অণুগল্প : আত্ম সম্মান

সুদীপ ঘোষাল
ট্রেনে যাচ্ছি বর্ধমান । একজন লটারীর টিকিট বিক্রেতার সঙ্গে পরিচয় হলো । কিছুক্ষণ পরে পাশে বসা আমার বন্ধুকে ছেলেটি বললো, দাদা কুড়ি টাকার টিকিট কিনলে আমার খুব উপকার হয় । আমার বন্ধু বললেন, আমি লটারির টিকিট কিনি না । শেষে বন্ধুটি একশ টাকা বের করে বললো, ভাই এই একশ টাকা রাখো । আমি স্বেচ্ছায় তোমাকে দিলাম । ছেলেটি টাকা নিলো। ট্রেন চলতে শুরু করলো ।দুটি স্টেশন পরে ছেলেটি নেমে জানালার কাছে এসে
একশ টাকার নোটটি এগিয়ে দিয়ে বন্ধুকে বললো, দাদা টাকাটা রাখুন ।
তার আত্মসম্মানবোধ অনুভব করে আমরা অবাক হলাম।
রোদবেলা
ভট্টাচার্য পাড়ার দুর্গাপুজো দেখলেই মনে পড়ে বাল্যপ্রেম,অমিতের।কাঁসর ঘন্টা বাজত আরতির সময়।অমিত ভালো কাঁসর বাজাত।আর তাছাড়া সীমার মুখ দেখবার লোভে ছুটে চলে যেত পুজোমন্ডপে।অমিত আরতির ফাঁকে দেখে নিত সীমার চোখ।তার চোখের নজর অমিতের দিকেই থাকত। অমিত সারাদিন তাকিয়ে থাকত ওদের বাড়ির দিকে।যদি একবারও দেখা যায় সীমার মুখ। অসীম খিদে চোখে কেটে গেছে তার রোদবেলা।
আজও বাহান্ন বসন্তের পরে অমিত ভুলতে পারেনি তার অতৃপ্ত প্রথম রোদবেলার কথা…
তৃণভোজী
বাঘ তো মাংস খায়, জোর করে প্রাণীকে মেরে।সে ঘাসের মর্ম বোঝে না। বাগান চেনে না। কোন ফুলের কেমন সুগন্ধ তাও জানে না।
মিতা যত্ন করে তার বাগান সাজায়। কতরকম ফুলে ভরে যায় উপোসি বাগান। হিংস্র,বলবান বাঘ পাতা খেতে জানে না।
তাকিয়ে থাকে লালারসে সিক্ত হয়ে। কেড়ে খাওয়া তার ধর্ম।হিংসা তার কর্ম।
তারপর একদিন মিতার বাগানে ঢোকে বিজ্ঞ তৃণভোজী রসিকনাগর। সাজানো বাগান সযত্নে চিবোয় মনের সুখে।
রসিক জয়ি হয় যুগে যুগে…