মৃধা আলাউদ্দিনের কবিতা

সাগর আছে
তুমি ভালোভাবে মন স্থির করো
তুমি কোথায় যাবে- তোমার রাস্তা বা ধ্যান কোনটা?
সবুজ গোলাপের সুঘ্রাণ নিতে চাইলে
সোজা পশ্চিমের রাস্তা ধরে হাঁটতে থাকো—
যেখানে সাগর আছে।
বসবাস
যারা সত্য বলে তুমি তাদের মাঝে বসবাস করতে পারো।
সুঘ্রাণ নিতে পারো কালো গোলাপের
রাতের রৌদ্র বা তারা ভরা জোছনার-
এবং এভাবে তুমি
সহজে একটা তাতালা
তান্ত্রিক তীরে পৌঁছতে পারবে।
প্রেমের শুভ্রতা
আমি তাকে ছুঁয়ে দেখেনি
ধরে দেখিনি তার নীল চোখ-
বুকের সুডৌল মাংস
উরুদেশ বা নরম নি¤œনাভিমূল…
বসবাস করিনি এক ছাদের নিচে।
অথচ আমাদের যৌবন ফুরিয়ে গেল
যৌবনের অজানা আয়না ও আদ্রতায়…
অবশেষে বুঝলাম-
পৃথিবীতে প্রেমের শুভ্রতা
মৌ মৌ ঘ্রাণ ছাড়া আর কিছুই সত্য নয়…
সাগরে ডুব দিয়ে
সাগরে ডুব দিয়ে
সেখানে আমি অথৈ সাগর-সমুদ্র-পানি ছাড়া আর কিছুই দেখলাম না;
তবে এই না দেখার ভেতর দিয়ে আমার কিছু জ¦ালা প্রশমিত হলো
মনে হলো এটা একটা অযাচিত-প্রস্ফুটিত প্রেমের মিলন-
পরিপূর্ণতা আসলো আমার দেহের অবয়বে, অন্তরে…
ভুল…
আমি ভাসিয়ে দেই সাগর-সমুদ্রে
আমার যতোসব বসন্ত বাতাস…
এবঙ আমি ফুল তুলি, মালা গাঁথি
শুনি ঝরাপাতার মর্মর শব্দ-
কিন্তু আমি দক্ষিণে যাই না
যেখানে শোনা যায় কৃষ্ণের বাঁশির সুর…
রাবিত রক্ত
আমি অহরাত্রি নদীর ধারে বসে থাকি
দেখতে থাকি রাত রৌদ্র ও তারাদের যাওয়া আসা-
ভৎর্সনা করি, জল-ঝড় ও কালো মেঘের তাণ্ডব দেখলে।
কিন্তু দেখি না, নিজের দেহ- দ্রাবিত আর ঘণীভূত রক্ত…
নির্বোধ মাটির মানুষ
আমি আমার প্রেমিকাকে বিচ্ছিন্ন করতে চাই
কেননা, শে রোদ বোঝে না
জল বোঝে না-
বোঝে না আবির্ভূত সৌন্দর্য, সবুজ সমুদ্র কিংবা পাহাড়।
নির্বোধ মাটির মানুষ আমার প্রাসাদে মানায় না…
সীমাহীন জগতে
চলো আমরা একটা সীমাহীন জগতে রাত কাটাই-
যার কোনো দৈর্ঘ্য-প্রস্থ, আকার ও দেহ নেই;
চলো আমরা তার বারান্দায়, দেউরিতে বসে থাকি
এই জন্য যে- তিনি আমাদের ফেলতে পারবেন না।
চলো আমরা একটা ঊর্ধ্ব অট্টালিকায় চলে যাই
চলে যাই সীমাহীন সৌন্দর্যে-রাত্রির জগতে…
চলো আমরা ঘরে ফিরে যাই
হে নদী
হে রৌদ্র!
হে জল-
জোছনার জলেভেজা মার্বেল পাথর আমার…
চলো আমরা ঘরে ফিরে যাই।
ঘর মানুষকে নির্মল ধরনাধারা, রৌদ্দুরে প্লাবিত করে।
ধুয়ে নাও নিজেকে
রৌদ্রে স্নান করাও নিজেকে
অন্দরের গলি-ঘুচি
বড় বাড়ি, বারান্দা-
দূরের আকাশ, বৃষ্টি ভেজা মাটি, মেঠোপথ ও প্রান্তর।
যদিঅ পৃথিবীতে বৃষ্টিভেজা মাটি ও প্রান্তরের কদর
অনেকেই বোঝে না।
মানুষ খুব অল্পই বোঝে। নির্বোধ মানুষ।