প্রবন্ধ: বিশ্বাভিমুখে মানুষের ধর্ম

প্রবন্ধ: বিশ্বাভিমুখে মানুষের ধর্ম

প্রবন্ধ: বিশ্বাভিমুখে মানুষের ধর্ম
দেবশ্রী ভৌমিক

সভ্যতার বিবর্তনের কাল থেকেই মানুষ তাঁর আপন শ্রেষ্ঠত্বকে উপস্থাপনের প্রতি প্রভূত প্রয়াস দেখিয়েছেন। আপনার মধ্যে যে কল্পনাশক্তি সে অনুভব করে তা সকল কালের, সকল প্রাণীর চেয়ে শ্রেষ্ঠ বলে জাহির করে। বিশ্বগত মানুষের অন্তরাত্মার এই আনন্দকে স্থায়ী রূপ দেবার জন্য তাঁর এই দুঃসাধ্য সাধনা। কিন্তু মানুষ তাঁর নিজ মনুষত্ব্যের কারণেই যে শ্রেষ্ঠ প্রমাণিত হয় সে কথা কারো অজানা নয়। আর এই পরিচয় সম্পূর্ণকরণেই মানুষের অভ্যুদয় এবং বিকৃতিতেই পতন। যেমন সমস্ত নীহারকিার অন্তরে সৃষ্টি হয় হোম-হুতাশনের উদ্দীপনা, তেমনি মানুষের ইতিহাসের ক্ষেত্রে কদাচিৎ মহাপুরুষদেরও সন্ধান মেলে। তাদেঁর মূল কথা হল, “সমস্ত অন্তরেই কাজ করছে অভিব্যক্তির অনুপ্রেরণা। আর জীবমানব সকল অহং আবরণ খুলে উত্তীর্ণ হতে চায় সেই অভিব্যক্তির শিখরে।” কিন্তু একটিমাত্র প্রাণকণা যখন এই পৃথিবীতে দেখা দিল, সেইদিনই জগতের অভিব্যক্তি একটি মহৎ অর্থে এসে পৌঁছল। জড়ের বাহ্যিক সত্ত্বার মধ্যে দেখা দিল আন্তরিক সত্য। দেখা গেল, প্রাণকণায় বাহির থেকে অন্তরের দিকে একে একে মুক্তির দ্বার উন্মোচিত হল। আর যখন এই দ্বার মানুষে এসে ঠেকলো, তখন যবনিকা উঠতেই জীবকে দেখা গেল তাঁর ভূমায়। দেখা গেল রহস্যময় যোগের তত্ত্বকে পরম ঐক্যে।

বিশ্বের প্রতিটি জাতিই নিজস্ব সভ্যতার ভিতর দিয়ে আপনার শ্রেষ্ঠত্বকে প্রার্থনা করছে। গাছের শিকড় থেকে ডালপালা পর্যন্ত সবকিছুতেই যেন একমাত্র আকাঙ্ক্ষা এই যে, যেন তার ফলের মধ্যে সবচেয়ে ভাল বীজটি জন্মায়। অর্থাৎ তার শক্তির যতখানি পরিণতি হওয়া সম্ভব ততখানিই যেন তার বীজে প্রস্ফুটিত হয়। ঠিক তেমনি মনুষ্য সমাজও এমন মানুষকে চায় যার মধ্যে সে আপনার শক্তির চরম পরিণতিকে দেখতে পারে। রবীন্দ্রনাথ ঠিক এই ভাবনা থেকেই সাহিত্যের সকল ক্ষেত্রে বীজ বপন করেছেন। সাহিত্যের সকল ধারাতেই তাঁর রয়েছে অবাধ বিচরণ। তিনি একাধারে সংগীত, প্রবন্ধ, গল্প ও উপন্যাস রচয়িতা। তাঁর অসংখ্য প্রবন্ধের মধ্যে “মানুষের ধর্ম” এমন একটি রচনা যেখানে মানুষের স্বভাব জ্ঞানে, কর্মে, ভাবে সকলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সত্য হয়। আর এই সত্য যোগের পূর্ণতা নিয়েই তৈরি হয় সভ্যতা। তাই মানুষের সেই প্রকাশই শ্রেষ্ঠতম যা একান্ত ব্যক্তিগত নয় বরং যা সকল কালের সকল মানুষের মন স্বীকার করতে পারে। এমন সার্বজনীন মনকে উত্তরোত্তর বিশুদ্ধ করাতেই মানুষের অভিব্যক্তির উৎকর্ষ।
