স্বপ্না আচাৰ্জীর কবিতা

স্বপ্না আচাৰ্জীর কবিতা

প্রাণের সঞ্চার

কোটি-কোটি শব্দ আর লক্ষ লক্ষ বাক্য
নিয়ে আমি জেরবার ।
কখনও যদি বা শব্দরা নীরব থাকে ,
কখনও আবার বিদ্রোহ ক’রে ওঠে ।
মনে হয় জ্বলন্ত আগুন হ’য়ে-
সব পুড়িয়ে ছাই ক’রে দেবে ,
নয়তো প্লাবনে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে সবকিছু ।

সেইসব শব্দদের আমি
পূবের বারান্দায় রাখতে চাই ,
দিতে চাই সূর্যের নরম উষ্ণতা ,
দিতে চাই পাখির কল-কাকলী ,
দিতে চাই সবুজ গাছ-গাছালি ।
বোঝাতে চাই — ধ্বংস নয় ,
ভাসানো বা পোড়ানো নয় ,
শুধু প্রাণের সঞ্চার করো ।

বিষন্ন সুন্দর

সারাদিন , সারারাত আমি স্বপ্ন দেখি—
স্বপ্ন দেখি এক উদার আকাশের ,
স্বপ্ন দেখি এক মায়াময় পৃথিবীর ।

কিন্তু কুয়াশা ঢাকা আবছা আলোয় চোখে পড়ে
কতগুলো ক্লান্তমুখ , কতগুলো শ্রান্ত দেহ ,
যাপনের কিছু বিষাদ-ধ্বনি কানে বাজে ।

চেতনা নীল হ’তে থাকে স্বপ্নের ভেতর ,
সুন্দরকে আমার বিষন্ন মনে হয় ।

শুধু ভাঙনের গান কেন ?
রাত এত দীর্ঘতর কেন ?
এত রুক্ষ কেন সময় ?
ফাগুনের তুমুল মঞ্জরীতে—
ভরুক না এই দুঃসময় ।

আলো আনতে চাই

রুটিন-মাফিক রোজকার জীবন চলে ,
সে রুটিনে ঘুটঘুটে অন্ধকারও জায়গা ক’রে নেয়
মাঝে মাঝে দমকা হাওয়া এসে
ওলট-পালট ক’রে দেয় সবকিছু ,
কিন্তু কিছুতেই অন্ধকার ঘোচে না ,
একশ আলোর দাপাদাপির মাঝেও
সে অন্ধকার নাচানাচি করে ।

আমি আপাদ-মস্তক চেষ্টা করি—
অন্ধকার মুছে আলো আনার ।

আমি আলো আনতে চাই—
অভিজ্ঞানের আলো , শব্দলিপির আলো ,
দীর্ঘজীবী কিছু কথার আলো , আর
আনতে চাই মানবিকতা-মাখা একটা ভোর ।