সামসুন্নাহার ফারুকের কবিতা

সামসুন্নাহার ফারুকের কবিতা

মাতলামো

নিয়নের বাতিগুলো ভীষন টলছে
আজ বোধ হয় একটু বেশীই
গিলে ফেলেছ
রাতকে আরও কিছুক্ষণ কাছে থেকে যাবার
আকুতি জানাচ্ছে পাগলা প্রহর

কার্তিকের জোছনায় ফুটপাথে আলিঙ্গনাবদ্ধ
দুজন মানব মানবী
যেন যুগল চন্দ্রবোড়া

মেয়েটির বাঁচাও বাঁচাও চীৎকারে
অক্সিজেন স্বল্পতায় কাঁপছে বাতাস
আর মাইগ্রেনের ব্যাথায়
প্রচন্ড কাতারাচ্ছে শুকতারাটা

রাতজাগা পাখিগুলো ডানার ঝাপটে
বিড় বিড় বলে যাচ্ছে একটানা
এমন অনাচার আর সহ্য হয় না

হতবুদ্ধি আমি সময়ের চোরাবালিতে ডুবে যাচ্ছি ।

ঠিকানা কোথায়

গোধূলীর অস্তাভায় লালিমের লাল
সূর্যাস্তের সংকেতে ডোবে চারিধার
ধাপে ধাপে নেমে আসে ভয়াল আঁধার
বন্ধ হয়ে যায় খেয়া মাঝিটা বেহাল
আকিঞ্চন আড়ম্বর সব পিছে ফেলে
আঁচলের গিটে বেঁধে কিছু দীর্ঘশ্বাস
অসমাপ্ত পান্ডুলিপি তুরুপের তাস
আলগোছে যেতে হবে অগোছালো চলে
বেঁচে থাকা জীবনের অন্তহীন কাজ
ডুকরে ডুকরে বলে, কোথা যাও তুমি
হলুদ পাতার সাথে কোন স্বর্গভূমি
পরিধানে কেন আজ নির্লিপ্তির সাজ
উত্তর মেলে না কোন, ট্রেন ছুটে যায়
কেউ তো জানে না তার ঠিকানা কোথায় ।

থাকতে আসেনি সেও

কৈশোরকে হারিয়ে সেদিন
অনেক কেঁদেছিলাম
বুক ভেজানো কান্নার তোড়ে
ভেসে গিয়েছিল সই পুতুল
বৈচীর মালা, রান্নাবাটির সরঞ্জাম
সদ্য ফোটা লাল গোলাপটি
মাথা তুলে কৌতুকে বলেছিল-
অমন করে পিছনে তাকাতে নেই
সেদিন থেকেই ম্যাজিকের মতন
বদলে গেল সব কিছু
সময় উড়ে চলল দারুণ গতিতে
যেন তার দশখানা পাখনা গজিয়েছে
ইমো ভাইবার মেসেঞ্জারে ননষ্টপ
বকবকানী থামতেই চায় না
কৃষ্ণচূড়া দুপুর, বিমুগ্ধ ফাল্গুন,
ভ্রমরের গুনগুনানী
হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ল
হৃদয়ের টপোগ্রাফিতে
আবেগের পরমাণু কণারা বইয়ে দিল
ঝড়ুয়া বাতাস
পেতে চাইল লাল গোলাপ শুভেচ্ছা
তোমার স্পর্শের অগ্নিময় মাদকতা
তড়িৎ আলিঙ্গনে শুনিয়ে গেল
অস্থীর যৌবনের মাতাল পদাবলী
বুকের বোতাম খুলে বললে
ভীষণ ভালোলাগার এই মিষ্টি ক্ষণটাকে
শুধু শুধুই হারিয়ে যেতে দিও না প্লিজ
মোহময়তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রাখ
ভালোবাসার এই আলতামিরায়
সেও কিন্তু থাকতে আসেনি
দেখনা ভাজা মাছ চুরি করে
খাওয়া বিড়ালের মতন
কেমন পালিয়ে যাচ্ছে ।