মাসুদুল হকের কবিতা

ক্লান্ত যিশু ও অন্যান্য
কবিতা
ক্রিসমাসের চিঠি
ঝিমিয়ে পড়েছে পাইনগাছের পাতা,
জলপাই বন,
ডিসেম্বরের তুষার ইউরোপ জুড়ে হয়ে উঠেছে
সাদা পৃষ্ঠা —
আমি একটা চিঠি লিখছি
বরফের উপর খোঁদাই করা চিঠি
যদিও আমার হাত জমে যাচ্ছে
তুমি হয়তো বেথলেহেমের পথে
হাঁটছো …হাঁটছো… বহু যুগ আগে
জানি না বরফে লেখা চিঠি
তোমার নুড়ি পাথরের দেশে পৌঁছবে কি না!
সান্টাক্লজ
একটি রঙিন বেলুন
জাগিয়ে রাখে মেয়েটিকে
বাইরে শীতের চাঁদ ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে
ঘুমিয়ে পড়লে
উড়তে থাকে সান্টাক্লজের বল্গাহরিণ
মেয়েটা সেনেটাইজ করা হাতে
অপেক্ষায় থাকে
কখন আসবে বুড়ো সান্টাক্লজ
ক্রিসমাস ট্রি
বরফের সৌন্দর্য নিয়ে ঘুমিয়ে আছে শ্বেত ভালুক
এস্কিমোদের ঘর— একটা আস্ত আইসক্রিম
সূর্যের আলো মেখে চাঁদ এসে বসেছে আইসক্রিমে
এমন রাতে সার্বিয়ার বনে লুকিয়ে আছে শরণার্থী
ওদের বুকে সৌরশক্তি, বরফকেও উষ্ণ করে তোলে মমতার চোখে তাকিয়ে আছে বড়দিনের ক্রিসমাস ট্রি
পঁচিশ ডিসেম্বর
আমি ও মেষপালক মানবজন্মে দুই ভাই
আমি আর সে জন্মেছিলাম ডিসেম্বরে
সে আগে;আমি পরে
কাঠশিল্পের ক্ষয়ক্ষতি রক্ষা করতে করতে
সে আমার বহু আগে ক্রুশের যীশু হয়ে গেছেন!
আমি তার বহু পরে ভাই হারানোর বেদনায়
ডুকরে ডুকরে কেঁদে উঠি পবিত্র গ্রন্থগুলো পাঠে
ভাবছি এবার আমাদের উত্তর গোলার্ধে
পঁচিশ ডিসেম্বর এলে উৎসবের আলো জ্বেলে
ছোট দিনটাকে বড় করে নেব!
ক্লান্ত যিশু
ভাইরাস জ্বরে গলে যাচ্ছে ডিসেম্বরের বরফ
সান্টাক্লজের মোজায় শুধু প্যরাসিটামল
ঝিমিয়ে পড়ছে ক্রিসমাস ট্রি
মানুষগুলো শীতের চেয়ে জ্বরে কাতর
বাইরে শীত, ঘরের উষ্ণতা ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে
দেয়ালের কোণে মাকড়াও জালের ট্যন্ট তুলে
প্যরাসিটামলের খোঁজে ছুটছে প্যারেড গ্রাউন্ডে
মুখোসে ঢাকা মানুষগুলো যেন ক্লান্ত যিশু!