আবু সাঈদ মোল্লার কবিতা

আবু সাঈদ মোল্লার কবিতা

বৃক্ষচাষী

আজ মন ভাঙার
যে বিষবৃক্ষটি পুতে গ্যালো মসৃন উঠোনে
সে উঠোনটি আমার,
করোপুটে স্বচ্ছ জল ধরে
আমি তার পরিচর্যা করে যাবো ।
আকাঙ্খার প্রগাঢ় কঙ্কালে
ধুপের বিন্যাস আর হাভাতা চুম্বনে
এ বৃক্ষটিই হবে আদিবৃক্ষ ।
বিস্তৃত ডালপালায়
ফুল ও ফলে ভরে যাবে একদিন,
যে বৃক্ষ যত বেশি ফল দ্যায়
ততো বেশি নতমূখী হয়, বিনয়ী হয় ।

মেঘপুরুষ
(মাহমুদা রহমান-কে)

তুমি বৃষ্টি নারী হলে
আজ আমি মেঘ পুরুষ,
এতকাল জমে থাকা গুমোট দুঃখ গুলো
পুঞ্জিভূত হতে হতে আজ আমি সাহসী মেঘ।
সূর্যের সাথে আজন্ম বৈরীতা আমার,
অবারিত শষ্য ক্ষেত,তপ্ত মরু প্রান্তরে
জল বর্ষণের স্বভাব সূলভ ধারায়
আমি উড়ে চলি তাবৎ পৃথিবীর এখানে সেখানে ।
তোমাকে ভেজাতে গিয়ে
অকস্মাৎ মুছে দিয়েছি বরের সাথে সমান্তরাল হেঁটে যাওয়া, শ্যামাদির সিঁথির সিঁদুর,
লিবিয়ায় আটকে পড়া যুবকের
বিরহী স্ত্রীর চোখের জল ।
তোমাকে ভেজাতে গিয়েই ডুবিয়েছি
পথ ঘাট, ক্ষেতের আল, পাকা ফসল ।
ভিজিয়েছি ছাদের কার্ণিশে বসা
একলা পাখিটাকে।
তোমাকে ভেজাতে গিয়েই ঝড়ের সাথে
যোগসাজশে উড়িয়েছি কাপালিক বৃদ্ধটার
গৈরীক বসন, চেনা মজুরের একমাত্র কুড়েঘর।
আজ এই নাগরিক সন্ধ্যায়
ঘরে ফেরার সংকটময় মুহূর্তে,
সাহসী মেঘ হয়ে তোমায় ভেজালাম ।
তুমি ভিজলে, ভিজলো মন, তোমার শরীর
শাড়ি,কানের দুল,কপালের রক্তচন্দন।
ভেজা শরীরে অচেনা এক উন্মাদনায়
তুমি ইথারে ভাসিয়ে দিলে-আজ আমি বৃষ্টি নারী।
তুমি বৃষ্টি নারী হলে, আমি মেঘপুরুষ ।