আমাদের অন্তরে এমন একজন আছেন যিনি মানব হয়েও ব্যক্তিগত মানবকে অতিক্রম করে ‘সদা জনানাং হৃদয়ে সন্নিবিষ্টঃ’ অর্থাৎ তিনি সর্বজনীন, সর্বকালীন মানব। সেই মানবমনের উপলব্ধিতেই মানুষ আপন জীবসীমা অতিক্রম করে মানবসীমায় উত্তীর্ণ হয়। সেই মানবমনের উপলব্ধি সর্বত্র সমান নয় বলে অনেক ক্ষেত্রেই মানুষ আজও মানুষ হয়নি। মানবমনের আকর্ষণ প্রতিনিয়তই অন্তর থেকে কাজ করছে বলে আত্মপ্রকাশের প্রত্যাশায় ও প্রয়াসে মানুষ কোথাও সীমাকে স্বীকার করছে না। কিন্তু সেই মানবকেই নানা নামে পূজা করছে , তাঁকেই বলছে –
‘এষ দেবো বিশ্বকর্মা মহাত্মা’।

মানুষের এমন একটা দিক আছে যেখানে সে বিষয়বুদ্ধি নিয়ে আপনসিদ্ধি খোঁজার নেশায় মত্ত। সেখানে সে ব্যক্তিগত জীবনযাত্রা নির্বাহে তাঁর জ্ঞান, তাঁর কর্ম, তাঁর রচনাশক্তি নিয়ে একান্ত ব্যপৃত। কিন্তু অন্যদিকে আরেকটা দিক আছে যা এই ব্যক্তিগত বৈষয়িকতা বর্হিভূত। সেদিকে জীবনযাত্রার আদর্শকে যদি ক্ষতি বলি তা ই লাভ, যদি বলি মৃত্যু তা ই অমরত্ব। সেখানে বর্তমানের জন্য বস্তু সংগ্রহ করার চেয়ে অনিশ্চিত উদ্দেশ্যে আত্মত্যাগের মূল্য অধিক। সেখানে জ্ঞান, উপস্থিত প্রয়োজনের সীমা পেরিয়ে যায়, কর্ম স্বার্থের প্রবর্তনকে অস্বীকার করে। সেখানে স্বতন্ত্র জীবনের চেয়ে যে জীবন বড় সেই জীবনে মানুষ বাঁচতে বেশি কামুক।
“স্বার্থ আমাদের যেসব প্রয়াসের দিকে ঠেলে নিয়ে যায়, তার মূল প্রেরণা দেখি জীবপ্রকৃতিতে, যা আমাদের ত্যাগের দিকে, তপস্যার দিকে ঠেলে নিয়ে যায় তাকেই বলি মনুষত্ব্য, মানুষের ধর্ম।”
মনুষ্যচেতনায় দুইটি ভাব দেখা যায়, একটি জীবভাব, একটি বিশ্বভাব। জীবভাবে আপন উপস্থিতি আঁকড়ে আশু প্রয়োজনের কেন্দ্র প্রদক্ষিণ করে, অন্যদিকে যেদিকে মানুষ বিচ্ছিন্ন নয় , যেদিকে তাঁর পূর্ণতা, যেদিকে ব্যক্তিগত সীমাকে ছাড়িয়ে চলেছে, সেদিকে রয়েছে বিশ্বভাব। জীবভাব আদর্শ অন্নের মত নয়, বস্ত্রের মত নয় যেখানে রয়েছে আন্তরিক আহ্বান এবং নিগূঢ় নির্দেশের আদেশ।যে আদেশ বিশ্বভাবের দিকে ধাবিত হয়েছে।
ঋগবেদে সেই বিশ্বভাবের কথা বলা হয়েছে-
