প্রবন্ধ: কুলুঙ্গী

কুলুঙ্গী
রেখা রায়
ভারি মেদুর, ভারি মিঠে শব্দ— কুলুঙ্গী। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের গ্রাম, আমাদের গাছ-গাছালি, আমাদের পাখ-পাখালি ভরা পল্লীবাংলার মেঠো কুটির, মন্দির মসজিদ আর শত শত বছরের আবহমান ঐতিহ্য।
গ্রামে আমাদের বাড়িটি ছিল তিনতলা, মাটির তিনতলা, তিনপাশ জুড়ে বড় বড় বারান্দা সমেত। নীচতলায় চারটি ঘর, দুতলাতেও তাই। তিনতলাতে বর্ষায় ধান শুকোত আর বাগান থেকে তোলা সম্বচ্ছরের আলু, পেঁয়াজ, কুমড়ো মেলা থাকত জালের ভেতর, যাতে হাওয়া খেলতে পারে আর পচন না ধরে। জালটা ইঁদুর কাঠবেড়ালির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য। নীচটা কেবল টালির(খোলার) চালের। দুতলার চারধার ঘিরে আর তিনতলার ওপরে খড়ের ছাউনি। বাড়ির সুমুখে মাটির নিকোনো উঠোন। পাড়ায় ঢোকার মুখে রাস্তার ধারে প্রাচীন ঠাকুর্দা-বট কালিগেড়িয়ার(পুকুরের) মাঝখান পর্যন্ত ডাল ছড়িয়ে অজস্র ঝুরি নামিয়ে দিয়েছে, স্নানের সময় আমাদের দোল খাওয়া আর ডাল থেকে লাফিয়ে জলে ঝাঁপ দেবার জন্য। গাছের গোড়ায় তেল সিঁদুরে মাখামাখি পাথুরে দেবতা দু চারজন। পাশে ত্রিশূল পোঁতা দেখে মালুম হয় একজন দেবাদিদেব মহাদেব। বাকীরা সম্ভবত তাঁর চ্যালাচামুণ্ডা। কিংবা, নারায়ণও হতে পারেন একজন। বৈশাখে মা কঞ্চি পুঁতে ঝারি দিত গাছের গোড়ায়। ঐ গাছেরই গায়ে এক মানুষের একটু কম উচ্চতায় একটা কোটর ছিল। ঐ কোটরটিই হল আমাদের মত ছোটদের খেলাঘরের কুলুঙ্গী। ছুটির দিনে গুটিখেলার গুটি, ব্যাঙ লাফানো আর এক্কাদোক্কা খেলার খোলামকুচি ওখানে গচ্ছিত রাখতাম ! এখন প্রায়ই মনে পড়ে…ঐ বট কি আছে এখনো ? এখনো কি ছোটরা আমাদের মত দোল খায় ঝুরিতে ? জলে ঝাঁপ দেয় ? নাকি সেখানেও শহুরে সভ্যতার দানোটা ঢুকে পড়েছে ? কে জানে ! “কুলুঙ্গী”আশৈশব আমার স্মৃতিমেদুরতায় ভরা একটি শব্দ।
কেন ? আরে বাবা হবে না ? বললামই তো খেলাধূলার যত মূল্যবান সম্পদ গচ্ছিত থাকত কুলুঙ্গীতে। কঞ্চি দিয়ে বানানো রাম রাবণের যুদ্ধযাত্রার তীর ধনুক, যাত্রা যাত্রা খেলার মুকুট, যা আমরা কত পরিশ্রমে তৈরি করতাম বাবলা আঠা দিয়ে, আর সারাবছর ধরে জোগাড় করা রাঙতা সাঁটিয়ে। কত পরিশ্রম আর নিষ্ঠা যে থাকত তৈরি করা