প্রবন্ধ : জগদ্ধাত্রী পূজার ইতিকথা

প্রবন্ধ : জগদ্ধাত্রী পূজার ইতিকথা
অধ্যাপক সৌম্য ঘোষ
“জয় সর্বগত দুর্গে জগদ্ধাত্রী নমোহস্তুতে!”
জগধাত্রী শব্দের আভিধানিক অর্থ ” জগত+ ধাত্রী। জগতের ( ত্রিভুবন) ধাত্রী ( ধারণকর্ত্রী ।” ব্যাপ্ত অর্থে দুর্গা, কালী এবংঅন্যান্য শক্তিদেবীগণও জগদ্ধাত্রী। তিনি জগতের পালিকাশক্তি ।তিনি দেবীদুর্গার আর একটি রূপ । তাই জগদ্ধাত্রীর প্রণামমন্ত্রতাঁকে “দুর্গা” বলে স্তুতি করা হয়েছে। উপনিষদের ইনি হলেন উমাহৈমবতী । বিভিন্ন তন্ত্র ও পুরান গ্রন্থ এর উল্লেখ পাওয়া যায়।জগদ্ধাত্রী আরাধনা বিশেষতঃ বঙ্গদেশে প্রচলিত । বিশেষ করেপশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার চন্দননগর, গুপ্তিপাড়া ও নদীয়াজেলার কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী উৎসব জগৎবিখ্যাত । কার্তিক মাসেরশুক্লা নবমী তিথিতে দেবী জগদ্ধাত্রীর বাৎসরিক পূজা অনুষ্ঠিত হয়। হিন্দু বাঙালির ধর্মীয় মানসে রাজসিক দেবী দুর্গা ও তামসিকদেবী কালীর পরেই স্থান সত্ত্বগুনের দেবী জগদ্ধাত্রী ।
স্বামী প্রমেয়ানন্দের মতে , ” ধৃতিরূপিনী মহাশক্তিজগদ্ধাত্রী। সগুণ ব্রহ্মের সৃষ্টি, স্থিতি ও বিনাশ তিনগুণের যুগপৎ প্রকাশ যেমন কালীরূপের বৈশিষ্ট্য, তাঁর ধরণী ও পোষনী গুণেরযুগপৎ প্রকাশও জগদ্ধাত্রীরূপের বৈশিষ্ট্য। …. ধা ধাতুর অর্থধারণ করা। ভগবতী নিখিল বিশ্বকে বক্ষে ধারণ করে পরিপালনকরেন বলে মুনিগণ কর্তৃক তিনি ত্রৈলোক্যজননী নামে অভিহিত।…..
সতত পরিবর্তনশীল জগত সেই মহা শক্তি দ্বারা বিধৃত -তিনিনিত্যা, শাশ্বতী ও অপরিবর্তনীয়া । দেবী জগদ্ধাত্রীই সেইধৃতিরূপিণী মহাশক্তি ।”
দেবী জগদ্ধাত্রী সিংহবাহিনী, কিন্তু দশভূজা নন, চতুর্ভূজা। বিবিধ আভরণভূষিতা , অরুণকিরণবৎ বর্ণযুক্তা এবংসর্পরূপ যজ্ঞোপবীতধারিণী । তাঁর বাম দিকে দুই হাতে থাকে শঙ্খ ওধনু এবং ডান দিকে দুই হাতে থাকেই চক্র ও পঞ্চবান। রক্তবর্ণেরবস্ত্র তাঁর পরিধানে । তিনি সত্ত্বগুণের প্রতীক , তাই প্রথম সূর্যেরমতো তাঁর গায়ের রং। অর্থাৎ কমলা। বাহন সিংহ করীন্দ্রাসুরঅর্থাৎ হস্তীরূপী অসুরের পৃষ্ঠে দণ্ডায়মান। জগদ্ধাত্রী পূজা তান্ত্রিকপূজা। দুটি প্রথায় এই পূজা হয়ে থাকে। সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী – এই তিনদিন জগদ্ধাত্রী পূজা হয়ে থাকে । কোথাও কোথাও প্রথমবা দ্বিতীয় পূজার পর কুমারী পূজার আয়োজন করা হয়।দুর্গাপূজার মত জগদ্ধাত্রী পূজাতেও বিসর্জনকৃত্য বিজয়াকৃত্যনামে পরিচিত। এমনকি পুষ্পাঞ্জলী ও প্রণাম মন্ত্রসহ পূজারঅনেক মন্ত্র দুর্গাপূজার অনুরূপ।