“পাদোহস্য বিশ্বভূতানি ত্রিপাদস্যামৃতাং দিবি-”
অর্থাৎ যে সীমাকে ছাড়িয়ে চলেছে তার এক চতুর্থাংশ আছে জীবজগতে, আর বাকি বৃহৎ অংশ উর্দ্ধে অমৃতরূপে।মানুষ যেদিকে সেই ক্ষুদ্র অংশগত আপনার উপস্থিতিকে, প্রত্যক্ষকে অতিক্রম করে সত্য সেদিকে মৃত্যুহীন।
সঞ্চয় বা ভোগ করা নয় বরং নিজেকে প্রকাশ করার যে প্রেরণা তাতেই মানুষের বিকাশ। আদিকাল থেকেই মানুষের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা ছিল নিজের ভিতরের সত্যকে আবিষ্কার করা এবং বুঝতে পারা যে সে বহুর মধ্যে এক। দেখতে পায় জ্ঞানে,কর্মে ভাবে যতই সকলের সঙ্গে সে যুক্ত হয় ততই সে সত্য হয়। কারন পূর্বেই বলা অছে যোগের এই পূর্ণতা নিয়েই সত্যতা। তাই মানুষ নিজের উন্নতির সাথে সাথে ব্যক্তিসীমাকে পেরিয়ে বৃহৎ মানুষ হয়ে উঠেছে। তার সমস্ত সাধনা এই বৃহৎ মানুষের সাধনা। আর এই বৃহৎ মানুষ অন্তরের মানুষ। বাইরে আছে নানা দেশের, নানা সমাজের, নানা জাতের অন্তরে আছে এক মানব। চেনার স্থান হৃদয়ে তাই মানুষের আত্মোপলব্ধিও পৌঁছতে চায় বাহির থেকে হৃদয়ে। ভেতরে আছে বিশ্বজনীনতা যেখানে বস্তুগত বাঁধা পেরিয়ে মানুষ পৌঁছেছে বিশ্বমানসলোকে। যে লোকে রয়েছে তাঁর বাণী, তাঁর শ্রী, তাঁর মুক্তি। সফলতা লাভের জন্য মন্ত্রতন্ত্র, ক্রিয়াকর্ম নিয়ে বাহ্য পরীক্ষায় প্রবৃত্ত হয়েছিল মানুষ। অবশেষে সার্থকতা লাভের জন্য একদিন সেই মনুষ্যচিত্ত বলল,“তপস্যা বাহ্যানুষ্ঠানে নয়, সত্যই তপস্যা।”

গীতার ভাষায় বললে– “দ্রব্যময় যজ্ঞের চেয়ে জ্ঞানযজ্ঞই শ্রেয়।”
খ্রীষ্টের বাণীতে শুনলে–“ বাহ্যবিধিনিষেধে পবিত্রতা নয়, পবিত্রতা চিত্তের নির্মলতায়। তখন মানবের রুদ্ধ মনে বিশ্বমানবচিত্তের উদ্বোধন হল।”
মানুষ বরাবরই বিশ্বাভিমুখী। তার ধর্মই আপনাকে জানা। সে কখনোই নিজের মধ্যে স্থির থাকতে চায় না। ডিমের মধ্যে যে পাখির ছানা আছে তার অঙ্গে দেখা যায় পাখির ডানার সূচনা। ডিমে বাঁধা জীবনে সেই ডানার বাহ্যত কোন অর্থই নেই। সেখানে আছে কেবল ডানার অবিচলিত প্রতিবাদ। এই অপরিণত ডানার সংকেত জানিয়ে দেয় ডিমের বাইরে সত্যের যে পূর্ণতা আজও তার কাছে অপ্রত্যক্ষ, সেই মুক্ত সত্যে সঞ্চরণেই পাখির সার্থকতা। তেমনিভাবে মানুষের চিত্তবৃত্তির যে আকাঙ্ক্ষা মানুষের পূর্ণ সত্যের সাক্ষ্য দেয়সেখানেই তার ব্যক্তিগত স্বাতন্ত্র্য থেকে মুক্তি।
