রম্যরচনা: ঘটি বাঙালের পাল্টি প্রেম

রম্যরচনা:  ঘটি বাঙালের পাল্টি প্রেম

ঘটি বাঙালের পাল্টি প্রেম
প্রদীপ দে

— তোদের গুষ্টি কুকুর!

— এই যে ভদ্রনোকের গিন্নি, মুখ সামলে কইবেন, ক্যামনে?

— নাতো কি করবে?

— দ্যাখবেন কি কোরুম ?

— হ্যাঁ দেখবো তো বটেক, শালী হারামজাদী!

— একদম বাজে কথা কইবে না, মুইখ্যা নুড়ো জ্বালায় দিমু, এই বলে রাখলেম।

দুই বাড়ির দুই গিন্নির ঝগড়া চলছে। প্রায়শই লাগে, প্রথমে মুখেমুখে তারপর হাতেনাতে। আজও চলছে। ঘটি আর বাঙালের – পূর্ব আর পশ্চিমের লড়াই – ঠিক উদয় অস্তের মত – শুরু শেষ আবার শুরু।

অল্পস্বল্প থেকে চরমে উঠলো। বাঙাল গিন্নির কুত্তা এক পা তুলে পেচ্ছাব করে দেয় ঘটির সদরের দরজায়! ব্যাস আর দেখে কে? শুরু হয়ে গেছে। এখন একজন ঝ্যাঁটা আর একজন জুতো নিয়ে তেড়ে এসেছে।

ঝ্যাঁটা জুতো আসলে প্রতীকী! দুজনেই তা ফেলে এ ওর চুলের মুঠো ধরে সে কি চিৎকার!

— আয় হারামজাদী তোর একদিন কি আমারই একদিন!

— হ্যাঁ রে শাকচুন্নি ওলামুখি তুরে আজ মাইরা তবেই আমি ছাড়ুম! হালার মাগী …

আশেপাশের মহিলারা ক্লান্ত আর ক্রান্ত দুজনকে সামলাতে। ফলে দুজনের হাতে দুজনের মাথার চুলের গোছা।

সবচেয়ে মজার ঘটনা তখনই ঘটে, দোতলার বারন্দা থেকে ঘটির বাবু বাঙালের বউকে চোখ মেরে ইশারা করে আর নিমেষেই বাঙাল গিন্নি যুদ্ধে বিরতি ঘটিয়ে নাটকীয় ভঙ্গিতে রণক্ষেত্র ত্যাগ করে…।

ঘটির বউ ছাদে উঠে যায় নিজের কাজ শুরু করার অছিলায়। বাঙাল ছাদে তখন বাঙাল বাবু হাত নেড়ে নিশানা করে — ঘটি গিন্নির মুখ হাসিতে ভরে ওঠে…।

ঝগড়া যেদিন হয় সেদিনই পাল্টি ঘরের বাবু বিবিদের হেসেখেলে ঘুরতে দেখা যায় একপক্ষকে নদীর ধারে তো অন্যপক্ষকে দূরে ধান ক্ষেতে!

প্রতিটি যুদ্ধের পর শান্তি বিরাজ করে …