জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা

জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা

মানানসই

এস্কিমো সর্দারের টুপির পালকগুলো
রাজহাঁসের না বকের ?
জিজ্ঞাসার উত্তর চাপাহাসি দেখে বুঝি
সুবোধ গোপালের ঔদাসিন্যে প্রশ্নটা
না করলেই হতো।

তার নেকড়েচামড়ার নিম্নবস্ত্র আর
হাতের বর্শার যোদ্ধারূপ যেন কোন
প্রাগৈতিহাসিক যুগের

ইচ্ছা ছাড়াই ক্রমে মিশে যাই দেহে
তারপর হারিয়ে ফেলি আমার আপন
বরফে লুকোনো মাছ গেঁথে আনি
আধপোড়া মাছ আর ভেড়ার মাংসে পুষ্ট
ইগলুজীবন,আবছা স্বপ্নে কী ভাসে?
হয়তো গ্রীক মিথোলজি মনে পড়ে
পুরাণকথাও অসম্ভব নয়
অবতার হয়ে যাবো না তো!

সিলের চর্বির প্রদীপ জ্বেলে বেশ ঘুমোই
একটুও ঠাণ্ডা নেই বেশ ফাল্গুনী তাপ

অক্ষাংশ-দ্রাঘিমাংশ নিয়ে একটুও ভাবনা নেই
কত নটিক্যাল মাইল দূরে আছি তাও ভাবি না
শুধু হতচ্ছাড়া সেই আড্ডার জামগাছ আর
বাতার বেঞ্চে একটা প্রবল চুম্বক কে যে লাগিয়েছে!
শান্তি ভেঙে ভেঙে ভেঙে ফেলে সুখ !

মরাচাঁদ

একদিন সূর্য কোমল হয়ে গেলে
বাঁশি হাতে খুঁজে নেবো মরাচাঁদ
কদম্বের ডাল ভালো চিনি
বেসুরে ভাসিয়ে দেবো দুর্ভিক্ষের রাত
একজনও হাসিমুখে নেই পূরণ মুদ্রায়
নীরব প্রশস্তি আর খুশির শালুক

প্যাঁচা জানে তুঙ্গসপ্তক
বাদুড়ের ডানায় উচ্চচাপ ত্বক ও শিরায়

কালোমথ জানে শিল্পের ভিন্নরূপ
বেসুর বলে কি তাতে কোনো সুর নেই!

সূর্যের প্রবল যদি পাপড়িকোমল
তুর্কি ঘোড়াটিও হাঁটুমুড়ে মেগে নেবে রাত
শীতল সবুজেরা উট হয়ে হাঁটবে বালিয়াড়ি
কাঁটাঝোপ ঘুম যাবে শান্তি অপার

সেদিন মরাচাঁদে দেদার শীতল
আটটি আঙুলে যত বেসুর আক্ষেপ
ঢেলে দেবো নীল ধারাজলে

পিছনমানুষ

পরাজিত মানুষের গুপ্তধন সুপ্তবাসনাগুলি
লুপ্তসুখের খোঁজ তার গন্ধপথের অভিযাত্রা
ঢেকে যায় ব্যর্থতার ছায়াবিষাদ শ্যাওলা আঁধার
হারানো মুখের অ্যালবাম খোঁজে স্মৃতিচোখ
কখনো কাশফুল,নথ বা কাঁচা মনের প্রেমলেখা
বেলুনের মাখন হাত বৃষ্টিবিকেল মায়ারোদ
কনেদেখা আলোমুখ ঝিলমিল
গালে হাত আটসৈনিকের পৃষ্ঠপ্রদর্শন