ফকির ইলিয়াসের কবিতা

ফকির ইলিয়াসের কবিতা

বৃষ্টি কিংবা বরফের ঘর

বৃষ্টি দেখতে দেখতে চোখ অন্ধ হয়ে যায়!সূর্য;
দেখতে দেখতে কমে যায় চোখের জ্যোতি।তবে কী
মানুষের জন্য বৃষ্টিময় রাত কিংবা সূর্যের আলো
কোনোদিনই বরাদ্দ ছিল না!

কেউ জানে না এসব প্রশ্নের উত্তর। তবু বরফ হাতে
নিয়ে কেউ জলের উৎস খুঁজে।কাউকে কাছে ডেকে-
শোনাতে চায় জলকথার আদি গল্প।নীলবাতিগুলোর
সরবতা নিয়ে লিখে প্রেমের পঞ্চম গল্প।

গল্প সত্য নয়, অথবা গল্পেই থাকে ইচ্ছের সর্বশেষ
পরাগ। এমন কথা শোনাতে শোনাতে পুষ্পগুলো
বাগানেই মিলিয়ে যায় দুপুরে।
ভোর দেখা কখনও তাদের ভাগ্যে জুটে না।

উৎসবের অদূরেই উৎসগুলো

কড়া নিয়মের ভেতরেই বেড়ে উঠে ঢেউ,ঢেউয়ের
সন্তান-সন্ততি।সদগতি পাওয়া ভোর এসেও যুক্ত হয়
তাদের সাথে।এখানে অরণ্য ছিল; মনে করিয়ে দেয়
কেউ। কেউ দূরে দাঁড়িয়ে দেখে ঝরণার উৎসমূল।

বিগত ভাঙনের দিকে তাকিয়ে আকাশ তার রূপ
বদল করতে চায়। কা’কে দেবে ছায়া আর!কার
পাশে দাঁড়িয়ে বলবে সূর্য, এসো আমরা আনন্দে
আজকের দুপুর ভাগ করে নিতে নিতে প্রেম করি।

মন খারাপ করা ঝড়গুলো গ্রাম পেরিয়ে গেলে,যে
ধ্বংসস্তূপ পড়ে থাকে; একদিন তাকে নিয়েও উৎসবে
মেতেছিল পাড়ার শিশুরা!পাকা আম কুড়োতে কুড়োতে
তারা খুঁজেছিল নিজেদের ভাগ্য! ভাঙনচিত্রের বা’পাশে
দাঁড়িয়ে যেমন নতুন আবাসনের স্বপ্ন দেখে-
ভাঙা ঘড়ির কাঁটার মতো একদল উচ্ছেদিত মানুষ!

ভগ্নাংশের পরের রাত্রি

একটা নদী ভাগ করে তোমাকে দিতে চাইলাম,
তুমি বললে- ‘জল নেবো না’
একটা চুল্লি ভাগ করে তোমাকে দিতে চাইলাম,
তুমি বললে-‘আগুন নেবো না’

একটা আকাশ মুঠোয় পুরে যখন আমি দাঁড়ালাম
তখন তুমি ঠিকই আমাকে জাপটে ধরে
নিয়ে গেলে বকুল তলায়।
একটি জোনাকী তখন সেখানে একাই
রাতের আলো বিলি করছিল।