জাহ্নবি জাইমার কবিতা
শান্তি ঝুলন্ত লাশ
ভেজা নয়ন বুজে অনুভব করি
দেয়ালিকা ক্যানভাস থেকে উঠে আসা চোখ,
প্রতিচ্ছবি স্বচ্ছতার অস্তিত্ব আড়াল হলে
গলা থেকে উঠে আসে অনুভূতির সুর।
বিষন্নতার ক্যাকটাস, অক্টোপাস হয়ে
হামাগুড়ি দিয়ে উঠে আসে বুকে
স্মৃতির জলচ্ছবি রক্তাক্ত হয়
ছায়া হয়ে ফিরে যাও জোছনার সুখে।
বাস্তবতার দরজায় ঝুলে স্মৃতির লাশ
স্বপ্ন ফিরে যায় নিজ সরল রেখায়
আমরা শান্তি খুঁজি আয়নার পিছনে
ফেলে আসা পথে…
শব্দ নিরুত্তর
রোদুর অক্ষরে লিখি দিন
আঁধার নিয়ে লিখি রাত
দিন রাতের সন্ধি লিখি প্রহেলিকা
ভাবি যে লেখার কথা,
ভাষা শব্দ নিরুত্তর!
শুনতে পাই ধ্বনির অক্ষরে পক্ষীভাষা
ধ্বনি প্রতিধ্বনি তাবত লেখা সচলে
সুনশান নীরবতা তেপান্তরে
ঘসামাজা কিংবা মমতার আঁচলে।
ছিলনা অক্ষর তবু হয়েছে লেখা বিহ্বলে
পাহাড়ী গুহায় চিত্রলিপি কিংবা ইলােরার বলে
অথচ,
আমার জন্য হায়ারােগ্রিফিক্ নিরুত্তর।
যে ভাষা রপ্ত চেনা শব্দ করে মড় মড়
সে ভাষায় কথা বলে আশ্বিনের ঝড়
জুয়াড়ি চিল মেলে পাখা খাদ্য ছুঁইয়ের ভাষা
লিখতে গিয়ে নিজেকে শব্দ নিরুত্তর!
লিখতে পারি হাওয়া অনুভূতি নিয়ে
রােদ দেখি রােদ লিখি অক্ষর দৃষ্টি দিয়ে
ঘনমেঘ লিখে ফেলি অনায়াসে বৃষ্টি লিপি
নিজেকে লিখতে গিয়ে বর্ণমালায় শব্দ নিরুত্তর!
কপাট
ভবঘুরে মন ক্ষুধা মেটাতে
অতিষ্টের শীত ক্ষণ কাটাতে
সময়ের পসরা ট্রেনের অপেক্ষায়
হৃদয় ক্ষুধা নিবারণে, চোখ তুলে চায়।
চোখে পড়ে পাহারায় কুকুর উলঙ্গ শিশু
সমাজপতিদের ছােবলে একদিন যিশু
বরফ শীতের এক মাত্র প্রহরী চট সম্বল
ভাগ্য বেসাতি জোটেনি অধিকারের কম্বল।
জননী জনক খুঁজিছে আছে অর্থের দায়ভার
জীর্ণ শীর্ণ দেহে আজ চোখ পড়া ভার
তবু দরকষাকষি ব্যস্ত রাস্তার ধারে
দামী পােশাকে মুখােশ ধারীর কাম ভারে
কাম শেষে ভুলে যায় দুঃখ ব্যথা
সন্তানের ক্ষুধা নিবারণেই কথা।
ঢেকে রাখে অপরাধের জৌলুষ অপরাধী আবরণে!
শীতকে হারমানায় বৃদ্ধ ভিক্ষুক মৃত্যু জোটেনি
সমাজের মত বৃদ্ধাশ্রমের ঠিকানা খুঁজেনি।
ট্রেনের অপেক্ষায় একটি বেওয়ারিশ লাশ সনাক্তকরণে!
ট্রেন এসে আচমকা দাঁড়ায় হৃদয় মন্তব্যে।
প্লাটফর্মে পা বাড়াই ট্রেনের গন্তব্যে।
একদিন….
সূর্যালায়ে আলাকিত হবে তমসা লোপাট
রোদে ঝলমলে দিন সূর্য খুলবে কপাট।