অণুগল্পঃ হাসি

অণুগল্পঃ হাসি

হাসি

আনোয়ারা আজাদ

বেশ কিছুদিন ভেবেছলাম অতিমারিতে পুরো পৃথিবীর হিসেব নিকেষ উল্টে গিয়েছে বিধায় এরকমটা হচ্ছে। পাছা উল্টে বালিশ আঁকড়ে ধরে বিছানায় শুয়ে থাকা নয়তো টুকুস টুকুস সেলোফোন টিপে দেশ উদ্ধার! কি যে একটা অবস্থা! মাঝে মাঝে টিভির রিমোট নিয়ে চ্যানেল ঘুরে বেড়িয়ে লম্বা দীর্ঘশ্বাস! আহা হা, এতো এতো মানুষের মৃত্যু সহ্য করা যায়? কিন্তু ব্যাপার সরল রেখার মতো সরল নয় বাবু বুঝি লুডুর শেষ মাথায় যেখানে সাপের মুখ হা হয়ে আছে!
অতিমারির দুঃসময়ে তাঁর ব্যবসাপাতির অবস্থা নিয়ে, সংসারের বাজার সদাই- রান্না বান্না নিয়ে যখন হ্যাবাজ্যাবা অবস্থা আমার হঠাৎই নজরে এলো বাগানের ফুল, বারান্দায় পাখির কিচকিচ, শুকোতে দেয়া কাপড় কোথাও নাচন নেই কেনরে বাবা! সুমন্দ বাতাসও গায়েব। থাকার মধ্যে শুধুই রোদের মাতামাতি আর রাতের রুটিন শীৎকার! ওহ্, সে কথা নাইবা বলি। আরে নাহ্, বলেই ফেলি।
পুরোনো হয়ে গেলাম? কতদিন ঘুম ভাঙলেই জড়িয়ে ধরোনা, আলতো একটা চুমু দিতে, এখন সেটাও দাওনা। আগে রোজ সকালে দিতে। এখন শুধুই…
অভিযোগ শেষ হতেই ঘাড় উল্টে দেখে ভুরু কুঁচকে বললেন- মানুষ মরছে, হুশ করো।
ঠোঁটে এতোটাই বিরক্তি যেন সংকটময় এই পৃথিবী তাঁর মাথায়!
মাঝরাতে আচমকা ঘুম ভেঙে গেলে চুপি চুপি পাশের ঘরে গিয়ে দেখি, অ্যান্ড্রয়েড ফোন হাতে খিক খিক হাসছেন তিনি! ফোনের আলোয় ঠোঁটের চারপাশে তাঁর হাসি ¯স্বর্গীয়ই মনে হলো।