মানুষের মত মাথা তুলে দাঁড়ানোর ক্ষমতা ছিল না অন্যান্য জীবের। প্রাণধারণের বাইরে তাদের মনের কোন গতি নেই। পরবর্তীতে মাথা তুলে দাঁড়ানোর কারনে মানুষের দৃষ্টি প্রসারিত হয়েছে, জানতে পেরেছে সীমার মধ্যে সে বদ্ধ নয় একে বলা যায় মুক্তদৃষ্টি। মানুষের কাছে নিকটের চেয়ে দূরের মূল্য বেশী। এই দৃষ্টির সঙ্গে যোগ দিয়েছে অন্তরের কল্পনাদৃষ্টি। ফলশ্রুতিতে যা অপ্রয়োজনীয় মানুষ তা ও করতে লাগলো। যে কাজ কোন দরকারে আসে না ক্রমে সেটাই হয়ে ওঠে মুখ্য বিষয়, ছাড়িয়ে যায় তার প্রাণযাত্রাকে। এ থেকেই প্রতীয়মান হয় যে দেহের দিক থেকে মানুষ যেমন ঊর্দ্ধশিরে নিজেকে টেনে তুলেছে খন্ডভূমির থেকে বিশ্বভূমির দিকে, নিজের জানা শোনাকেও তেমনি স্বাতন্ত্র্য দিয়েছে জৈবিক প্রয়োজন থেকে, ব্যক্তিগত অভিরুচি থেকে। জ্ঞানের এই সম্মানে মানুষের বৈষয়িক লাভ হোক না হোক , আনন্দ লাভ হল। আর এ আনন্দ বিষয়কে বড় করে পায় বলে নয়, নিজেকেই বড় করে , সত্য করে পায় বলে। তাই বলা যায় মানবজীবনের যে বিভাগ অহেতুক অনুরাগের অর্থাৎ নিজের বাইরের সাথে অন্তরঙ্গ যোগের , তার পুরষ্কার নিজেরই মধ্যে। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন,
“বাইরের সঙ্গে ভিতরের একটা যোগ আছে বটে, কিন্তু সে যোগ অনুরূপতার যোগ নয় বরং বৈসাদৃশ্যের যোগ। দুটোই মিলে আছে কিন্তু দুয়ের মধ্যে যে কোথায় মিল তা ধরার জো নেই তা অনির্বচনীয় মিল, তা প্রত্যক্ষ প্রমাণযোগ্য মিল নহে।”
জীবলোকে চৈতন্যের যে নীহারিকা তা অস্পষ্ট আলোকে ব্যপ্ত। সেই নীহারিকা মানুষের মধ্যে কেন্দ্রীভূত হয়ে উজ্জল দীপ্তিতে বলে উঠলো, “এই যে আমি”। সেই দিন থেকে মানুষের ইতিহাসে নানাভাবে, নানারূপে, নানা ভাষায় এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া চলল- “আমি কি?”। জন্তুর উত্তর পাওয়া যায় তার দৈহিক ব্যবস্থার যথাযোগ্যতায়। কিন্তু মানুষ কি করে মানুষের মত হবে তাই নিয়ে বর্বরদশা থেকে সভ্য অবস্থা পর্যন্ত তার চিন্তা ও প্রয়াসের অন্ত নেই। কত ধর্মতন্ত্র, কত অনুষ্ঠানের পত্তন হল, সহজ প্রবৃত্তির প্রতিবাদ করে নিজেকে সে স্বীকার করাতে চায় যে, বাইরে সে যা ভিতরে সে তার চেয়ে অনেক বড়। এমনি করে বড় ভূমিকায় নিজের সত্যকে স্পষ্ট করে উপলব্ধি করতে মানুষের অহেতুক আগ্রহ। কারণ সে বোঝে সে সহজ নয়, তার মধ্যে একটা রহস্য আছে। এই রহস্যের আবরণ উদঘাটিত হতে হতে সে চিনবে। শতাব্দী ধরে চলছে তার সে প্রয়াস।