শেখার মধ্যে আর রাঙতা জোগাড়ে !! খাতার পাতা ছিঁড়ে তেকোনা ভাঁজ করে ওপরে পায়রার পালক দিতাম আটকে। খালি দেশলাইয়ের বাক্স দিয়ে তৈরি টেলিফোন, মাটির পুতুল, পুতুলের কাপড়চোপড়, রান্নাবাটি খেলার নারকোল মালা…কত আর বলি !! এসবের কোনো তুলনাই হয় !! বারোয়ারী ঠাকুর বিসর্জনের সময় জলে নেমে মারামারি করে সংগ্রহ করতাম ডুবন্ত ঠাকুরের গা থেকে। তাই তো সব গুছিয়ে ছোট ছোট ভাই বোনদের হাতের নাগালের বাইরে রাখার ঐ একটিই জায়গা…কুলুঙ্গী।
স্কুল থেকে ফিরলাম। পেট ভর্তি খিদে। কাঁখে গুচ্ছের বই খাতা। তখন তো ব্যাগট্যাগ ছিল না। তাড়াতাড়ি ভেতর বাড়ির কুলুঙ্গীতে সব ছুঁড়ে দিয়ে হাত পা ধুয়ে এক সানকি পান্তাভাত আর আমানিতে কব্জি ডুবিয়ে দিলাম, মড়িপেঁয়াজ, কাঁচালঙ্কা , চুমুড় মাছ(চিংড়ি মাছ) ভাজা মাখার সঙ্গে। বই খাতা সন্ধ্যেবলা দেখা যাবেখন। এখন তো নিরাপদ। ঠাকুমার বাতের তেল এক শিশি, কাঁথা তৈরির সূঁচ সুতো, চটের বস্তা সেলাইর গুণ সূঁচ, পেটো দড়ি, গরু বাঁধবার পাঘা…সব বাড়ির খিড়কির অন্য এক কুলুঙ্গীতে। চাষবাসের সরঞ্জাম…কাতান, দা, হাঁসুয়া, খুরপি, ডাঁপ ছাড়া কোদাল, লাঙলের ফলা, স্ক্রুড্রাইভার, রেঞ্জ, প্লায়াস, ফলিডল, রকম রকম সার ইত্যাদি সদরের আর একটা কী দুটো বড় বড় কুলুঙ্গীতে। মা কাকির কাঁকই, গোলাপফুল আঁকা ছোট আয়না, ত্রিগুণ তেল, নারকোল তেল, গায়েমাখার তেলের বাটি, সিঁদুর, কুমকুম,আলতা, চুলের কাঁটা, চুলের গোড়া বাঁধার কালো দড়ি সব উত্তরদিকের খিড়কির আর এক কুলুঙ্গীতে। লক্ষ্মীর ঝাঁপি, ঠাকুরের আসন, ধানের গোলার পাশের দেওয়ালের ছোট কুলুঙ্গীতে। প্রদীপ, পিলসুজ, ধূপ ,ধুনো, সলতে আর একটাতে, পানের ডাবর, বিড়ি, হুঁকা আর এক কুলুঙ্গীতে। ঘরের ভিতরে একটু বড় সাইজের কুলুঙ্গীতে মুড়ি আর চালভাজার টিন, চিনির ডিবে, আচার আমসত্ব, ফুট কড়াই ভাজার ডিবে, গুড়ের কলসী, মুড়ির ছাতুর হাঁড়ি ইত্যাদি থাকত। রান্নাঘরের ছোট কুলুঙ্গীতে সর্ষেতেল, মশলা,আচারের জার থাকত। বড় কুলুঙ্গীতে আনাজের ঝুড়ি, থালাবাসন, বাড়তি হাঁড়িকুড়ি। তুলসী মঞ্চের গায়ের কুলুঙ্গীতে চেরাগ, সলতে, চেরাগ জ্বালাবার নিম তেল, করঞ্জার তেল, ছোট একটা ঘিয়ের শিশি।
