চ্যাটার্জী অমলের কবিতা

চ্যাটার্জী অমলের কবিতা

ওরাও মানুষ

চাওয়া পাওয়া গণিতের যাঁতাকলে পড়ে –
শ্রমবাজারে পেটে লাথি মেরে কত শ্রমিক
বাঁচার তাগিদে তপ্ত দুপুরে পিটছে হাতুড়ি।
তোমরা…
মদিরা মজলিসি পেয়ালায় চেটেপুটে নিচ্ছ-
ওদের শরীরী লোনা স্বাদের মৌতাত।
মুখে বিত্তের ঠাটবাটে পঞ্চব্যঞ্জন সুখের প্রলেপ,
নিবিড় প্রশান্তিতে গড়ছো সৌভাগ্যের স্বপ্নিল সৌধ।

স্বার্থের পৃথিবীতে বলি প্রদত্ত শ্রমিক,
সিন্ডিকেটের লাল চোখের শাসনে শ্রম-অধিকার।
আজকাল রং পাল্টে পরিবর্তনের গড়গড়ায়-
বিবেকবাবুও তামাক খায় পুঁজিবাদীর পানশালায় ।

যাদের অক্লান্ত শ্রমে তোমাদের এই পুঁজির পাহাড়,
ছদ্মবেশে রক্তচুষে তন্দুরে সেঁকছো তাদের সুখ,
পাঁজর ভাঙ্গা দীর্ঘশ্বাসের চুম্বনে গুমরে কাঁদে মানবতা।
বেদনার মাদকতায় শ্রমিকের রক্তে লেখা-
বঞ্চনার ইতিহাস-“ওরাও মানুষ,”
উপেক্ষার কাটাকুটিতে খবর হয় শেষের পাতায়।

তবুও,আড়ষ্টতা ভেঙে সময়ের পাকদন্ডী বেয়ে-
দৃঢ় অঙ্গীকারে- স্বেত পতাকা উড়িয়ে-
এগিয়ে চলে স্যাঁতাপড়া জীবন।

ক্যাপসান

অবিশ্বাসের অন্ধদ্বন্দ্বে, অন্ধছন্দে নেচে
অবলীলায় ঔদ্ধত্যের ঢাক পেটালে।
নেপথ্য ঘটনা না জেনেই আশা মিটিয়ে লুট
করলে অফুরন্ত আপন বিশ্বাস ।
তীক্ষ্ম বর্শার মতো ধেয়ে এলো কি নিষ্ঠুর কি
নির্মম অগণিত কটাক্ষ! চিন্তাখন্ডে পেশাদারি
খুনিরমতো কালো অক্ষরে নিবিষ্ট ভাবে
ক্ষতবিক্ষত করলে এ শরীর।তোমাদের
নেই মনুষ্যত্ব নেই মানবিকতা, আছে শুধু
মনুষ্যত্বহীন গোপন শলার প্রাবল্য।

স্বার্থের দাপটে স্বপ্নভঙ্গের বিষন্নতায়
অসহায় বিশ্বাস।এসো, দাঁড়াও ভূ-সত্যে
বিশ্বাসঘাতকের দল। ওহে, সত্য মিথ্যা
যাচাই না করেই রঙ্গমঞ্চে নি:সঙ্কোচে
নাটকটা করলে ক্যাপসান বিহীন! যাক ,
ক্যাপসানটা না হয় আমিই লিখবো,তবে শেষটাও আমিই করব যথা স্থানে যথা সময়ে।
পারবে তো শিরদাঁড়া সোজা রেখে সাক্ষী
হয়ে সাক্ষ্য দিতে ? পারবে তো প্রমাণ করতে
নিজেদের ভোঁতা অবস্থান?