উপনিষদে একটি উপাখ্যানে বলা হয়েছে – একবার দেবাসুরযুদ্ধে দেবগণ অসুরদের পরাস্ত করলেন। কিন্তু সেই সময় তাঁরা ভুলেগেলেন নিজ শক্তিতে নয়, বরং ব্রহ্মের বলে বলীয়ান হয়েই তাঁদেরএই জয়। ফলত: তাঁরা হয়ে উঠলেন অহংকারী। তখন ব্রহ্ম যক্ষেরবেশ ধারণ করে তাঁদের সামনে আসেন। তিনি একটি তৃণখণ্ডদেবতাদের সামনে পরীক্ষার জন্য রাখলেন। কিন্তু অগ্নি ও বায়ুকেউই তাঁদের সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করেও এই তৃণখণ্ডটিকে পোড়াতেবা সরাতে পারলেন না। তখন দেবগণ ইন্দ্রকে যক্ষের পরিচয়জানবার জন্য পাঠালেন । ইন্দ্র অবশ্য অহংকার-প্রমত্ত হয়ে যক্ষেরকাছে না এসে, এসেছিলেন জিজ্ঞাসু হয়ে। তাই ব্রহ্মরূপী যক্ষ তাঁরসামনে থেকে সরে গিয়ে আকাশে দিব্য স্ত্রীমূর্তিতে আবির্ভূত হলেনহৈমবতী উমা। আর উমা ব্রহ্মের স্বরূপ ব্যাখ্যা করে ইন্দ্রেরজ্ঞানপিপাসা মিটিয়েছিলেন বলেই কথিত। সেই জগদ্ধাত্রী দেবীত্রিনয়না, চতুর্ভূজা ও সিংহবাহিনী। তাঁর চার হাতে শঙ্খ, চক্র, ধনুক ও বাণ রয়েছে আর গলায় দেখা যায় নাগযজ্ঞোপবীত।
উপনিষদে অবশ্য উমার রূপবর্ণনা নেই। সেখানেকেবলমাত্র তাঁকে হৈমবতী অর্থাৎ স্বর্ণালঙ্কারভূষিতা বলা হয়েছে।তবে এই হৈমবতী উমাই যে দেবী জগদ্ধাত্রী সে প্রত্যয় জন্মেকাত্যায়ণী তন্ত্রের ৭৬ তম অধ্যায় উল্লিখিত এক কাহিনিতে রয়েছে। সেই কাহিনি অনুসারে : ইন্দ্র, অগ্নি, বায়ু ও চন্দ্র – এই চারদেবতা এমন অহংকারে মত্ত হয়ে ভুলে যান যে তাঁরা দেবতা হলেওতাঁদের স্বতন্ত্র কোনও শক্তি নেই – মহাশক্তির শক্তিতেই তাঁরাবলীয়ান। এই দেবগণের ভ্রান্তি দূর করতে দেবী জগদ্ধাত্রী কোটিসূর্যের তেজ ও কোটি চন্দ্রের প্রভাযুক্ত এক দিব্য মূর্তিতে তাঁদেরসম্মুখে উপস্থিত হলেন। এই অ্যাখ্যানের পরের অংশ অবশ্য উপনিষদে দেওয়া তৃণখণ্ডের কাহিনির অনুরূপ। দেবী প্রত্যেকেরসম্মুখে একটি করে তৃণখণ্ড রাখলেন; কিন্তু চার দেবতার কেউইতাকে স্থানচ্যুত বা ভষ্মীভূত করতে পারলেন না। তখন দেবগণনিজেদের ভুল বুঝতে পারলেন। তখন দেবী তাঁর তেজোরাশিস্তিমিত করে এই অনিন্দ্য মূর্তি ধারণ করলেন। সেই মূর্তি ত্রিনয়না, চতুর্ভূজা, রক্তাম্বরা, সালংকারা, নাগযজ্ঞোপবীতধারিনী ও দেব-ঋষিগণ কর্তৃক অভিবন্দিতা এই মঙ্গলময়ী মহাদেবীর মূর্তিকে দেখেদেবগণও তাঁর স্তবে বসেন ৷
জগদ্ধাত্রী পুজো বাঙালি হিন্দু সমাজের একটি বিশিষ্টউৎসব হলেও তা দুর্গা বা কালী পুজোর তুলনায় অপেক্ষাকৃতআধুনিক । অষ্টাদশ শতকে নদীয়ারাজ কৃষ্ণচন্দ্র রায় তাঁররাজধানী কৃষ্ণনগরে এই পূজার প্রচলন করার পর এই পুজোরজনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। যদিও তার আগে, শূলপাণি খ্রিস্টীয় পঞ্চদশশতকে কালবিবেক গ্রন্থে কার্তিক মাসে জগদ্ধাত্রী পুজোর উল্লেখকরেছেন। তাছাড়া পূর্ববঙ্গের বরিশালে খ্রিস্টীয় অষ্টম শতকেনির্মিত জগদ্ধাত্রীর একটি প্রস্তরমূর্তি পাওয়া যায়। আবারকৃষ্ণচন্দ্রের রাজত্বকালের আগে নির্মিত নদিয়ার শান্তিপুরেরজলেশ্বর শিবমন্দির ও কোতোয়ালি থানার রাঘবেশ্বর শিবমন্দিরেরভাস্কর্যে জগদ্ধাত্রীর মূর্তি লক্ষ্য করা যায়। এই গুলি থাকলেও মনেকরা হয়, বাংলার জনসমাজে কৃষ্ণচন্দ্রে পূর্বে জগদ্ধাত্রী পূজা বিশেষজনপ্রিয়তা অর্জন করেনি কেবলমাত্র কিছু ব্রাহ্মণের ঘরেদুর্গাপুজোর পাশাপাশি জগদ্ধাত্রী পুজো হত।
