অণুগল্পঃ বড় প্রেমের ছোট গল্প

অণুগল্পঃ বড় প্রেমের ছোট গল্প

বড় প্রেমের ছোট গল্প

সুজাউদ্দৌলা

আজ রিদিমার বিয়ে।আর বিয়ের অনুষ্ঠানের সবদিক সামলানোর দায়িত্ব শাফকাতের উপর।যদিও কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ে হওয়াতে তেমন ঝক্কি নেই।শুধু তদারকিটা ঠিকমতো করলেই ব্যাস।তবু এক দণ্ড অবসর নেই শাফকাতের।একবার মাম অর্থাৎ রিদিমার বাবা ডাকছে এ্যাই শাফকাত এদিকে শোনা।
এদিকে শোনবার আগেই দেখা যায় পরিবেশনকারীদের খুব জরুরী একটা নির্দেশ দিতে হয়।আবার নতুন আসা নিমণ্ত্রিত অভ্যর্থনা জানাতে হয়।
আসুন আসুন।বসুন এদিকটায়।এই ব্যাচ শেষ হলেই আপনাদের বসিয়ে দেব।
এতোসব চরকিবাজির মধ্যে আবার রিদিমাও ডেকে পাঠায়।কাছে গেলে বলে
তোর দুলাভাইর ঠিকমতো সমাদর হচ্ছে কিনা দেখিস।
কীসের দুলাভাই?তুই আমার ছোট।ফারুক আমার ছোটবোন জামাই।আমি ওর সম্বন্ধী।
বয়সে বড় হলেই হয়না।যোগ্যতায় বড় হতে হয়।পারলিনা তো একটা চাকরি জোগাড় করে বিয়ের প্রস্তাব পাঠাতে।
বিয়ের আসরে কনের সাথে এভাবে ফিসফিস করে এত সময় ধরে কথা বলা ঠিক নয়।লোকজন কী ভাববে।তাছাড়া রিদিমার সাথে খুনসুটি করার মতো অখণ্ড অবসর তার নেই।
অন্যদিকে যেতে যেতে অন্য একটি কথা মনে তোলপাড় তোলে।যদিও শাফকাত নিজের কাছেই প্রতিজ্ঞা করেছিল আজ কিছুই মনে করবেনা।আজ কাজে ডুবে থেকে জ্বালা ভুলবে।
রিদিমা তাকে ভালবাসত।।আজ রিদিমার বর সেজে তারই তো টোপর মাথায় বসে থাকার কথা।কিন্তু একটা চাকরি জোগাড় করতে না পারায় সে মামার কাছে তুলতে পারেনি বিয়ের প্রস্তাব।রিদিমা অবশ্য বলেছিল চল পালিয়ে বিয়ে করে ফেলি।একটা চাকরি কি তুই পাবিনা?তাছাড়া আমরা মাত্র দুটি বোন।বাবা কি আমার কষ্ট সহ্য করতে পারবে?বাবা ঠিক মেনে নেবে দেখিস?
মামা মেনে নেবে কিনা সেটা তো পরের ব্যাপার।শাফকাত নিজেই তো পালিয়ে বিয়ের ব্যাপারটা মানতে পারবেনা।তার জীবনে মামার অনেক অবদান।বাবা মারা যাবার পর মামাই একরকম কোলেপিঠে মানুষ করেছেন।তার বুকে পিঠে ছুরি মেরে রিদিমাকে নিয়ে সে পালাতে পারে না।সে ফারুকের দিকে এগিয়ে যেতে যেতে ভাবে ভাগ্যটা মানুষ নিজে গড়তে পারে হয়তো নিজে লিখতে পারে না।