গাঁয়ে তো আলমারি, ওয়ারড্রোব ছিল না, এক আধটা ট্রাঙ্ক থাকত বড়লোকের বাড়িতে। সেই জন্য কুলুঙ্গী গ্রামীন জীবনে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। একে ছাড়া জীবন অচল।
ওহো, কুলুঙ্গীটা আসলে কী, সেটাই তো বলিই নি এখনো। তার গুণগান গেয়েই চলেছি ! চলো অভিধানের পাতা ওল্টাই……
বঙ্গীয় শব্দকোষে হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন…কুলুঙ্গি বা কুলুঙ্গী হল কুড্যে বা দেওয়ালে কৃত ত্রিভুজাকৃতি গর্ত। মহাভারতে আছে.…”লোহার দেওয়ালময়, … চারিভিতে কাটিল কুলুঙ্গী।”
সুবল মিত্র বলছেন…দ্রব্যাদি রাখিবার নিমিত্ত ভিত্তি গাত্রের খোপ।
সংসদ সমার্থক শব্দকোষে পাচ্ছি…কুলুঙ্গীর সমার্থক শব্দ আলমারি, দেওয়াল আলমারি, খোপ, কোলাঙ্গ, কুলুঙ্গি।
শব্দ সন্ধানে পি আচার্য বলছেন…দেওয়ালের গায়ে দ্রব্যাদি রাখার গর্ত, তাক বা কুলুঙ্গি।
সব দেখে নিশ্চিন্ত হওয়া গেল যে দেওয়ালের গায়ে তৈরি তাকই হল কুলুঙ্গী। সে ছোট বড় সব আকার আকৃতির হতে পারে গৃহস্থের চাহিদা অনুযায়ী।
বোধ হয় একটু ভুল হল। কেননা হিন্দু মুসলমান নির্বিশেষে মন্দির মসজিদের বাইরে এবং ভেতরে কুলুঙ্গী রাখা হয় আজও। মন্দিরের কুলুঙ্গীগুলো তো তেলে, সিঁদুরে আর কালিতে বীভৎস রূপ পায়।
যদিও হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন…কুলুঙ্গীর ত্রিভুজিকৃতির কথা, চতুষ্কোন, অর্ধ চন্দ্রাকৃতি, গর্তের মত গোল কুলুঙ্গী আকচার চোখে পড়ে।
এবার প্রশ্ন…আচ্ছা, কবে থেকে কুলুঙ্গীর দরকার পড়ল বলত আমাদের ? আমার তো মনে হয় যেদিন থেকে মানুষ এল পৃথিবীতে, সেদিন থেকেই তার কুলুঙ্গীর প্রয়োজন হল। বৃক্ষবাসী মানুষের কুলুঙ্গী হল গাছের কোটর। নইলে জোগাড় করা ফলপাকড় রাখবে কোথায় ? গুহাবাসী মানুষ শিকার করা পশুপাখির মাংস, পাথরের অস্ত্র নিশ্চিতভাবেই রাখত গুহার অন্দরে পাথরের কুলুঙ্গীতে। সেজন্যই তো প্রাচীন গুহার অন্দরে আজও কত খোপ দেখা যায়, যা কিনা আদিম মানুষের কুলুঙ্গী।
তারপর আদম যখন বনের আপেলটিতে দাঁত বসাল আনন্দে… ঘর বাঁধল, তখন তো গুহার গর্তের আদলে খোঁদল রাখতে শুরু করল ঘর বাঁধার সময় থেকেই , যাতে পরে কোনো অসুবিধে না হয়। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে কুলুঙ্গী সবার কাছেই অত্যাবশ্যক।