কৃষ্ণনগরে এই পুজো শুরুর ঘিরে নানা মত রয়েছে ৷কিংবদন্তী অনুসারে নবাব আলিবর্দির রাজত্বকালে মহাবদজঙ্গরাজা কৃষ্ণচন্দ্রের কাছ থেকে বারো লক্ষ টাকা নজরানা দাবিকরেছিলেন। সেই নজরানা দিতে না পারায় রাজাকে বন্দী করেমুর্শিদাবাদে (মতান্তরে মুঙ্গেরে) নিয়ে যাওয়া হয়৷। এরপর সেখানেমুক্তির পর নদীপথে কৃষ্ণনগরে ফেরার সময় ঘাটে বিজয়াদশমীরবিসর্জনের বাজনা শুনে তিনি বুঝতে পারেন সেই বছর দুর্গাপুজোরসময় পেরিয়ে গিয়েছে। তাই দুর্গাপূজার আয়োজন করতে না পেরেরাজা অত্যন্ত দুঃখিত হন। সেই রাতেই স্বপ্নে দুর্গা জগদ্ধাত্রীর রূপেরাজাকে পরবর্তী শুক্লানবমী তিথিতে জগদ্ধাত্রী দুর্গার পূজা করারআদেশ দেন।
কেউ কেউ আবার কৃষ্ণচন্দ্রের প্রপৌত্র গিরিশচন্দ্রকেকৃষ্ণনগর রাজবাড়ির জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রবর্তক মনে করেন।কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির দরজা জগদ্ধাত্রী পুজোর সময় এখনও খোলারাখা হয়। আবার ১৭৭২ সালে রাজবাড়ির দেখাদেখি কৃষ্ণনগরেরচাষাপাড়ায় রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের প্রজারা জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু করেন।যা বুড়িমার পুজো নামে পরিচিত, এই পুজো শুরু হয়েছিল ঘটে ওপটে। প্রথম দিকে স্থানীয় গোয়ালারা দুধ বিক্রি করে এই পুজোরআয়োজন করতেন। ১৭৯০ সাল নাগাদ গোবিন্দ ঘোষ ঘটপটেরপরিবর্তে প্রতিমায় জগদ্ধাত্রী পূজার সূচনা করেন। এছাড়াকৃষ্ণনগরের বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বারোয়ারি জগদ্ধাত্রী পুজোরয়েছে যাদের সংখ্যা ২০০ বেশি, যা জগদ্ধাত্রী পুজোর জন্যবিখ্যাত চন্দননগর মহানগরের চেয়েও বেশি।
চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী:
কথিত আছে চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রবর্তক ইন্দ্রনারায়ণচৌধুরী। রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের ঘনিষ্ঠ এই ইন্দ্রনারায়ণ ছিলেনচন্দননগরের ফরাসি সরকারের দেওয়ান। প্রায় আড়াইশো বছরআগে, কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির পুজো দেখে মুগ্ধ হয়ে ইন্দ্রনারায়ণচন্দননগরের লক্ষ্মীগঞ্জ চাউলপট্টির নিচুপাটিতে জগদ্ধাত্রী পুজোসূচনা করেন। এটিও চন্দননগরে আদি পুজো বলে পরিচিত।