অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা

আঁচল ও চাবির গল্পকথা
আবারও একটা ছাব্বিশে ফেব্রুয়ারী
চলে গেলো,এ রকম কাতো চলে যাবে
কতো কাল আঁচলে বাঁধা চাবির গোছা দেখিনি
একদিন অঙ্গাগীভাবে ছিল আঁচল ও চাবির গোছা
চাবির গোছা এখনও একটা ড্রয়ারে যত্নে…
অথচ সেই আঁচল আজ অদৃশ্য
দিন গড়িয়ে জোনাকী সন্ধ্যা নামে
এক মায়াময় আলোয় আলোকিত
হয়ে যায় এই আবাসস্থল
তবুও তোমার অনিঃশেষ অনুপস্থিতি
ঐ চাবি গোছাগুলোকে কীভাবে মাঝে মাঝে
নড়ে ওঠে, একটা শব্দ তরঙ্গ হয়ে যায়
বুঝেও উঠতে পারি না
আমার কাছে অনুরণিত হতে থাকে শব্দ তরঙ্গ
ভাঙা রোয়াক,ভাঁড়ার ঘর, দেরাজ জুড়ে
তার পর ঘুরতে ঘুরতে
ফুলকাটা সদর দরজা পর্যন্ত চলে যায়
এই ভাবেই হারিয়ে যায় শূন্যপথে
তবুও তোমার আঁচল ও চাবির
যেনো এক অদৃশ্য উপস্থিতি এই নিলয় জুড়ে
প্রাচীর
দূরে সোনাঝরি বন, তার পাশে
নদী স্রোত বেজে যায় সেতারের মতো
একটা ভাঙা প্রাচীর এখনও তার কাছে
টপকে যেতে গিয়ে হেরে গেলাম বার বার
একটা প্রাচীর যে চিরকাল বাধা হয়ে যাবে
কে ভেবেছিল, অথচ সারা জীবনটাই
প্রাচীরের অন্যদিকে থেকে যাওয়া…
এর ভেতর থেকেই রচিত হয়ে গেল
একটা বিচ্ছেদের গল্প
ও বিষণ্নতার আকাশ
আঁকা হয়ে গেল বৃষ্টি মেঘের সন্ধ্যা
তার পর নাচের মূদ্রার মতো গভীর হয়ে
ভেঙে গেলো তুলোর মতো লাল মাটি উপত্যকায়।
ঋতুহীন মেঘ ও বসন্ত পাখি
চেনা পথ দিয়ে দূরন্ত হওয়ার মতো
সুকোমল বৃক্ষের ভেতর দিয়ে চলে যাওয়া
একটা প্রসারিত ব্রিজের ওপর থেকে
জলপূর্ণ নদীর জন্য চেয়ে থাকা
ভাসা পথ ধরে অভিমানী প্রেমের মতো
উড়ে যাওয়া ঋতুহীন মেঘ….
পথ পাশে ঝুলে থাকা কিছু শিমুল
বসন্ত পাখির অনিঃশেষ উড়ান
গজাবরু পাহাড় এর স্তব্ধতার ভেতর
এতো রঙিন হৃদয় আছে
তা বোঝা যায় যখন সে পলাশ সকাল
উড়িয়ে দেয় ময়ূরপঙ্খী ঘুড়ির মতো
আর এসব দেখে বসন্ত পাখির আনন্দধ্বনি
ছুঁড়ে দিতে দিতে বনেপথে যে কোথায় হারায়
তার জন্য এক অন্বেষণে সমুদ্রদুপুর গড়িয়ে যায়
কাঠুরিয়া পথে ডাউরি খালে অন্ধরাত ৃনামৃে
নিস্তব্ধ রাত ভেসে ভেসে বেড়ায় ঐ পথে…