মহাভারতে কুলুঙ্গীর উল্লেখ আছে। চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের কাছে ঐতিহাসিক প্রাচীন হাম্মাদিয়া মসজিদ ১৪৭৪–৮১ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যে তৈরি হয়েছে সুলতান শামসুদ্দিন ইউসুফ শাহের আমলে। ঐ মসজিদের মধ্যবর্তী এবং ডানদিকের খিলানে কুলুঙ্গী করা আছে। উত্তর দক্ষিণেও একটি করে কুলুঙ্গী আছে। ডানদিকের খিলানের কুলুঙ্গীর মধ্যে শৃঙ্খল ঘন্টা খোদাই করা আছে।
মনসামঙ্গলখ্যাত দ্বিজ বংশী দাসের কন্যা চন্দ্রাবতী ষোড়শ শতকের শেষে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মাইজকাপন ইউনিয়নের ফুলেশ্বরী নদীতীরে অবস্থিত যে অষ্টকোনাকৃতি শিবমন্দিরে বসে রামায়ন লেখা শুরু করেন, সে মন্দিরের স্থাপত্যশৈলীর যে বর্ণনা দিয়েছেন তিনি, তাতে কুলুঙ্গীর বেশ আকর্ষণীয় বর্ণনা পাওয়া যায়। নীচের ধাপের চারদিকে অর্ধবৃত্তাকার খিলানের সাহায্যে নির্মিত প্রশস্ত কুলুঙ্গী এবং ভিতরে সাতটি জানালা সদৃশ কুলুঙ্গী (প্রস্থে ৫২ সেন্টিমিটার এবং দৈর্ঘে ৯৯ সেন্টিমিটার) আছে। দ্বিতীয় ধাপে প্রশস্ত কুলুঙ্গীর ভিতরে পোড়ামাটির অসংখ্য চিত্রফলকের অলংকরণ ছিল একদা। প্রসঙ্গত বলি…চন্দ্রাবতী বাংলা ভাষার প্রথম মহিলা কবি।
বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুরে ইট চুন সুরকি বা ল্যাটেরাইট পাথরে তৈরি মন্দিরের কুলুঙ্গীতে দেওয়ালের দুপাশে এবং কার্নিশের নীচে মূর্তি ভাস্কর্য দেখা যায়।
পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম, বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়খন্ড এলাকায় ১লা ভাদ্রে কুমারী মেয়েরা বাড়ির কুলুঙ্গী পরিষ্কার করে ভাদুঠাকুর প্রতিষ্ঠা করেন।
কৃষিভিত্তিক উৎসব টুসুদেবীর পাত্রটিও স্থাপন করা হয় কুলুঙ্গীতেই।
১৭৭৫ খ্রীষ্টাব্দে হুগলী নদীর তীরে সুখারিয়া গ্রামের প্রান্তে সবচে প্রাচীন যে সিদ্ধেশ্বরী কালিমন্দির আছে তার প্রবেশদ্বারের দুদিকের খিলানের মধ্যে কুলুঙ্গী ছিল।
পাঞ্জাবিদের গুরদোয়ারাতেও ঐটি দেখা যায়। মিশরে, ভিয়েতনামেও কুলুঙ্গী দেখেছি প্রাচীন স্থাপত্যে।
এত কুলুঙ্গীর হদিশ দিলাম এই বোঝাতে যে
… আমাদের জীবনে ধর্ম বর্ণ নিয়ে যে এত হানাহানি , এত মারামারি , আমরা তো আদতে গোড়াতে একই আছি… না কি ?