এখনও পর্যন্ত পুরুষানুক্রমে দেওয়ান চৌধুরীদের উত্তরপুরুষেরনামে এই পুজোর সংকল্প হয়। লক্ষ্মীগঞ্জ কাপড়পট্টির জগদ্ধাত্রীইহল চন্দননগরে দ্বিতীয় প্রাচীনতম পুজো। ১৭৬৮ সালেচাউলপট্টির চাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতান্তর হওয়ায় কাপড়ব্যবসায়ী শ্রীধর বন্দ্যোপাধ্যায় (মতান্তরে শশধর) রীতিমতো চাঁদাতুলে এই পুজোর প্রবর্তন করেছিলেন। এই অঞ্চলের অপর দুটিপূজা হল লক্ষ্মীগঞ্জ চৌমাথা (স্থাপিত ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দ) ও লক্ষ্মীগঞ্জবাজারের (স্থাপিত ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দ) পূজা। এখানকার পুজো শুধুনবমীর বদলে সপ্তমী অষ্টমী নবমীতেই হতে দেখা যায়৷ চন্দননগরের জগদ্ধাত্রীপুজো ঘিরে আলোর রোশনাই জাঁকজমকখুবই বিখ্যাত ৷ আর তা দেখতে নানা স্থান থেকে এসে এই সময়লোকেরা চন্দননগরে ও তার আশপাশে ভিড় করে যার জন্যবিশেষ ট্রেনেরও ব্যবস্থা করা হয় ৷ চন্দননগর কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রীপূজা কমিটি র দেওয়া তথ্য অনুসারে অনুমোদিত তিনশতাধিক পূজা হয়। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো—– মানকুন্ডুসর্বজনীন, মানকুন্ডু নতুন পাড়া, নিয়োগী বাগান, সার্কাস মাঠ,তেমাথা, অম্বিকা অ্যাথলেটিক ক্লাব, গোন্দলপাড়া, মনসাতলা, বড়বাজার ,পাদ্রীপাড়া, লালবাগান, ডুপ্লেক্সপট্টি ,বাগবাজার,পালপাড়া, নিচুপট্টি ,কাপড়পট্টি , চাউলপট্টি , লক্ষীগঞ্জ বাজারইত্যাদি ইত্যাদি । দক্ষিণ চন্দননগরের হালদারপাড়ার আদি পূজাঅশ্বথথ তলার “বুড়িমার পুজা” নামে পরিচিত।
মা সারদাদেবীর জগদ্ধাত্রী পূজা:
জয়রামবাটী গ্রামে মা সারদা দেবীর জন্মভিটায় জগদ্ধাত্রী পুজোরআয়োজন করে রামকৃষ্ণ মিশন। ১৮৭৭ খ্রিস্টাব্দে (১২৮৪ বঙ্গাব্দ) সারদা দেবীর বাপের বাড়িতে প্রথম জগদ্ধাত্রী পুজোর আয়োজনকরেছিলেন তাঁর মা শ্যামাসুন্দরী দেবী। শ্যামাসুন্দরী দেবী দেবীজগদ্ধাত্রীকে স্বপ্নে দেখেন এবং তাঁর স্বপ্নাদেশে জগদ্ধাত্রীপুজোর আয়োজন করেন। জীবদ্দশায় প্রতি বছরই জগদ্ধাত্রীপূজায় উপস্থিত থাকতেন সারদা দেবী। পূজা পরিচালনার জন্যতিনি সাড়ে দশ বিঘার কিছু বেশি জমি দেবোত্তর সম্পত্তিরূপে দিয়েযান। ১৯১৯ সালে সারদা দেবী এই পূজায় শেষবার উপস্থিতছিলেন। পরের বছর তিনি প্রয়াত হন। প্রথম পুজোর ঐতিহ্যঅনুযায়ী এখনও শুক্লা নবমীতে মূল পুজোর পরও দুদিন প্রতিমারেখে দিয়ে বিশেষ পুজার আয়োজন করা হয়। পুজোর সঙ্কল্প হয়সারদা দেবীর নামে।
ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব বলেন—- ” মনকরীকে যে বশ করতে পারে তারই হৃদয়ে জগদ্ধাত্রী উদয় হয়।” স্বামী নির্মলানন্দ বলেন —– “তিনিই মানুষের মত্ত মন কে বশকরতে পারেন । …….. আমাদের মন মত্ত হস্তী ন্যায় সর্বদামদাম্বিত । সে অস্থির, উন্মাদ। এই দুরন্ত মনকারীকে সদাউদ্যমশীল বিবেক সিংহের দ্বারা মর্দন করতে হবে ।…… মনবশীভূত হলেই অন্তরে চৈতন্যময়ী জগদ্ধাত্রীর মহাপ্রকাশঅনায়াসলভ্য হয় । “