মধুমিতা দাশগুপ্তের কবিতা

কিশোরী
এখনো কি ভোর হয়নি।
বন পথ ফুল দিয়ে ঢাকা।
প্রভু যাবেন এ পথে-
সে কোন পথ।
যে পথে মোহনের প্রেম,
রাধার বিরহ মিলে মিশে একাকার।
প্রভু এলেন কিশোরীর চোখে জল-
প্রভুর গেরুয়া বসন
ধুয়ে যায় কিশোরীর অশ্রুপাতে।
নিরুত্তাপ দৃষ্টি বিনিময়।
প্রভু চলে যান।
কিশোরী যাওয়ার পথে
আঁচল বিছিয়ে ফুল কুড়োয়।
রাত্রি
সন্ধ্যার কৃষ্ণচূড়ার নীচে মেয়েটি দাঁড়িয়ে।
পরনে রঙিন শাড়ি, মদালসা ঠোঁট।
উপসী শরীর না কী মন ও।
লোকটি চোখ সরায় সিগারেট থেকে
কাছে আসে তবু হাত ছোঁয় না।
মেয়েটি অবাক-অলৌকিক প্রেম শুনেছিল কবে।
লোকটি বলে আমি ছোঁবো না তোমায়
দূর থেকে ঠোঁটের নরম ছুঁড়ে দিও।
এখনো তোমার গায়ে যে রাত্রির অন্ধকার।
আগে জোছনার জলে ধুয়ে এসো।
শিশিরের জল দিয়ে চোখ ধুয়ে নিও।
তারপর নিয়ে যাবো আমার স্বপ্ন কুটিরে।
মেয়েটির চোখ জলে ভরা।
আজ আর সে অপবিত্র নয়।
পূজার ফুলে আজ তার অধিকার।
আজ তার চোখ নীলপদ্ম হয়ে
অঞ্জলি দিতে চায় দেবতার পায়ে।
চলে যাওয়া
সে পেয়েছে হলুদ শস্য ক্ষেত।
নরম নদী হয়তো নারী-
দু হাতে সরিয়ে চলে যায় দূরে।
আশ্বিনের খন্ড মেঘে-
সে ভাসে ভেলার মতো-
দুপুরের সূর্য তার হাতে-
শ্রাবণের পথে অঝোর মুষলে
সে ফুল কুড়োয় না আর
কিশোরীর সাথে।
সে পেয়েছে নক্ষত্রের আকাশ।
কারোর চোখের পাতায়
ব্যথিত স্বপ্নের মতো
সে শুধু রয়ে যায় অনন্তের মাঝে।