বলছি কুলুঙ্গীর ব্যবহারের কথা…একটি বাড়ির গুছোনো পরিবারে এক এক জায়গার কুলুঙ্গীর ব্যবহার এক এক রকম। গাঁয়ে তো আলমারিটারি ছিল না। কুলুঙ্গীই ছিল জিনিসপত্র রাখার একমাত্র এবং অদ্বিতীয় জায়গা।
কুলুঙ্গী তৈরির বিষয়ে একটুখানি জ্ঞান আছে আমার। এই সুযোগে তার সদ্ব্যবহার করি…
গাঁয়ে একসময় সকলেরই মাটির বাড়ি ছিল। মন্দিরগুলির বেশির ভাগ ছিল পাকা। মাটির বাড়ি তৈরির জন্য উঠোনের একধারে আল দিয়ে এঁটেল মাটি বেছে ভিজিয়ে রাখা হত। রোদে শুকিয়ে উঠত বলে মাঝে মাঝেই পরিমান মত জল দিতে হত। আট দশদিন পরে তার পাশে তৈরি করা ফুট দুয়েক গভীর গর্তে সেই মাটি ফেলে মুনিষ পা দিয়ে বেশ খানিকক্ষণ মাখত ময়দা মাখার মত। তারপর ওখান থেকে গোল গোল তাল তাল মাটি উঠত অন্য মুনিষের হাতে। যে মুনিষ কাঁথ তৈরি করছে সে দড়ি দিয়ে মার্কিং করা জায়গায় আছড়ে ফেলত ঐ তাল। তারপর দেওয়ালের গা পরিষ্কার করে ও সমান করে ফেলে রাখত বেশ ক-দিন।আধশুকনো হলে পিটনী দিয়ে পিটিয়ে পিটিয়ে ভালো করে মাটি বসানো হলে পরে দ্বিতীয় দফায় মাটির তাল পড়ত একই পদ্ধতিতে। দেওয়ালগুলো কম করে দু ফুট চওড়া হত আর গাঁথনি একসঙ্গে দেড় দু ফুটের বেশি হত না। ঐ সময়ই কুলুঙ্গীর জন্য স্ট্রাকচার করে রাখতে হত। মাটির ঘরে বাঁশ দিয়ে আর পাকা বাড়িতে লোহার রড দিয়ে। গ্রামাঞ্চলে কুলুঙ্গীর ধার ঘিরে কী সুন্দর লতাপাতা আল্পনা দিতাম আমরা। কখনো মাটির স্থায়ী আল্পনা থাকত। পুজোর সময় গোবর আর মাটি দিয়ে নিকিয়ে পিটুলিগোলা আর তেল দিয়ে গোলা সিঁদুর বুলিয়ে অলংকরণ করতাম।
কুলুঙ্গীগুলো ছোটদের নাগালের বাইরে থাকায় আমাদের হাত পৌঁছত না। কতবার জিনিস চুরি করতে গিয়ে ফেলেফুলে দেওয়াল নোংরা করে মায়ের হাতের পিটুনি জুটেছে কী বলব !! বজবজে শ্বশুরবাড়িতে আমাদের ঘরের প্রতিটি জানলা আর দরজার ওপর কুলুঙ্গী ছিল। পুতুলটুতুল দিয়ে সাজিয়ে রাখতাম। কোলকাতার বাড়িতেও জানলার ওপরে কুলুঙ্গীতে খেলনা রাখতাম।
কবি সোমনাথ রায় জানালেন নবদ্বীপে প্রায় সব পুরোনো বাড়িতেই কুলুঙ্গী আছে। কবির বাড়িও নবদ্বীপে।
তবে হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় কথিত তেকোনা কুলুঙ্গী হুবহু রয়েছে আজও সাহিত্য-সংস্কৃতি ব্যক্তিত্ব বিমলদার (বিমল পণ্ডিত) বাড়ির বারান্দায়। দোরে পা দিলেই চোখ টানে। প্রথম প্রথম প্রদীপ জ্বালিয়ে পিলসুজের ওপর রেখে, পিলসুজটি সযত্নে ওখানে বসাতেন জ্যোৎস্নাদি। কালের নিয়মে অন্য কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে এখন।
আজকের নাগরিক সভ্যতায় কুলুঙ্গী তার ঐতিহ্য হারানোর মুখে। নব নব আসবাবপত্রের পাশে বেমানান মনে করে আজকাল পাকা বাড়িতে আক্ষরিক অর্থে যে কুলুঙ্গী, তা আর দেখা যায় না। দেওয়াল আলমারী , শোকেস আর কাববোর্ডের পাশে নিতান্ত দরিদ্র কুলুঙ্গী হা-ঘরের মত সত্যিই বড় বেমানান।
হায় কুলুঙ্গী, তোমার জাত গিয়াছে !!