল আচার অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহার করি।
আমি কবিতা ও নাটকে অন্যের কণ্ঠকে ছুটির
দিন বানিয়ে ইথারে ছেড়ে দিই
যুদ্ধ কী সামরিক পর্বে জনতার ভাষায়
পেরেক ঠুকে দিয়েছি
মন থেকে নিষেধের দিনগুলোতে।
জন্ম থেকেই আমার বিশজন বন্ধু রয়েছে।
একটি স্টেশন , একটি মাউথ, দুটি চেয়ার, দুটি রেকর্ডার, একটি স্ক্রিপ্ট বোর্ড এবং তেরো মানুষ;যারা
বিভিন্ন কাজে আমাকে মানবিক করে তোলে।
রঙ, মুখোশ ও তুমি
সাত রঙে ডুবে যাচ্ছো তুমি; তোমার মুখোশ
আয়নার কোথাও নেই তোমার প্রতিবিম্ব
বাতাসও ধরা পড়ে যাচ্ছে রঙের খেলায়
পারুলগঙ্গায় স্নান করেও নিজের কাছে
আজো বড় অচেনা আমি
প্রেম নয়;বিত্ত নয়
সূর্যের বিপরীতে দাঁড়িয়ে
ভিজে যাচ্ছে আমার মুখ
চাঁদের জ্যোৎস্নায় তুমি রঙ ছড়িয়ে
মন্দিরের বেদীতে পায়ের চিহ্ন রেখে
হারিয়ে গেছো মানুষের ভেতর
সাত রঙে মুখ রাঙিয়ে
আজো আমি প্রতিটি দোলপূর্ণিমায়
তোমার ভেতরে মানুষের মুখ খুঁজে বেড়াই
কেননা রঙে তোমার মুখোশ ভিজে গেলেও
অবিকল থেকে যাবে তোমার মুখ
মধ্যরাত
মধ্যরাত
প্রার্থনার মতো মগ্নচৈতন্যে
জেগে ওঠে তোমার শরীরে
তুমি এক গোলাপের বন
গন্ধ ও কাঁটায়
কাম ও ভয়ে
আমি সেখানে প্রবেশ করি
মধ্যরাতে তুমি শুধুই রমণী
ভাস্কর্য
মোম জ্বলছে
বাতাস এখানে গন্ধের ধারণা
আলো-অন্ধকার মানে
তোমাকে পূর্ণভাবে দেখা
আমি এক অন্ধ ভাস্কর
মধ্যরাতে
তোমাকে আঙুলে ছুঁয়ে ছুঁয়ে
ভাস্কর্য গড়ে তুলি
ভ্রমণ
মধ্যরাতে রাইটিং টেবিল থেকে
চোখ জেগে ওঠে
একটা লটরপটর চাঁদ
জানালায় এসে শ্বাস নিতেই
পোষা কালো বিড়াল
অন্ধকারে মিলিয়ে যায়
তুমি জ্যোস্নায় ভিজতে ভিজতে
চাঁদ হয়ে ওঠো
আমি চাঁদের দেশে ভ্রমণে যাই