মানুষের সত্ত্বায় দ্বিধা রয়েছে। তাঁর যে সত্ত্বা জীবসীমার মধ্যে, সেখানে যেটুকু আবশ্যক সেটুকুতেই তার সুখ। কিন্তু মনে মনে জীবমানব বিশ্বমানবে প্রসারিত, সেই দিকে সে সুখ চায় না, সে সুখের বেশী চায়, সে ভূমাকে চায়।তাই সকল জীবের মধ্যে মানুষই কেবল অমিতচারী। তাকে পেতে হবে অমিত, তাকে দিতে হবে অমিত,কেননা তার মধ্যে আছে অমিতমানব। সেই অমিতমানব সুখের কাঙাল নয়, দুঃখভীরু নয়। সেই অমিতমানব আরামের দ্বার ভেঙে কেবলই মানুষকে বের করে নিয়ে চলেছে কঠোর অধ্যবসায়ে।

দেবতার মত মানুষেরও আনন্দ মহিমায়। কিন্তু যে স্বভাবে তার মহিমা সেই স্বভাবকে সে পায় বিরোধের ভিতর দিয়ে। পরম সুখকে পায় পরম দুঃখে। তাই মানুষের সহজ অবস্থা ও স্বভাবের মধ্যেনিত্যই দ্বন্দ্ব। অন্যদিকে জন্তুর অবস্থাও যেমন, স্বভাবও তার অনুগত। তার বরাদ্দ যা, কামনাও চলে তার পিছনে বিনা বিদ্রোহে। তার যা পাওনা তার চেয়ে বেশী তার নেই। কিন্তু মানুষের ক্ষেত্রে বাঁধা বরাদ্দের সীমা থাকলেও উপরিপাওনার সীমা নাই। বস্তুতঃ মানুষের জীবিকা চলে বাধা বরাদ্দে, উপরিপাওনা দিয়ে প্রকাশ পায় তার মহিমা। এই নিয়েই মানুষের যত বিবাদ, যত কান্না। সেই বাইরে বিক্ষিপ্ত আপনহারা মানুষের বিলাপগান রবীন্দ্রনাথ শুনেছিলেন এক ভিখারীর মুখে-
“আমি কোথায় পাব তারে
আমার মনের মানুষ যে রে…..।।”
প্রবৃত্তির প্রেরণায় আমরা যা ইচ্ছা করি । পাওয়ার ইচ্ছা যেমন মানুষের স্বভাবে বর্তমান, তেমনি সেই শ্রেয়ের ইচ্ছাও মানুষের স্বভাবে বিদ্যমান। যিনি শ্রেয়কে গ্রহন করেন তিনি সাধু আর প্রেয়কে (পাওয়ার ইচ্ছা) গ্রহন করেন তিনি পুরুষ থেকে হীন হন। কেননা নিজের মধ্যে সর্বকালীন বিশ্বভূমীন মনুষ্যধর্মের উপলব্ধিই সাধুতা, হীনতা সেই মহামানবের উপলব্ধি থেকে বিচ্যুত হওয়া।
মানুষের সাধনা এক স্বভাব থেকে অন্য স্বভাবান্তরের সাধনা। ব্যক্তিগত সংস্কার ছাড়িয়ে যাবে তার জিজ্ঞাসা , তবেই বিশ্বগত জ্ঞানে প্রতিষ্ঠিতি হবে তার বিজ্ঞান। ব্যক্তিগত স্বার্থ ও জড়প্রথাগত অভ্যাস কাটিয়ে যাবে তার প্রয়াস , তবেই বিশ্বগত কর্মের দ্বারা সে হবে বিশ্বকর্মা। অহংকারকে, ভোগ শক্তিকে উত্তীর্ণ করবে তার প্রেম। তবেই বিশ্বগত আত্মীয়তায় মানুষ হবে মহাত্মা।