অণুগল্প : চার নারী চরিত্র

অণুগল্প : চার নারী চরিত্র

চার নারী চরিত্র
অঞ্জলি দেনন্দী, মম

শীতের পুজোতে এক বিরাট ধনীর পত্নী একটি খুব দামী পশমের শাল নিজের হাতে এক শ্বেত পাথরের দেবী মূর্তিকে পড়িয়ে দিলেন। এমন সময় তাঁর পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা এক গরীব মহিলা- কিছুটা পাগলী, পরণে ছিন্ন, সূতির একটি বস্ত্র, শীতে একদম জড়োসড়ো, সে দৌড়ে গিয়ে ঐ শালটি খুলে নিয়ে নিজের নোংড়া গাত্রে জড়িয়ে নিল, আর আনন্দে হাততালি দিতে দিতে দিতে জোরে জোরে জোরে হাসতে লাগল ……. তখন ধনী মহিলা তো ক্রোধে একেবারে আগ্নেয়গিরির মত কথা বললেন। মন্দিরের রক্ষকগণ ছুটে এসে ওই শালটি টেনে খুলে নিল। আর ওকে ঘাড় ধরে বাইরে বের করে দিল। ও দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে, দূর থেকে দেবী মূর্তিকে দেখতে লাগল……

এমন সময় এক সাধুনী এলেন। মন্দিরে ঢুকলেন। ওই ধনী মহিলা তখন আর একটি অতি মূল্যবান পশমের শাল ওই সন্ন্যাসীনীর অঙ্গে জড়িয়ে দিলেন। উনি হাসিমুখে আশিস দিলেন, ” তোমার মন ধনী হোক! ” এরপর উনি বাইরে এসে নিজের গা থেকে ওই দামী শালটি খুলে আপন হস্তে ওই দরিদ্রা রমনীটির গায়ে পড়িয়ে দিলেন। তখন আবার সে আনন্দে হাততালি দিতে দিতে দিতে খুব জোরে জোরে জোরে হাসতে লাগল। আর ওই ধনী মহিলা এসে ওই গরীব মহিলাকে পাশের দোকান থেকে প্রচুর খাদ্য, বস্ত্র কিনে পুজোর মত করে উপহার দিলেন। এরপর থেকে ওই ধনী রমনী প্রত্যহ ওই মন্দিরে এসে ওই ভিখারীনী মহিলাকে পুজো দিয়ে যান।

চার নারী জগতে চার রকমের। শ্বেত প্রস্থরা দেবী মূর্তিরূপে। ধনীপত্নীরূপে। ভিখারিনিরূপে। সাধুনীরূপে।