মৃধা আলাউদ্দিনের কবিতা
শুঁড়িখানাসংত্রান্ত
১.বিষ প্রয়োজন
শুঁড়িখানার নরম দেহ, কাবাব ভুনা, আদিরসের নিষ্প্রয়োজন
কান্নাভেজা জীবনে আজ আমার দেখি সবার আগে বিষ প্রয়োজন।
২. ব্যর্থ এ জীবন
সন্ধ্যা না ভাই, সমস্ত রাত গেল আমার শুঁড়িখানায়
ব্যস্ত ছিলাম নগ্ন নারী, নর্তকীদের চুড়ি নাড়ায়।
৩. নেশা
নর্তকীদের নূপুর কিংবা ঢোলের ঢঙে যাচ্ছি নেশায় গড়িয়ে
রাত ফুরায়ে ভোর হয়েছে, কাঁপছি আমি পড়ছে আলো ছড়িয়ে।
৪. শুঁড়িখানা
এখান থেকে আর যাব না পাখি কিংবা নরম তুলো নদীর কাছে
শীৎকার এবং ষড়ৈশ্বর্য শুঁড়িখানায় জোছনা-তারা সবই আছে।
৫. শুঁড়িখানায়
মধ্য রাতে শুঁড়িখানায় এমন করে দিলে যখন হাত ছেড়ে
নীল ব্যথাতে বুকের ভেতর শব্দ হলো যেমন করে কাঠ চেড়ে…
৬. যৌবন
জীবন কেনো যায় না ধরা, যায় না ধরা নারীর দেহ নদীরে
আমার কথা বলব সবি শুঁড়িখানায় খোদারে পাই যদিরে।
৭. নীল ব্যথা
৭, নীল ব্যথা
শুঁড়িখানার চারদেয়ালে লিখে দিলাম তোর কথা
সন্ধ্যা হলে একলা থাকি, সয়না বুকে নীল ব্যথা।
৮. আমিই কবি
শুঁড়িখানায় ঢুকেই দেখি রঙমহলে নারীর দেহ, তোর ছবি
সত্যি বলি আর কিছু না, তখন থেকে এই শহরে আমিই কবি।
৯. একটু দেখি অল্পক্ষণ
শুঁড়িখানায় একলা থাকি চোখের জলে সারাক্ষণ
কোথায় গেলি আয় না কাছে, একটু দেখি অল্পক্ষণ।
১০. দ্বার খুলে দে শুঁড়িখানার
মিনার থেকে ডাক দিয়ে কয় আয়রে সাকি দ্বার খুলে দে শুঁড়িখানার
জীবনযুদ্ধে ছুটবে এখন মানুষগুলো চাল কল এবং গুঁড়িখানার।
১১. নিরুপায়
হঠাৎ দেখি হুর-পরি না কারা যেনো নূপুর কিংবা নুড়ি নাড়ায়
গভীর রাতে একলা আমি বেহেড মাতাল কাঁপতে ছিলাম শুঁড়িখানায়।
১২. কবি
মানুষের ষড়ৈশ্বর্য, শুঁড়িখানা আলোর বয়ান
কবিদের রাগ নেই, রোগ নেই কবিরা জোয়ান।
১৩. স্বামী
শুঁড়িখানা দ্যায় যদি মহামৃগ প্রাণের পরশ
ফুটে ওঠে এই দেহে রোশনাই রোদের সারশ।
১৪. তুই
শুঁড়িখানাও তুচ্ছ লাগে যখন তোরে ছুঁই
পূর্ণিমাতে আব্রুছাড়া তুই যেনো এক জুঁই।
১৫. শুঁড়িখানা-১
চুমুক দিলে ভাসতে থাকি কোথায় যেনো ভুঁই ছাড়া
শুঁড়িখানার দ্রাক্ষারসে আর কিছু নেই তুই ছাড়া।
১৬. শুঁড়িখানা-২
পানপেয়ালা ধরলে হাতে যাই হয়ে যাই ভুঁই হারা
শুঁড়িখানার দ্রাক্ষারসে আর কিছু নাই তুই ছাড়া।
১৭. চুয়াত্তর
আবার যদি চুয়াত্তর হয় এইখানে আর থাকব না
গুঁড়িয়ে দেব শুঁড়িখানা, রাজপ্রাসাদও রাখব না।
১৮. শুঁড়িখানায়…
আয়না সখি দুজন মিলে শুঁড়িখানায় রাত কাটাই
গভীর রাতে নদীর দেহে অল্পকিছু রস পাঠাই।
১৯. ভুল
জীবন দিলাম শুঁড়িখানায় সর্বক্ষণই তুচ্ছ ভেবে কেয়ামত
এখন দেখি এই দুনিয়ার সবখানে ভাই আল্লাহতালার নেয়ামত।
২০. পূর্ণ চাঁদ
শুঁড়িখানা কাঁপে, ভাঙে ভেঙে যায় বাঁধ
কামযুক্ত রাধা যেনো চাঁদের উপরে এক চাঁদ।
২১. পথিক
গতকাল শুঁড়িখানায় যে নারীর দেখেছি জোয়ার
আজ নেই, থাকবে না কেউÑ দোস্ত, দারুণ ইয়ার।
২২. পাখি তুমি ফেরাও কহর
পৃথিবীতে নদী-নালা, খাল-বিল-মাছের বহর
ফের চায় শুঁড়িখানা পাখি তুমি ফেরাও কহর।
২৩. প্রশ্ন
জীবনটাকে করলে কেনো গভীর রাতে শুঁড়িখানার আলো
আবার কেনো জীবনশেষে নেতিয়ে দিলে, করলে তারে কালো?
২৫. কামে ভেজা বধূ
কামে ভেজা বধূ এসে ধরলো মেলে আপেল ভরা তস্তরি
ব্যাকুল হলাম শুঁড়িখানার লাল গ্লাসে ঢালতে নেশার কস্তুরি।
২৬. দোঁহের মিলন
রাতের আঁধারে, নীল নদীর শুঁড়িখানায় দিয়েছিল নরম দেহ চাষ
আজ জীবনের প্রান্ত দিনে সাকি আর মদিরায় কাটে বারো মাস।
২৭. অন্ধ চোখ
কি করে কিসমৎ, শুঁড়িখানায় সন্ধ্যা হয়ে গ্যালো ভোর
আমি আজো খুলিনি দেরাজ মেহেদি ময়দান দ্বোর।
২৮. রহস্যের রাজহাঁস
মধ্যরাতে অহরহ তোমাকে পাবার প্রিয়তম প্রত্যাশায় আমি উন্মাতাল
আমাকে দেখাও ছবি, রূপরস-রোদ শুঁড়িখানা রবি রহস্যের জাল।
২৯. আমিই কবি-১
শুঁড়িখানার নীল গেলাসে যেদিন দেখি নদীর ছবি
সেদিন থেবে কাব্য লিখি, আদিরসের আমিই কবি।
৩২. দ্বার খুলে দে শুঁড়িখানার
মিনার থেকে ডাক দিয়ে কয় আয়রে সাকি দ্বার খুলে দে শুঁড়িখানার
জীবনযুদ্ধে ছুটবে এখন মানুষগুলো চাল কল এবং গুঁড়িখানার।