রথীন পার্থ মণ্ডলের কবিতা

আগাছার স্তুতি
যে পৃথিবীর কালগর্ভে হারিয়ে যায় না নকশালবাড়ি
যে সমাজের আঙুল চুষেও নিমেষে উৎখাত হয় জমিদারী
সেখানেই জন্মেছিল আমাদের মতো বুনো ঘাস
প্রতিপালনের দায়িত্ব না নিলেও যে নিজের গরজে
বাড়তে থাকে, ক্রমশঃ বাড়তেই থাকে
সাধ্যমতো বিস্তার করে নিজের সাম্রাজ্য
তবুও লোকে তাকে আগাছাই বলে।
পায়ে মাড়াতে মাড়াতে তারই ওপর দিয়ে তৈরি হয় পথ
সে পথে সবুজ শহীদ হয়, তবু টিকে থাকে আগাছা
খটখটে শুকনো হয়ে তখন অপেক্ষারত, আর
সেই অন্তিমকালে আমি বারুদ মাখবো আঙুলে।
আগাছা বেঁচে থাকে সূর্যের পথ চেয়ে।
নিঝুম রাতের কান্না
হঠাৎ যখন ঘুম ভাঙে মাঝরাতে
আলো জ্বালতেই দেখি হৃদয়ের গভীর থেকে
পাখা সম্বলিত পিঁপড়েরা আলোর দিকে উড়ে যায়
যেখানে মৃত্যুর সাক্ষাৎ নিশ্চিত জানে,
জেনে ইচ্ছেগুলো মরে যায়।
বাথরুমের ট্যাপ থেকে জল ঝরবার শব্দ
শুনি শুয়ে শুয়ে
ফোঁটায় ফোঁটায় ঝরে যায় স্বপ্নগুলো !
বেওয়ারিশ কুকুর বিলাপে জানায় যত কষ্ট
ট্রাকের চাকার নীচে পিষ্ট কবিতার ব্যাকুলতা
কাঁদে অসহায়, তবু জেগে থাকে বিদগ্ধ মন
মুখ থুবড়ে নর্দমায় পড়ে অনুভূতি।
মাঝরাতে প্রায়ই আমার ঘুম ভাঙে আজকাল।
আফতাব অ্যাভিনিউ
আজও বয়ে চলে আফতাব অ্যাভিনিউ
নদী হয়ে বুকে
অথবা রক্তস্রোতে
জানতে পারে না কেউ…
পায়ে পায়ে সাজে কত গল্পের চলা
মুখে মুখে বাজে কত দিবসের বলা
কত প্রেম, কত বিচ্ছেদ
কত বন্ধুতা, কত বিপ্লব
সাজিয়ে দিয়েছে জীবনের হরবোলা…
শুধু জানতে পারে না কেউ
বন্ধুর মত, বন্ধুর যাতায়াতেও
আজও বয়ে চলে আফতাব অ্যাভিনিউ…