বিনয় কর্মকারের কবিতা

শিল্পবোধ
আসলে রুচি বলে কথা!
টাকা হলে কেউকেউ কাকও পোষে!
আপাকে আন্টি ডাকলেই বুঝি ওয়েস্টার্ন হয়!
স্পোকেন ইংলিশ বইটা-তো পড়ো!
যে বাঁশিওয়ালার বাঁশিতে মুগ্ধ এতো-শ্রোতা;
জেনেছি, তার নিজস্ব কোনো বাঁশঝাড় নেই।
শার্ট
অতিশ্রেণি বাদ দিলে,
শার্ট মানে— গায়ের ওপর একটা আলগা কাপড়ের আস্তরণ;
চেনা ঘামের ঘ্রাণ,
টুকরো কাপড়ের সম্মিলিত কারুকাজ —-
যার পকেটে লুকিয়ে থাকে একেকটা সংসারি গল্প।
আর হাত থেকে পকেট-তো কারো কাছে, মহাকাশ সমান দূরত্ব!
বোতাম আর বোতামঘর?
সে-তো, পোস্টমর্টেম শেষে জুড়ে দেয়া একেকটা দরকারি সেলাই।
আমরা ঘাড় পাল্টাতে পারি-না বলেই;
দুরারোগ্য ক্ষত নিয়ে দীর্ঘকাল বেঁচে থাকে কোনো-কোনো কলার।
ত্রাণ
যেহেতু স্বপ্নই আমাদের বেঁচে থাকার প্রেরণা, সেজন্যই হয়তো বেঁচে থাকা!
ওদিকে;
আশ্বাসে ভরে ওঠে আশ্বস্তের গোলা।
বৈশাখে কম্বল বিতরণ কর্মসূচি কতোটা যৌক্তিক; সে প্রশ্নে না-হয় নাই-গেলাম।
বরাদ্দকৃত ত্রাণ বলতে আমাদের ভাগে;
বাঁহাতে আলু ও একপ্যাকেট চিনি,
আর ডানহাতে ডায়াবেটিসের প্রেসক্রিপশন।
রক্ষণশীল
রক্ষণশীল বলে কথা;
‘তোমরা সবাই সাইট দাও, আমাগো বৌ বাজারে যাইবো!’
নিয়ম-নিষ্ঠাবান একটা নৌকার কাহিনি বলতো নিজাম কাকা;
যার পেশা ছিলো খেয়া পারাপার!
গোপন বলে আমারে যে দ্বিতীয় কান করতে নিষেধ করেছিলো;
বিবিসি নিউজে তিনিই সে-খবরের সংবাদদাতা!
তেষ্টা
মাটি আর আকাশের সংজ্ঞায় খেলা করে মেঘ।
চৈত্রের চেনাসুরে খরার গান।
কুয়া সাক্ষী দেয় ক্ষণিক জলের,
হৃদয়-গভীরে চলে খনন কাব্য!
আমাদের যাপন-পুকুরে;
জলের তেষ্টায় নেমে যায় ঘাট।
মানুষের অধোঃগমন গায়ে মেখে;
পৃথিবীও ক্রমাগত অতলমুখি!