অণুগল্প : ফেসপাউডার

অণুগল্প : ফেসপাউডার

অণুগল্প : ফেসপাউডার
আতিদ তূর্য

-কই তুমি?
-আমি রাস্তায়, আসতেছি।
-দ্রুত আসো, বাচ্চারা ঘুমাই পড়ছে।

ভাই, ওই জিনিস আছে?
-হু, আছে।
-১ টা দেন।
-এই লন। কাহজে প্যাঁচায়া দিমু না এমনেই লইবেন?
-এমনেই দেন।

দ্রুতগতিতে শীতের রাতে জিনিসটি পকেটে নিয়ে বাড়ির পথ ধরেছে ৮ মাস পর বাড়ি ফেরা রফিক। বাড়ির কাছাকাছি এসে হঠাৎ পকেটে হাত চলে গেলে রফিক চোখের সামনে এনে দেখে- প্যাকেটটা আগে থেকেই কিছুটা ছেঁড়া। ক্লান্তি হোক বা উত্তেজনা যাই হোক না কেনো এতোক্ষণ এটি খেয়াল করতে পারেনি সে। মুহূর্তেই রাগ মাথায় চড়ে যায় রফিকের এবং সাথে সাথে সিদ্ধান্ত নেয় দোকানে এখনই ফিরে যেয়ে এর একটা বিহিত সে আজ করেই ছাড়বে। যেই ভাবা সেই কাজ।
-এই ভন্ডামীর ব্যবসা কতোদিন মিয়া?
-কী হইছে ভাই?
-ইউজ করা মাল ঢুকায়ে দিছেন, এই দ্যাখেন প্যাকেট ছেঁড়া।
-না, প্যাকেটতো ঠিকই ছিলো। আপনি ছিঁড়ছেন নিশ্চিত। না হলি রাস্তার মধ্যিই কোনো কাজ কইরে ফেলিছেন। হিহিহি।
-কী বললি শুয়োরের বাচ্চা?
কথার রেশ কাটতে না কাটতে দোকানের মালপত্রের মধ্যে ঢুকে মুহূর্তেই কিল-চড় শুরু করে দেয় রফিক। দোকানদার হতচকিত হয়ে কষে এক লাথি বসায় রফিকের অন্ডকোষে। রফিক হঠাৎ ই ‘মা-গো’ বলে এক চিৎকার দিয়ে মাটিতে শুয়ে পড়ে। যন্ত্রণায় চাপা গোঙানি বের হয় তার মুখ থেকে। এদিকে রফিকের অবস্থা খারাপ দেখে দোকানি বিপদের আশঙ্কায় খুব দ্রুত দোকানের শাটার বন্ধ করে রাস্তার দিকে দৌড় দেয়।
ওদিকে রফিকের বৌ এর মন খারাপ। স্বামী এতো দিন পরে ঘরে আসছে অথচ সেবার ঈদে কেনা দামি ফেস পাউডারটা কিছুতেই খুঁজে পাচ্ছে না সে। মেছতা আর কালশিটে দাগকে আড়াল করতে হবে দীর্ঘদিন পর বাড়িতে ফেরা পুরুষটার জন্য। গভীর রাতে চোখে চাপা উত্তেজনা নিয়ে ফেস পাউডারটা হন্তদন্ত হয়ে খুঁজে চলেছে রফিকের বৌ।