সফিয়া জাহিরের কবিতা

সফিয়া জাহিরের কবিতা

বোহেমিয়ান বাঁশি

ব্যস্ততার জমা খাতা থেকে কেটে কুটে
খুচরো কিছু মুহুর্ত করেছিলাম সঞ্চয়,
অমরত্বের প্রত্যাশায় কোনো একদিন ঢেলে দিলাম
মাজারের লাল-নীল দান বাক্সে।

হলো না সমুদ্র যাত্রা
হলো না মহাতরঙ্গের সাথে মহামিলনের আলিঙ্গন,
মেঘেরা কেঁদে কেঁদে ফিরে গেলো পর্বত শৃঙ্গে
স্কাফেল পাইকের গায়ে হেলান দিয়ে
দিনের শেষে বিদায় জানায় ক্লান্ত সূর্যকে,
বিদায় সংগীত বেজে উঠে অলিন্দের ভেতর।

পর্বত পাদদেশে-
জ্যোৎস্না প্লাবিত ডারওয়েন্ট লেকে
রুপোলি মাছের অভিনব নৃত্যের খেলা-
ধা ধিন ধা, ধা ধিন ধা,
বৃদ্ধ ওকের গুঁড়িতে হেলান দিয়ে
কেঁদে কেঁদে উঠে নি:সঙ্গ
বোহেমিয়ান বাঁশি।

নিঃসঙ্গতা এসো বন্ধু হই

দরোজার তালা খুলতেই দেখি ভেতরে দাঁড়িয়ে দীর্ঘদেহী নিঃসঙ্গতা।এলো কেশ, ছিন্ন বেশ, না জানি কোথায় তার ঠিকানা করেনি স্নান, মাখেনি সুবাস, পরেনি কাজল। কী শোকে কাতর, কার ছায়া চোখে ভাসে? স্মৃতির খাতায় করে আঁকিবুঁকি, গায়ে নীরবতার ধূসর চাদর। জানলার কাছে দৃষ্টি খুঁজে, শিশিরের কাছে জল। জলকেলি হয়নি কভু, আঁখি ছলছল। অভিমানী নাম কি তোমার? দাও পরিচয়। কি অসুখে অসুখী, হৃদয়ে কিসের দহন। কেনো এতো সংশয়, সময়কে চিনে নিতে ফের কর ভুল। নিঃসঙ্গতা এসো না বন্ধু হই, স্মৃতির নির্যাস পান করে হোক একটু কথোপকথন।

শত জোনাকির আলো

এতোটা বিষণ্ণ কেনো আকাশ
কেন এতো রোদন
সেই টোয়াইলাইট থেকে কাঁদছ নিরবধি
কে গেছে হারিয়ে, পাওনি খুঁজে?
রাতের নীরবতা গড়িয়ে পড়ে
নির্জন বাটারমিয়ার লেইকে
বুকের ক্ষত হতে থাকে গভীর
বনবৃক্ষের পাশে জলের আয়নায়
তখন দেখি তোমার-আমার মুখ

আমি কিন্তু প্রতিদিনের কষ্টগুলো
ধরে রাখি সময়ের পাতায় ভাঁজ করে
সামলে নেই ঘর গেরস্থালি
ধুলিকণাকে লুকিয়ে রাখি
কাস্মীরী চাদরে
কারো চোখে পড়ে না
জানলা দিয়ে সবাই দেখে—
শত জোনাকির আলো