কেয়া ওয়াহিদের কবিতা

প্রজাপতি মন
পার্থিব রোজ নামচার শাশ্বত লিপি
পশ্চিমাকাশে যার পরিসমাপ্তি
ফিরে যেতে যেতে যেন ফিরে আসে—
লাল নীল কমলা ধূসর আভায়
কৈশোর স্মৃতির কথা বারে বারে ভাবায়।
তির্যক আলোয় তটিনীর জেদি মন
নীলিমায় ঘুরছে ফেরারি ক্ষণ
বোহেমিয়ান মেঘেরা অস্থির চঞ্চল
জড়িয়ে ধরে গোধূলির মায়াবী আঁচল।
সবুজ চাদরে শুয়ে ভাবে কীট পতঙ্গ
আঁধারে খোঁজে আধার জ্যোতি তরঙ্গ
দিগন্তহীন বিরহের ধ্রুপদী সুর
বেদনার উপকূলে জ্বলন্ত নুর।
তুমি ছুঁয়ে দিলে প্রজাপতি মন
স্বপ্ন রাজ্যে করে মৌন বিচরণ
নক্ষত্র তারার চোখ করে ঝিলমিল—
সান্ধ্যকালীন প্রতীক্ষা শুধু
বিলীন হোক নীল।
ঘুঙুর সন্তরণ
শতবর্ষী রাস্তাটা নিয়মিত হেঁটে যায়
গোধূলির জানালার পাশ দিয়ে,
যেতে যেতে যেতে যেতে একদিন সে দেখে
এক কাপ জলের তৃষ্ণায় সমুদ্রের চোখে
অরুণিম অথৈ জল—
উড়ন্ত অনিলের ইশারায়—
ঝরা পাতাদের অন্তিম ইচ্ছা জাগে
শেষবারের মতো কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখবে বলে,
পাহাড়ের গায়ে বিছিয়ে ভেঁজা স্মৃতির পাতাগুলো শুকিয়ে নিবে ফসিল হওয়ার আগে—
শুকাতে না শুকাতেই স্মৃতিগুলো ভিজে যায়
শিশিরের চোখের জলে—
ঝর্ণার পায়ের ঘুঙুরের বিষণ্ণতা লুকোয়
নিবিড় সন্তরণে—
প্রবালের বুকে নীল হ্রদের হাহাকার
স্রোতস্বিনীর শিঞ্জনে—
অসুখ
বলছিলে অসুখটা ভয়াবহ এবং দীর্ঘমেয়াদি,
যে অসুখটার নাম মনে হতেই
সেটা ক্রনিক হয়ে যায়।
আমি বললাম,জানিতো!
একবারে সে কাউকে মারে না; জীবন্মৃত রাখে।
এ অসুখে আমি একবার কোমা’য় গিয়েছিলাম; অনেকে যেভাবে যায়….
কাচঘরের ভেতর থেকে দেখেছি অনেক দর্শণার্থী; দূর থেকে ছুঁয়ে গেছে মায়ায়—
প্রাচীণ নীরবতা ভেঙে আশীর্বাদের শব্দ আমার কানে পৌঁছে যেতো।
অনড় অচল নিষ্প্রাণ দেয়াল সাক্ষী—
জীবন ও আত্মার নিঃশব্দ যুদ্ধের কথকথা।
সমুদ্র যখন ব্যস্ত উন্মাতাল তরঙ্গস্নানে-
ছিপ নৌকায় দোদুল্যমান জীবন,
ভালোবাসাহীনতায় সে তিলে তিলে মরে
বেঁচে থাকাটা কখনো কখনো অর্থহীন, নিরুপায়।
‘ভালোবাসা’
স্যানাটোরিয়াম হও নতুবা সায়ানাইড হও।