হীরক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতা

হীরক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতা

উত্তরাধিকার

আমরা কয়েকজন যুবক নবমীর বিকেলে
আকাট বেরিয়ে পড়েছিলাম
পৃথিবী পরিক্রমা করব বলে
পিছু ছাড়ছিল না ঢাকের বাদ‍্যি কিংবা
আরতির জ‍্যোতির্গময় ,বিপুল শূন্যে ছড়িয়ে থাকা হৃদয় পিছু ছাড়ছিল না
দেখা দিয়ে ডুবে যাওয়া
লাবনী ঘোষাল ,মরা জ‍্যোৎস্নায় আমাদের চোখে পড়ছিল নগরপোশাকে র‍্যাম্প স্টেটমেন্ট
আমাদের চোখ থেকে ক্রমশ
সরে সরে যাচ্ছিল অর্জিত স্বপ্ন
মার্কস লেনিন সুভাষ গান্ধী…
পথকে অজস্র টুকরো করে ছড়িয়ে দিল
যারা, বলল বৃষ্টি দাও সঙ্গে দাও চাল ডাল সব্জি আনাজ এই আমাদের গথিক অহংকার
এই আমাদের লাজ ভয় উত্তরাধিকার
সন্তান যেন মাড় ভাত পায় ..

শিক্ষক

বুকের ভেতরে ছিল শ্বাস,আজ সে শিখেছে ধ্বংসের মন্ত্র,একদিন তোমার পায়ের কাছে
বসে শিখেছি কত জটিল অঙ্ক
মনে মনেও কোনোদিন ধন্যাবাদ দিইনি
প্রণাম করিনি …
সমস্ত কৃতজ্ঞতা আজ ভিড় করে এলো
জানু পেতে বসে ভাবি কাকে জানাবো
আশেপাশে কাকেইবা জানাবো
তাই আমি অরণ্যের কাছে যাই
আমি যাই অতলান্ত সমুদ্রের ধারে
অথচ একটাই মানুষ কিন্ত্ত সে আমি নয়
অথচ কী আশ্চর্য এখন সব কিছু ছেড়ে
কাঙ্গাল হতেও লজ্জা নেই
শুয়ে থাকি বসে থাকি অনন্তের দিকে চেয়ে
নির্জনতা ভেদ করে চলে যেতে চাই
সেই কিশোরবেলায় যেখানে জামরুল গাছে ঠেস
দিয়ে আছে শীত যেখানে অনন্ত গোধূলী বিশ্রামরত
অনেক হয়েছে দেখা আর কোনও কাজ নেই
তাই শেষ প্রহরের আগে শুধু
সশ্রদ্ধ প্রণাম জানাই …

গহন অরণ্যে

হলুদ পাখি সবুজ পাখির দেশে আমি চলে এসেছি
গহীন কুয়াশায় ভরে যায় এখন, দিনকেদিন
আমার পৃথিবী
নিবিড় হয়ে ওঠা আর হলো না আমার
তবুও রাত্রি হলে ভাবি
শীতসমুদ্রের পারে একদিন যাবো
প্রেমিকের মতো ,জীবনের বিবিধ আশ্চর্যকে
হার মানিয়ে,ব্যাথা বিরোধ সবকিছু ভুলে
যাবো, একদিন যাবো
আমার সমস্ত নিয়ে তোমার বাগানে …