জাহ্নবী জাইমার কবিতা

জাহ্নবী জাইমার কবিতা

সোনালী ভবিষ্যত

চলো অপরাহ্নের আবির মেখে গায়ে
যুদ্ধ ও ধ্বংসের পথ মাড়িয়ে
শান্তির বারতা নিয়ে হেঁটে চলে যাই।
চির বসন্ত এনে দিই এই ধরায়
সেখানে পৃথিবীর সৌন্দর্য রচনায়
শত কোটি গোলাপ ফুটে পাখি গান গায়
অফুরান ছায়া বিথী মিষ্টি সমীরণে
আকাশে পূর্নিমা চাঁদ মেঘ মুক্ত জোৎস্নায় স্রোতস্রিনী জাহ্নবী বয়ে চলে দু’চোখের সীমানায়।
আমরা আদিম গুহাবাসীদের মতো গাছেরলতাপাতা দিয়ে এক খণ্ড সুখ শান্তির নীড় রচাবো
আমরা দলবদ্ধ শিকারে যাব পাথরে পাথর ঘঁষে
আগুন জ্বালাব আর আদিগন্ত মাঠ জুড়েফলাব ফসল সোনালী ভবিষ্যতের
আমরা সমস্ত ক্রোধ বিদ্ধেষ আপমান
এই নশ্বর পৃথিবীতে ফেলে রেখে যাব
কোন যুদ্ধ আমাদের ছোঁবে না
কোনও মৃত্যু আমাদের ছোঁবে না।
আমরা হাসি মুখে একদিন
আমাদের সমস্ত শ্রম ঘাম দিয়ে রক্তের প্রতিটি বিন্দু দিয়ে মুক্ত আকাশে উড়িয়ে দেব এক গুচ্ছ শ্বাশত শান্তির পায়রা।

জন্ম জননী

যখন কাছে আসি চিনতে পারি না, দূরে গেলে জন্ম জন্মান্তরের
খড়কুটো আগলে আমি খড় মেয়ে হয়ে গেছি যেন
টেমস নদীটির বড় মায়া তবুও গান নেই বিভুঁই বিদেশী শীততাপে
আমার জন্মভূমি যখন কাছে আসি দীর্ঘশ্বাসে ঝড়ো হাওয়ার ভয়,
কারা যেন শত যান পুড়িয়ে অবরুদ্ধ করে পথ চিবুকের রক্ত মুছে
বাড়–ক রাত্রি গোপনে কথা হবে ভাগ যোগ আমদানির
অর্ধমৃত
জলাভূিম
ফুঁড়ে উঠে বহুতল দালান কোঠা, নগরায়ন।
জননী জন্মভুমি, দূরে গেলে মিঠে লাগে ফেরিওয়ালার সুরেলা সুর
এখন ঘুড়ি ওড়ায় না শিশুরা বাদাম বিক্রি করে না কিশোর
বসন্ত বুড়ি গোল্লাছুট, কানামাছি খেলে না কেউ –
চোখে পড়ে শীর্ণ বালিকাটির পুই মাচা আগলানো হাত।
তোমার কাছে এলে ভয় জড়ো হয় ক্রমাগত
হাতে হাতে ঘোরে বন্দুকে বিদ্যুতে কাপুরুষ বিস্তর
এরই ভিতরে বিদ্যুতের চেয়ে প্রখর এক উদ্ভিন্ন হৃদয়া যুবতী
দামি সাবানে শরীর জড়িয়ে, যাচ্ছে জগৎ সভায়।
শ্রেষ্ঠ রমনীর শিরোপাটি নিতে এক চামচ হাসি এক আকাশ কান্না
আমি দেখেও সব অবিশ্বাস করি, স্বপ্নে ও জাগরণে
সমস্ত দূরে যাও পুরুষ প্রধান নগরপাল সমবেত যুদ্ধবাজ
যাও তোমরা যাবে নাকি, আজ সমস্ত রমণী স্নানে যাবে একা
আমি একলা গাছের নিচে, মাঝরাতে চাঁদমাখা পুষ্পবিথিকায়
কবিতা পড়ব তোমার জন্যে।

শান্তি ঝুলন্ত লাশ

ভেজা নয়ন বুজে অনুভব করি
দেয়ালিকা ক্যানভাস থেকে উঠে আসা চোখ,
প্রতিচ্ছবি স্বচ্ছতার অস্তিত্ব আড়াল হলে
গলা থেকে উঠে আসে অনুভূতির সুর।

বিষন্নতার ক্যাকটাস, অক্টোপাস হয়ে
হামাগুড়ি দিয়ে উঠে আসে বুকে
স্মৃতির জলচ্ছবি রক্তাক্ত হয়
তুমি ছায়া হয়ে ফিরে যাও জোছনার সুখে।

বাস্তবতার দরজায় ঝুলে স্মৃতির লাশ
স্বপ্ন ফিরে যায় নিজ সরল রেখায়
আমরা শান্তি খুঁজি আয়নার পিছনে
ফেলে আসা পথে…