আদ্যনাথ ঘোষের কবিতা
তৃষাতুর মাঠ
রাতেরা অন্ধকারে নাচে।
যে রাত তার ঢেউয়ের খোঁপায় দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে
শরীরী মুদ্রায় নেচে ওঠে
নতুন গন্ধে উঠে আসে কালসাপ
গুহার ভিতর বিভৎস মানুষ ওঠে আর নামে
রাতের অবসাদ ছেড়ে ডাঙ্গুলি মাঠ-নিভৃত জলে সাঁতার কাটে।
এখন আমার মাঠ জুড়ে হাহাকার
প্রমত্তা নদীতে মৈথুনের চোখ শীৎকার করে
নিশ্বাস নীল-গাঢ় হয়
গুহাগামী মন কণ্ঠে ধারণ করে রাতের অন্তেষ্ট্যিক্রিয়া
বুকের ভিতর কেঁপে ওঠে দুপুরের তৃষাতুর মাঠ।
ঈশ্বর গোঙরায়
চিতার আগুন ফুলে ওঠে গোটা দুপুর খেয়ে।
পেটে তার বেধড়ক ক্ষুধা-
অনুভবে খেয়ে ফেলে মানুষের জ্বলে ওঠা স্বপ্নের ফসল।
এখন তার পেটে চলে যায়
জ্যান্ত পৃথিবী, স্নিগ্ধ রোদ্দুর, প্রণয়ের ঘর।
বহুদুরে দাঁড়িয়ে থেকে শুয়ে পড়ে বুড়ো বটগাছ।
থেঁতলে যাওয়া ঈশ্বর
শুধুই কাগুজে বাঘ- গোঙরায়, জ্বলে ওঠে।
কাল থেকে মহাকাল
ঈশ্বর গোটা আঁধার গিলে খেয়ে তার উপস্থিতি রেখে যাবে
নতুন প্রসব-যন্ত্রণায়। এই তার ভাব!
রৌদ্রচুম্বন
রাতের আলপথ বেয়ে যে নদী সাঁতরায়
চোখে তার জোনাকির ফুল
নাভিছেঁড়া জোছনায় নাইয়রের নাও
ইচ্ছেমতি জলরঙ ভেসে যায় ভাঙা ভাঙা চাঁদে।
ভাঙনের শেষে নদী তার তুলে আনে বিষণ্ন সুর
জলের রেখায় উঠে আসে কুমারীর ফুল
মনের ভেতর থেকে দুইখানা হাত বের করে
বুকের উপর ফুলে ওঠা নদী তার-
অবাধ্য জোয়ার লেপটে রেখে দিয়ে যায় রৌদ্রচুম্বন।