অনঞ্জনের কবিতা
মহাকর্ষ
সব ফুল বাজি রেখে, সব মধু শুষে নিয়ে জন্ম হয় তার,
মধুভাণ্ড জিম্মা রেখে চাঁদের করতলে বসে সূর্যতেজী হার,
তাকে তুমি বাধা দেবে? মোম রাতে মৃত্যুজিত অনন্ত সুবাস
তাকে তুলে নিয়ে যাবে এমন শকট বুঝি শুধু তার খাস;
ভেদশক্তি গর্জে ওঠে কাঠিন্যের পরশ নিয়ে হীরক ঝংকার
অন্ধকার ভেঙ্গে গড়া সেই উল্কি বনপথে কোমল শীৎকার;
গলে পড়া মোম নিয়ে আহ্বানে গিয়েছিলে পদপার্শ্বে তার
প্রণয়ের সাক্ষ্য নিয়ে গান গেয়ে, তরী নিয়ে, ব্যর্থ অভিসার,
ঝলকানো আগুন সে যে- মধু-ভাণ্ড কেড়ে নিয়ে পথ মধ্যে চাঁদ
কাঠিন্যের পূজা নেয়, পৌরুষে সে ধরা দেয় জোছনাভরা খাদ।
বিদ্বজ্জনের পরামর্শ
পাঁক পাঁক জল ঢুকে আসে ধীরে ধীরে, পাঁকের বর্ণময়তার কম্পনে
বিদ্বজ্জনেরা গাম্ভীর্যে মাথা চুলকান, আটকে যান এটা নয়তো ওটায় –
রাজার কাছে প্রস্তাব পাঁক বণ্টনের, গভীর ভাবনায় ডোবেন কেউবা,
পাঁকের বর্ণময়তা রাজার পছন্দ; কবি পাঁকেও কবিতা খুঁজে পান
আওয়াজ ওঠে কবির শাস্তি চাই, কবি শাস্তিতেও কবিতা খুঁজে পান,
কবির জেল হয়, নারী প্রতিবাদ করে।
নারী সে কবিতাকে আরও বাঙ্ময় করে, বিদ্বজ্জন গভীর চিন্তায় পড়েন,
নতুন ব্যাখ্যা দেন বিদ্বজ্জনেরা- পাঁকের ব্যাখ্যা, পাঁক পাঁক জলের ব্যাখ্যা,
রাজা খুশী হন, খুশী হন পণ্ডিত- পঙ্কিল পবিত্রতা নিয়ে গবেষণা,
পাঁকের শুচিতা নিয়ে কত না পাণ্ডিত্য; কবি ছাড়া পান, নারী বন্দী হন,
শুচিতার আড়ম্বরে বর্ণাঢ্য উৎসবে- ঢাকা পড়ে সব পাপ শব্দব্রহ্মে,
পাঁক পাঁক জল ঢুকতে থাকে ধীরে ধীরে।