আশরাফ হাসানের কবিতা

আশরাফ হাসানের কবিতা

চাঁদবৈরাগ্য কিংবা ড্রোনসভ্যতার উত্তরপুরুষ

পঞ্চাশ, ষাটের দশক পেরিয়ে
উচ্ছল জোসনার মতো গড়িয়ে পড়ে আমার কবিতা
গড়িয়ে পড়ে আর্তনাদক্লিষ্ট আত্মার করিডোরে
অজস্র খানাখন্দকভরা জর্জর রাজপথে
ভোরবৃক্ষের মর্মরিত সবুজ পত্রের মতো
তাজমহলের নিমগ্ন মমতার মতো
আমার কবিতা উঠে যায় মানুষের উৎকীর্ণ মিনারে l

সত্তরের দুর্জয় সাহস
আশির আত্ম-আবিষ্কারের চৈতন্যপাঠ
হিহিংস্র পাখিদের ঠোঁট ও নখরযাপন শেষে
নব্বইয়ের নিনিদ্র পাহারায়
সূর্যকে রোদের আড্ডায় বসিয়েছিলো আমার কবিতা l
মানুষ ও গণতন্ত্রের নৈঃসঙ্গভোরে
বোহেমিয়ান চুলের দুলুনি হয়ে ওঠে আমার কবিতা
নির্জর নিরাধনা থেকে ফিনকি দিয়ে ওঠে গোলাপের রক্ত l

হেরেমবন্দিত্বের কলাকৈবল্য মাড়িয়ে
শূণ্যপর অমিত শূণ্যের কোঠা পেরিয়ে
চাঁদের তৃতীয় ভূগোলে কী সারল্যে ঢুকে যায় আমার কবিতা
আগ্রাসী কৃত্রিম বাতাসের নৃত্য
মুদ্রার জমিন জলমগ্ন করে
আয়লা বিলের মতো স্বচ্ছ বুক পেতে বসে আমার কবিতা l

আমার কবিতা প্রসন্ন বালকের
লাটিমবিকেলের দৌড়ঝাঁপ শেষে
জলাবর্তের ঘূর্ণিতে দাঁড়িয়ে যায় তোমার বিপ্লবী চোখের মতো
হেঁটে হেঁটে যায় চাঁদবৈরাগ্য, ভিসুভিয়াস কিংবা হিরোশিমা-ড্রোনসভ্যতার উত্তরপুরুষ l

উষ্ণতা উৎকীর্ণ আঁধারে

“কুল্লু নাফসিন জা- ইকাতুল মাউত”

শেষমেশ থাকে না কিছুই
স্মৃতির সোহেলী পরশ
বিখন্ড মেঘের মতো উড়ে যাওয়া চাঁদের গোধূলি
জোনাকির পাখা থেকে ঝরে পড়া আলোর সাহস
আরশের আদেশে লুপ্ত তারার ভ্রমণ l

সন্ধ্যার নীড়ের মতো যে পাখি দেখেছে নদী
দুপাশে দুনিয়াধ্যান সারি সারি দ্বিধার পাহাড়
চারদিকে তিরস্কার-সাজানো আগুনে বাতাস
কুমির-টানে ছিটকে পড়া
গতিময় ট্রেন l

শেষতক থাকে না কিছুই
নাকির-মুনকির হাতে দেন অমৃত দলিল
প্লাটফর্ম ছেড়ে যায় উত্তপ্ত মাটির মেইল
সহস্র বছর যেনো জলহীন মরুদ্যানে কেউ
আমলের ফাইল বেঁধে আকাশে ওঠেন ফেরেস্তার দল
সূর্যের হলুদাভ মেখে নুয়ে পড়ে আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট

রিক্ত হাতে পড়ে থাকে ক্যাপিটাল হল
প্রগলভ আয়ুর দেশে এখন নৈঃশব্দ্যের ধুম
বিবাগী কৈশোর যেনো ঢুকে যায় অলৌকিক খামে
আর কারা অভিযোগের তেলাওয়াত নিয়ে আদালতে নামে l

অবশেষে থাকে না কিছুই
পিছুটানও একদিন খসে যায় বেদনার বল্কল
কথার উষ্ণতা জেগে রয় উৎকীর্ণ আঁধারে
মাটির শিশুরা জানে না কোনোদিন নির্জীব মৃত্যুরে
তবুও প্রতিদিন আসে আরশের আদেশ
প্রাণঘর পান্থশালে l

মৃত্তিকাবানু ও পোস্ট-এয়ার-ইস্টিশন

অ্যাঙ্জাইটি হাউসের রেড-টি প্রশমন সেন্টার l
চায়ের কাপ থেকে উড়ছে দূরদর্শী লিডারের অবসন্ন মস্তিস্ককোষ l আটলান্টিকের অতলান্তিক হিমবাষ্পকুন্ডলীর মতো স্ট্রেস-আকাশ ঘিরে আছে আরব্যরজনীর গ্যাং নায়িকা মারিখ্ খা l চিতার আগুনের মতো সহমৃত্যু নিয়ে তাস খেলছে আগুনকন্যা সারারাগুল l

একহাজার রজনী প্রলম্বিত করতে গল্পের ফাঁদ পেতেছে মৃত্তিকাবানু আবিদা l রক্তাম্বর মনে করে কবি অনন্ত কামিলের শহর ও আদি বাসিন্দাদের শয়তান-এট্ -হেল জরুরি খাদ্য নোটিশ পাঠিয়েছে l আকাশপথের সাইবার জোনে গায়েবি মিসাইল যুদ্ধ l

কামিল আমিলের ট্রিপল-কাশফের হালোত l
সূরা নাস্ -এর অলৌকিক ঝড়ে চাঁদের গর্তের মতো ভেঙে পড়ছে টুকরো টুকরো উত্তপ্ত কয়লাখনি l

কামিল আমিলের আঁখিযুগল হাজার মাইল বেগে ছুটছে আবিদার নৈনিনিদ পোস্ট-এয়ার-
ইস্টিশনে l